ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

হবিগঞ্জে কালবৈশাখীর ভয়াবহ তান্ডব

প্রকাশিত: ০১:৫৪, ২১ এপ্রিল ২০১৭

হবিগঞ্জে কালবৈশাখীর ভয়াবহ তান্ডব

নিজস্ব সংবাদদাতা, হবিগঞ্জ ॥ কালবৈশাখীর ভয়াবহ তান্ডবে হবিগঞ্জ সদর উপজেলাধীন একাধিক গ্রামের মানুষ এখন সহায়-সম্বল হারিয়ে পুরোপুরি নিঃস্ব। কোলের শিশু থেকে শুরু করে গরু-ছাগল নিয়ে খোলা আকাশের নীচে রয়েছে অন্তত ৩শতাধিক হত-দরিদ্র পরিবার। মেঘলা আকাশে বজ্রপাতের বিকট বিকট শব্দ আর গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মাঝে প্রান রক্ষার যেমন বিন্দু মাত্র সুবিধাজনক স্থানটুকু খুঁজে পাচ্ছে না ওরা, তেমনি এই ব্যাপক ধ্বংসলীলার মাঝে কারো ঘরেই নেই রক্ষিত চাল-ডাল বা অন্য কিছু। ফলে কোন মায়ের সুযোগ নেই কারো চুলোতে ভাতের হাঁড়ি বসিয়ে অন্তত দেড় থেকে ৩/৪ বছর বয়সী কুলের শিশুটির মুখে তুলে দেবে এক মুঠো ভাত। উপরন্ত দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির অভাব ও লজ্জা নিবারনে কাপড় আর ঘুমানোর জন্য শুকনো জায়গা-বিছানা। তবে এই অসহায় মানুষগুলোকে রক্ষায় ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক উপ-সচিব মোঃ সফিউল আলম এবং সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ, টি, এম আজহারুল ইসলামের নের্তৃত্বে তাৎক্ষনিক পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসন। যা প্রয়োজনের তুলনায় নিতান্তই অপ্রতুল। আজ শুক্রবার ভোর রাত পৌনে ২ টার দিকে জেলা শহর হবিগঞ্জসহ বিভিন্ন উপজেলার ওপর দিয়ে কয়েক ঘন্টা ব্যাপী বয়ে যায় প্রচন্ড কাল বৈশাখী ঝড়। এই ঝড়ে জেলা শহর হবিগঞ্জ সহ বেশ কয়েকটি উপজেলায় বহু গাছপালা-খুঁটি ভেঙ্গে পড়লে বড় ধরনের বিদ্যুত বিপর্যয় ঘটে। কাঁচা-অর্ধপাকা বাড়ী-ঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তবে এই কালবৈশাখীর ভয়াবহ তান্ডবের কবলে পড়ে জেলার সদর উপজেলাধীন নিজামপুর ইউনিয়ন। সরেজমিন এই উপজেলার শুটকীপাড়া, শরিফাবাদ, চক্রমোহনা, বলবারচক, এবতাবপুর, বড়চর, পূর্ব কাটখালী ও নিতাইচক ঘুরে দেখা গেছে, এই ৮টি গ্রামের হত দরিদ্র মানুষ তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করে। এদিকে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোর পক্ষে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি জেলা পরিষদ সদস্য আব্দুল মুকিত চৌধুরী ও নিজামপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তাজ উদ্দিন জনকন্ঠকে বলেন, কালবৈশাথীর এমন তান্ডব অতীতে তারা দেখেননি। যা কিছু সাহায্য দেয়া হচ্ছে, তা পর্যাপ্ত নয়। তারপরও জেলা প্রশাসন তাৎক্ষনিক ক্ষতিগ্রস্থ অসহায় পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানোয় অনেকেই মনোবল ফিরে পাবে। তবে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছে, কালবৈশাখী ঝড়ে তারা সর্বস্ব হারালেও হারাতে চান না ইজ্জত। এই তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্থ হবার পর বিভিন্ন বাড়ীতে থাকা তাদের উঠতি বয়সী মেয়েদেরকে নিয়ে তারা চিন্তিত। কিন্তু তাদের নিরাপত্তায় পুলিশ প্রশাসনের কেউ এখন খবর নেয়নি। ফলে তারা তাদের উঠতি বয়সী মেয়েদের ইজ্জত রক্ষা নিয়ে এখন চিন্তিত।
×