ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জয়পুরহাটে ইভটিজিংয়ের জন্য প্রাণ দিল মনীষা

প্রকাশিত: ০১:৫৩, ২১ এপ্রিল ২০১৭

জয়পুরহাটে ইভটিজিংয়ের জন্য প্রাণ দিল মনীষা

নিজস্ব সংবাদদাতা, জয়পুরহাট ॥ কালাই উপজেলার নান্দাইল দীঘি কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী মনীষা লম্পট শাহীনের যৌন হয়রানির কারণে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্নহত্যা করেছে। বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। জানা যায়- মনীষার বাবা মোজাহার হোসেন জরুরী কাজে বগুড়ার শিবগঞ্জে এবং মা মনোয়ারা বেগম ১০ টাকা কেজি দরের চাল কিনতে পুনট ইউনিয়ন পরিষদে যায়। মা-বাবার অনুপস্থিতি টের পেয়ে সুযোগ বুঝে ওই দিন বিকালে প্রতিবেশী মন্টু মিয়ার ছেলে শাহিন কলেজ ছাত্রী মনীষা বাড়ীতে প্রবেশ করে তাকে জড়িয়ে ধরে এবং কু-প্রস্তাব দেয়। শাহীন এর আগেও উক্তত্য করত। বিষয়টি সে তার মা বাবাকে জানায়। এ ঘটনায় মেয়েটি লজ্জায় ওই দিন সন্ধ্যায় নিজ ঘরে আত্মহত্যা করে। ঘটনাটি জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার উৎরাইল গ্রামে ঘটেছে। এ বিষয়ে মেয়ের বাবা বাদী হয়ে কালাই থানায় লম্পট শাহিন ও তার বাবা মন্টু মিয়া এবং তার মা ফাহিমাকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। প্রতিবেশীরা জানান, সে কালাই উপজেলার নান্দাইল দীঘি কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ঘর থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মেয়েটির মা মনোয়ারা বেগম জানান- বৃহস্পতিবার দুপুরে মনীষাকে বাড়ীতে রেখে ১০ টাকা কেজি দরের চাল নিতে সে পুনট ইউনিয়ন পরিষদে যান। সেখান থেকে সন্ধ্যার সময় সে বাড়ীতে ফিরে আসেন। ঘন্টা খানেক পর মনীষাকে ডাকতে গিয়ে দেখা যায় ঘরের দরজা বন্ধ। প্রতিবেশীদের সহযোগীতায় দরজা ভাঙ্গার পর ঘরের বাঁশের আড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় । মনীষার বাবা মোজাহার আলী বলেন, প্রতিবেশী শাহিন আমার কলেজ পড়ুয়া মেয়েকে অনেক আগে থেকেই কু-প্রস্তাব দিয়ে আসতো। এ বিষয়ে তার বাবা ও মাকে জানানো হয়েছে। তারপরও বৃহস্পতিবার দিনের বেলায় আমি এবং আমার স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে সে বাড়ী ঢুকে আমার মেয়েকে জড়িয়ে ধরে এবং কু-প্রস্তাব দেয়। আমার মেয়ে মনীষা তা সহ্য করতে না পেরে তাদের অত্যাচারে গলায় দড়ির ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমার মেয়েকে ওরা হত্যা করেছে। ওদের বিরুদ্ধে আমি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছি। এদিকে কলেজ ছাত্রীর মৃত্যুর খবর পেয়ে তার কলেজের শিক্ষক ও সহপাঠিরা পরের দিন শুক্রবার সকালে তাদের বাড়ীতে ভিড় করেন। পুলিশ ঘটনা স্থলে পৌঁছে লাশ ময়না তদন্তের জন্য থানায় নিয়ে আসেন। শুক্রবার বিকেলে জয়পুরহাট জেলা হাসপাতালে লাশের ময়না তদন্ত হয়। কালাই থানার অফিসার ইনচার্জ নুরুজ্জামান চৌধুরী বলেন ওই ঘটনায় মেয়ের বাবা প্রতিবেশী তিন জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
×