ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

খেলাঘর জাতীয় শিশু-কিশোর সাংস্কৃতিক উৎসব শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ৩১ মার্চ ২০১৭

খেলাঘর জাতীয় শিশু-কিশোর সাংস্কৃতিক উৎসব শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানের সুরে শুরু হলো আয়োজন। জাতীয় সঙ্গীত পরিশেনায় অংশ নিল একঝাঁক শিশু-কিশোর শিল্পী। এরপর খুদে শিল্পীদের কণ্ঠে গীত হলো সেলিম রেজা রচিত ও সুরারোপিত উৎসব সঙ্গীত ‘নতুন প্রীতি সম্মিলনে শপথ বাক্য গড়ি/স্বপ্ন পূরণ করি ...’। গানের সুর থামতে কচি কণ্ঠগুলোয় উচ্চারিত হয় সৈয়দ শামসুল হকের কালজয়ী কবিতা ‘আমার পরিচয়’। কবিতার শিল্পিত উচ্চারণ শেষে শিল্পীরা আবার ফিরে আসে সুরের পানে। গাওয়া হয় আখতার হুসেন রচিত ও সেলিম রেজার সুরারোপিত খেলাঘর সঙ্গীত ‘আমরাতো সৈনিক শান্তির সৈনিক অক্ষয় উজ্জ্বল সূর্য ...।’ এরপর ‘আগুনের পরশমনি ছোঁয়াও প্রাণে’ গানের সঙ্গে পরিবেশিত হয় নাচ। এই নৃত্য গীতের মাঝেই প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে উৎসব উদ্বোধন করেন অতিথিরা। এভাবেই বৈচিত্র্যময় পরিবেশনায় তিন দিনের খেলাঘর জাতীয় শিশু-কিশোর সাংস্কৃতিক উৎসবের সূচনা হয় বৃহস্পতিবার। উৎসবের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ছড়া গান, কবিতা আবৃত্তি, অভিনয়, লোকনৃত্য, সাধারণ নৃত্য, দেশের গান এবং রবীন্দ্র ও নজরুল সঙ্গীতে সাজানো প্রতিযোগিতা। ঐতিহ্যবাহী শিশু-কিশোর সংগঠন কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের সারা দেশের নির্বাচিত খুদে শিল্পীদের অংশগ্রহণে বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া উৎসব প্রতিযোগিতাটি চলবে শনিবার পর্যন্ত। এবারের উৎসবের মূল প্রতিপাদ্য ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নতুন প্রজন্ম গড়ে তোল’। বৃহস্পতিবার বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় সঙ্গীত, আবৃত্তি ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে উৎসব উদ্বোধন করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। খেলাঘর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতিম-লীর চেয়ারম্যান অধ্যাপক পান্না কায়সারের সভাপতি, বিশেষ অতিথি ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবুল ফারাহ্্ পলাশ। আলোচনায় অংশ নেন ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত। আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, পাকিস্তানী শাসনামলে আমরা শিক্ষাগ্রহণ করেছি। সে সময়কার পাঠ্যপুস্তকের চেয়ে বর্তমান সময়ের পাঠ্যপুস্তক নিম্নমানের। যদিও সে সময়ে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ধর্মের দোহাই দিয়ে পাকিস্তান নামের রাষ্ট্রের জন্ম হয়। এ দোহাই দিয়েই তারা দেশ শাসন করেছে। এরপর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে একাত্তরে দেশ স্বাধীন হয়েছে। এ সময় আমাদের ঐতিহ্যের অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক চেতনাবোধের জায়গা থেকে দেশ গড়ে তোলার চেষ্টা চলছিল, সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে। পরবর্তীতে জিয়া ও এরশাদ ধর্মের দোহাই দিয়ে আবারও দেশ শাসন করেছে, যার ফল আজকের জঙ্গীবাদ। এটা সহজে রোখা যাবে না। উদ্বোধনী শামসুজ্জামান খান বলেন, শিশুরাই সুন্দর, শিশুরা ফুলের মতো। তারাই পারে সবকিছু বদলে দিতে। ওরাই আমাদের বড় সম্পদ। আজকে দেশে যে জঙ্গীবাদের উত্থান, তা রুখতে পারে এই শিশুরাই। এজন্য শিশুদের আমাদের হাজার বছরের অসাম্প্রদায়িক চেতনায় গড়ে তুলতে হবে।’ উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা শেষে খেলাঘরের ফেনী ও পটুয়াখালী আসরের শিশু-কিশোররা সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেয়। আজ শুক্রবার শুরু হবে জাতীয় শিশু-কিশোর সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা। আজ সকাল নয়টা থেকে ছড়া গান, দেশের গান, লোকসঙ্গীত, রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুল সঙ্গীত, আবৃত্তি ও সাধারণ নৃত্য এবং শনিবার সকাল ৯টা থেকে গণসঙ্গীত, লোকনৃত্য ও একক অভিনয় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও প্রতিদিন সন্ধ্যায় থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শনিবার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন আইনমন্ত্রী এ্যাডভোকেট আনিসুল হক। ভ্রমণকারীদের ছবি নিয়ে প্রদর্শনী ॥ নারী পর্যটকদের গ্রুপ ‘ট্রাভেলেটস অফ বাংলাদেশ’। এই ভ্রমণপিপাসু দলের আয়োজনে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হলো আলোকচিত্র প্রদর্শনী ‘ট্র্যাভেল এ্যান্ড ট্যাভেলেটস ফটোগ্রাফি প্রদর্শনী সেশন ১’। প্রদর্শনীর পৃষ্ঠপোষকতা করছে আইএফআইসি ব্যাংক। তিনদিনের এ প্রদর্শনীর পাশাপাশি থাকছে শিশু-কিশোরদের উন্মুক্ত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। বৃহস্পতিবার বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালায় এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। বিশেষ অতিথি ছিলেন পর্যটন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান অপরূপ চৌধুরী ও এভারেস্টজয়ী পর্বতারোহী এম এ মুহিত। আলোকচিত্র প্রদর্শনী উপলক্ষে ট্র্যাভেলেটস অব বাংলাদেশ তিন বিভাগে ছবি আহ্বান করে। যাতে জমা পড়ে প্রায় ছয় হাজার আলোকচিত্র। যার মধ্য থেকে বাছাইকৃত দুই শ’ আলোকচিত্র এ প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে। যাতে বাংলাদেশের নৈসর্গিক সৌন্দর্য যেমন উঠে এসেছে, তেমনি রাজধানীর যাপিত জীবনের নানা চিত্রও রয়েছে এ প্রদর্শনীতে। আয়োজকরা জানান, ৩১ মার্চ সমাপনী দিনে তিন বিভাগে নয় আলোকচিত্রীকে পুরস্কৃত করা হবে। চার সদস্য বিচারকম-লীর মধ্যে রয়েছে দেশের প্রথম নারী আলোকচিত্রী সাঈদা খানম, রফিকুল ইসলাম, আক্কাস মাহমুদ ও পল ডেভিড বারিকদার। সমাপনী দিনে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি। প্রদর্শনী চলবে সকাল ১০টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত।
×