ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কুমিল্লায় আবারো জয়ী মনিরুল হক সাক্কু

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ৩০ মার্চ ২০১৭

কুমিল্লায় আবারো জয়ী মনিরুল হক সাক্কু

আরাফাত মুন্না/মীর শাহ আলম, কুমিল্লা থেকে ॥ সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণের মাধ্যমে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে আবারো জয়ী হয়েছেন বিএনপি প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু। অন্যদিকে ১০ হাজার ৫৩৪ ভোট কম পেয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমা হেরেছেন। জানা গেছে, কুমিল্লা সিটির ২৭ ওয়ার্ডে ১০৩ কেন্দ্রের মধ্যে ১০১ কেন্দ্রের ফলাফলে সাক্কু পেয়েছেন ৬৮ হাজার ৭৯৫ ভোট। অন্যদিকে সীমা নৌকা প্রতিকে পেয়েছেন ৫৮ হাজার ২৬১ ভোট। স্থগিত হওয়া দুই কেন্দ্রে ভোট রয়েছে ৫ হাজার ১৮৩। অর্থাৎ এই দুই কেন্দ্রের ভোট নির্বাচনের ফলে কোনো প্রভাব ফেলতে পারবে না। প্রথমবারের মত দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষে হয়েছে উৎসব মূখর পরিবেশে। নগরীর টাউনহলে নির্বাচনের ফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং অফিসার রকিব উদ্দিন মণ্ডল। ভোট গ্রহণ শেষে সন্ধ্যার পরপরই টাউন হলের নগর মিলনায়তন মাঠে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ফল ঘোষণার জন্য অস্থায়ী নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সামনে দুই পক্ষের সমর্থকের ভিড় বাড়তে শুরু করে। বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে ফল আসতে শুরু করলে সাক্কু সমর্থকদের উল্লাস করতে দেখা যায়। এক পর্যায়ে জনসমুদ্রে পরিণত হয় কান্দিরপাড়। বৃহস্পতিবার শুধু কুমিল্লাবাসী নয়, সারাদেশের মানুষ দেখল সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ একটি নির্বাচনের সাবলীল আয়োজন। কয়েকটি কেন্দ্রে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ন পরিবেশে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন করার পাশাপাশি অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে ভোট গণনা শেষে বেসরকারি ফলও ঘোষণা করা হয় কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের। ফল ঘোষণার পর রাতে অবধি বিজয় উৎসবে মেতে থাকেন সাক্কু সমর্থকরা। তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা দলের প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমার পরাজয়ের জন্য অভ্যন্তরিন কোন্দলকেই দায়ী করেন। অন্যদিকে নির্বাচন চলাকালে সীমা বলেন, নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষতা দেখাতে গিয়ে আমার নেতাকর্মীদের হয়রানি করেছে। সকালে ভোট দেয়ার পর ফলাফল মেনে নেবেন বলে তিনি জানিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার কুমিল্লাবাসীর সঙ্গে সঙ্গে সারাদেশের মানুষেরই দৃষ্টি ছিলএই নির্বাচনের দিকে। কেমন ভোট হয়, গভীর আগ্রহ নিয়ে তা দেখার অপেক্ষায় ছিলেন সবাই। নানা আশঙ্কার কথাও শোনা যাচ্ছিল ভোট শুরুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় ভোট শুরুর কিছু সময়ের মধ্যেই দৃশ্যপট পাল্টে যায়। কেটে যায় সকল শঙ্কা। নিরাপদে ভোট দিতে পারার বার্তা পৌঁছে যায় ঘরে ঘরে। কেন্দ্রগুলোতে ঢল নামে ভোটারদের। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দেন কুমিল্লাবাসী। ভোটের এই ডামাডোলের মধ্যেই নিজ প্রতীক ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দিয়ে সাংবাদিকদের ব্যালট পেপার দেখিয়ে অন্যরকম খবরের জন্ম দেন মেয়র প্রার্থী সাক্কু। নাসিক সিটি নির্বাচনে একই কাজ করেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান, যা নিয়ে নানা বির্তকের জন্ম দিয়েছিল। কুসিক নির্বাচনে মোট ভোটার ২ লাখ ৭ হাজার ৫৬৬। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ২ হাজার ৪৪৭এবং নারী ভোটার দুই লাখ ৫ হাজার ১১৯ জন। রিটার্নিং অফিসারের দেওয়া তথ্য মতে, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ নির্বাচনে ৬০ শতাংশের ওপরে ভোট পড়েছে। নির্বাচনে মেয়র পদ ছাড়াও ৯টি সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদের বিপরীতে ৪০ জন ও ২৭টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১১৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
×