ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ দেশ বিক্রির ব্যবসা

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ২০ এপ্রিল ২০১৭

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ দেশ বিক্রির ব্যবসা

যারা মূলত ব্যবসায়ী তাদের বেশির ভাগই সাধারণত সব কিছুই ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখে থাকেন। পৃথিবীতে অনেক কিছু বেচা-কেনার কথা শুনেছি তবে দেশ বিক্রির কথা কখনও শুনিনি। ইতিহাসের পাঠ থেকেও এমন তথ্য জানা যায় না। দেশ এমন কোন পণ্য নয়, যা বিক্রি হয়ে যেতে পারে। এতে কার কি লাভ? বরং যারা দেশ বিক্রির কথা বলেন, তারা সাধারণ মানুষকে ভুল তথ্য দিয়ে ভোটের লাভটা নিজেদের ঘরে আনতে চান। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চারদিনের সফরে প্রতিবেশী ও বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র ভারত সফরে গিয়েছিলেন। সরকারপ্রধানদের ক্ষেত্রে এমন সফর স্বাভাবিক। সবক্ষেত্রে দেখা গেছে সরকারপ্রধানরা এক দেশ থেকে অন্য দেশে সফরকালে কিছু চুক্তি স্বাক্ষর করে থাকেন পারস্পরিক উন্নয়নের স্বার্থে। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। ভারত আমাদের এক বন্ধুপ্রতিম দেশ, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে যাদের সর্বাধিক অবদান ছিল। যাদের সার্বিক সহযোগিতা না পেলে আমাদের অস্তিত্ব সেদিন বিপন্ন হয়ে পড়তে পারত। ভারত চাইলে সে সময়েই আমাদের গ্রাস করে নিতে পারত। তবে এত প্রোপাগান্ডা কেন? আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকলেই এমন প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হয়। অথচ এই দল মুুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী রাজনৈতিক দল। তারাই দেশ বিক্রি করবে? যারা আজ দেশ বিক্রির ভাঙ্গা রেকর্ডটি বাজিয়ে চলেছেন, সেই অর্বাচীনদের রাজনৈতিক গোপন কথা সাধারণ মানুষের বোধগম্য নয়। সাধারণ মানুষের মধ্যে ভারতভীতি (?) প্রচার করে ভোটের রাজনীতিতে ফায়দা লুটতে চায়। তা যে জুজুর ভয়, এ কথা আজ অনেকের কাছেই পরিষ্কার। যারা আজ দেশ বিক্রির কথা বলছেন, তারাও তো ক্ষমতায় থাকাকালে ভারতসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চুক্তি করেছেন। ১৯৮০ সালে ভারতের সঙ্গে জেনারেল জিয়া ট্রানজিট চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন। ১৯৯৩ সালেও ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি হয়েছিল আগের ট্রানজিট চুক্তিকে বহাল রেখেই। তখন দেশের সার্বভৌমত্ব যায়নি, এখন হলে কেন যায়? মানুষ সব সময় প্রকৃত সত্যটা জানতে চায় এবং এটি তার নাগরিক অধিকার। তার অর্থ এই নয় যে, ভুল তথ্য দেয়া হবে। আজ যারা দেশ বিক্রির কথা বলছে তারা ২৫ বছরের বন্ধুত্ব স্মারক চুক্তিকেও বলেছিলেন গোলামির চুক্তি (!) এত দিনেও কে কার গোলামি করল? যে চুক্তির বিষয়ে দেশের জনগণকে ভুল বুঝিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে বিতর্কিত করা হয়েছিল। যা আজ মিথ্যা প্রমাণিত হলো। ভারতের কাছে বাংলাদেশ বিক্রি হয়ে গেলে তো (যদিও অসম্ভব ব্যাপার) বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রিত্ব, জাতীয় পতাকা, ইত্যাদি কিছুই থাকে না। ভারতীয় বাহিনীর পদভারে প্রকম্পিত হয়ে উঠত বাংলার মাটি। তা তো নয়। সব কিছুই তো দেখি ঠিকঠাক আছে। আসলে যারা অন্তরে পাকিস্তানী ভাবাদর্শে বিশ্বাসী তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নস্যাত করতেই এমটি বলছেন। এটি প্রকৃত দেশপ্রেমের পরিচায়ক হতে পারে না। মধ্যম হালিশহর, চট্টগ্রাম থেকে
×