ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রংপুরে শিক্ষক পদে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভূয়া সনদধারী

প্রকাশিত: ০০:৫০, ২১ এপ্রিল ২০১৭

রংপুরে শিক্ষক পদে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভূয়া সনদধারী

নিজস্ব সংবাদদাতা, রংপুর ॥ রংপুরে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সহকারি প্রাথমিক শিক্ষক পদে যে ৬৮ জন প্রার্থীকে চুড়ান্ত মনোনয়ন দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে অনেকের সনদ ভূয়া বলে অভিযোগ পওয়া গেছে। এ নিয়ে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। মুক্তিযোদ্ধা সংসদসহ একাধিক সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২৯ অক্টোবর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও সন্তানদের সন্তানরা মুক্তিযোদ্ধা কোটায় প্রাথমিক সহকারি শিক্ষক পদে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেন। এর মধ্যে রংপুর জেলার ৮ উপজেলায় ৬৮ জন নিয়োগ পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে উর্ত্তীণ হন। তাদের ফলাফল প্রকাশের পর মনোনীতদের একটি চড়ান্ত তালিকা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েব সাইটে প্রকাশ করা হয়। বর্তমানে মনোনীতদের জেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যাচাই বাছাই করে নিয়োগ দেয়ার জন্য পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে । তবে মনোনীত ৬৮ জনের মধ্যে অনেকেই ভ’য়া মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বলে অভিযোগ উঠেছে। এরা নিয়োগপ্রাপ্ত হলে বঞ্চিত হবে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মিঠাপুকুর উপজেলা কমান্ডার শহিদুর রহমান অভিযোগ করেন, মিঠাপুকুর উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কোটায় উত্তীর্ণ ২২ প্রার্থীর নাম প্রেরণ করা হয়েছে জেলা শিক্ষা অফিসে। এই ২২ জনের মধ্যে ১০ জনই ভূয়া মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তারা ভূয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ দিয়ে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেছে। এই ভূয়া ১০ জনের মধ্যে মোফাখ্খারুল ইসলামের পিতা মকবুল হোসেন, ফাতেমাতুজ্জোহরার পিতা হাতেম আলী, লোকমান হাকীমের পিতা বদিউজ্জামান বদিয়া, রেজাউল ইসলামের পিতা নূরুল ইসলাম, মণিষা আক্তারের পিতা আব্দুল গণি মন্ডল, লায়লা আঞ্জুমান্দ এর পিতা একরামুল হক, শরিফা বেগমের পিতা জয়নাল আবেদীন, বেদেনা খাতুনের পিতা বদিউজ্জামান বদিয়া, ইদ্রিস আলীর পিতা জয়নাল আবেদীন, জিন্নাত রেহেনার পিতা আব্দুর রশীদ কখনোই মুক্তিযোদ্ধ ছিলেন না। মুক্তিযোদ্ধা লাল তালিকা, বাংলাদেশ গেজেট এবং সর্বশেষ সংশোধনী তালিকাসহ কোন তালিকায় তাদের নাম নেই। তাদের সন্তানরা কিভাবে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগ পায় তা বোধগোম্য নয়। মুক্তিযোদ্ধা রজব আলী ক্ষোভের সাথে জানান, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের বাদ দিয়ে ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদধারীদের নিয়োগ দেয়ার পায়তারা চালানো হচ্ছে। এটা খুবই দুঃখজনক। প্রকৃত পক্ষে এটা মুক্তিযুদ্ধকে অবমাননার সামিল। তিনি এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধ মন্ত্রণালয়ের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা উপ-পরিচালক শহিদুল ইসলাম জানান, আমরা পরীক্ষার মাধ্যমে প্রার্থী নির্বাচন করেছি। ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা কি না এ বিষয়টি মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় দেখবে। তিনি আরো জানান, আগামী সপ্তাহে উর্ত্তীণদের তালিকা শিক্ষামন্ত্রণালয় পাঠানো হবে। সেখান থেকে এই তালিকা মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে যাবে। সেখানেই বিষয়টি আবারো যাচাই বাছাই করা হবে।
×