ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মোখলেছুর রহমান ভূঁইয়া

ভাঙ্গা রেকর্ডের গল্প

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ২০ এপ্রিল ২০১৭

ভাঙ্গা রেকর্ডের গল্প

বাংলাদেশের মানুষ ধর্মপরায়ণ এবং দেশপ্রেমিক। এই দুটি অনুভূতি ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার বিজয় সুনিশ্চিত করে। আমাদের দেশপ্রেম পরীক্ষিত। আমরা ধর্মপরায়ণ। কিন্তু ধর্মান্ধ নই। রক্তস্রোতে প্রবহমান ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ, লাখ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম হারানোর বিনিময়ে আমার সোনার বাংলাদেশ। বিশে^ বিরল ত্যাগ স্বীকার করেও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী প্রাক্কালে শুনতে হয়- ‘দেশ বিক্রি’ ফেরিওয়ালাদের ডাক চিৎকার। এক সময় পাকিস্তানী প্রেতাত্মা ধর্ম ব্যবসায়ীরা নির্বাচনী মাঠে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে মসজিদে-মসজিদে-উলুধ্বনি/ঘণ্টা বাজানো হবে বলে নিরীহ মুসলিম সমাজকে ধোঁকা দিয়েছে। আল্লাহর অশেষ রহমতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ একাধিকবার ক্ষমতায় আসে। মসজিদের নগরী ঢাকা ও বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে নতুন নতুন মসজিদ নির্মাণ হয়। আর মোয়াজ্জিনের আজানের সুমধুর কণ্ঠস্বর- আল্লাহু আকবার-আল্লাহু আকবার ধ্বনি আমরা দৈনিক পাঁচবার শুনতে পাই। এক সময় শীতকালীন মৌসুমে ওয়াজ হতো। এখন প্রায় বছরব্যাপী ধর্মীয় অনুষ্ঠান হয়। আগেই বলেছি, বাংলাদেশের মানুষ ধর্মপরায়ণ। ধর্মান্ধ নয়। তাই এখন আর মসজিদে ‘উলুধ্বনি’র কথা বলে না। ওই চক্রটিই সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান সম্প্রদায়ের অনূভূতি পাওয়া যাবে না বুঝতে পেরে এখন দেশ বিক্রির ভাঙ্গা রেকর্ড বাজাচ্ছে। ভারত-বাংলাদেশের মৈত্রী চুক্তিকে ২৫ বছরের গোলামী চুক্তি বলে বাংলাদেশকে ভারতের অঙ্গরাজ্যে বিকিয়ে দিয়েছে, পার্বত্য শান্তি চুক্তির সময় বিএনপি বলেছে ভারত বাংলাদেশের ফেনী পর্যন্ত নিয়ে যাবে, স্থল সীমান্ত চুক্তির সময় বলছে বাংলাদেশের অর্ধেক ভূখন্ড ভারত নিয়ে যাবে। ভারত বিরোধিতা এবং ধর্মের অপব্যবহার করে কিছু সহানুভূতি এক সময় আদায় করে নিতে সক্ষম হলেও এখন ডিজিটাল বাংলাদেশের যুগে সাধারণ জনগণকে বোকা ভাবা মূর্খতার শামিল। বর্তমানে বিশ্বায়ন যুগে-বিশ^ একটি রাষ্ট্র। রাষ্ট্র বিক্রি করার ফেরিওয়ালা সেজে স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠানে দর্শকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাবে। দর্শকরা সাময়িক হাসি ঠাট্টা করবে। লেখাপড়া না জানা লোকও আজ অনেক সচেতন। দেশ বিক্রির কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা কস্মিনকালেও বিশ্বাস করানো যাবে না বিশ^ায়ন যুগে। মাকে বিক্রির করার গল্পের ন্যায় সচেতন সবাই জানেন রক্ত স্থানে পবিত্র স্বাধীন স্বার্বভৌম দেশ ‘কেনা বেচার হাটে’ বিক্রয় করা যাবে না। নির্বাচনে ক্ষমতার বৈতরণীর অধ্যায় শেষ হলে এক সময় সমস্বরে দেশ বিক্রির ফেরিওয়ালারাও বলবে- দেশ কি পণ্য, যা বিক্রি করা যাবে। বাবুরহাট, চাঁদপুর থেকে
×