ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দেশের উন্নয়ন হয় : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০০:৩৬, ২৯ মার্চ ২০১৭

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দেশের উন্নয়ন হয় : প্রধানমন্ত্রী

জনকণ্ঠ রিপোর্ট ।।আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দেশের উন্নয়ন হয়, এদেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফরিদপুর শহরের রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ৭৫ এর পর বাংলাদেশে হত্যার রাজনীতি শুরু হয়। বিএনপি নেত্রী সেই ধারা অব্যাহত রেখেছে। বিএনপি ক্ষমতায় আসলে দেশে জঙ্গিবাদ, জেএমবি ও সন্ত্রাসবাদের সৃষ্টি হয়। তারা সব সময় মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে এদেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ক্ষমতায় এসে টাকা পয়সা খরচ করে গাড়ি কিনি আর বিএনপি-জামায়াত সরকার আন্দোলনের নামে সেগুলো পুড়িয়ে ধ্বংস করে। তারা লঞ্চ, ট্রেন পুড়িয়ে দেশের সম্পদ নষ্ট করে। এদেশের জনগণের উন্নয়নে তারা কোনও কাজ করেনি। ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে জয়যুক্ত করেন আপনারা। এ জন্য আপনাদের ধন্যবাদ। আজ দেখুন নৌকায় ভোট দিয়েছেন, উন্নয়ন হয়েছে। একটু আগে উন্নয়নের বিভিন্ন কর্মসূচি উদ্বোধন করেছি। ২০০৮ সালেও উন্নয়ন করেছি। জনসভার শুরুতে তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের চিত্র তুলে ধরেন। এসম অতীতে বিএনপি-জামায়াত সরকারের অত্যাচার ও নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরেন। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ক্ষমতায় এসে এদেশের কৃষকদের বিনামূল্যে সার দিয়েছি। দেশের খাস জমি ভূমিহীনদের মধ্যে বিতরণের ব্যবস্থা করেছি। উচ্চ শিক্ষার শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে বই দিয়েছি। এদিন বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে ফরিদপুরের শেখ জামাল স্টেডিয়ামে হেলিকপ্টারে অবতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান এলজিআরডিমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসনসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এদিন তিনি ২০টি প্রকল্প উদ্বোধন এবং ১২টি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। প্রকল্পগুলো উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী যেসব প্রকল্প উদ্বোধন করেন সেগুলো হচ্ছে- ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় নির্মাণ প্রকল্প, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, পল্লীকবি জসিম উদ্দীন সংগ্রহশালা, ফরিদপুর ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজী, শিশু একাডেমী, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শকের কার্যালয় নির্মাণ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ফরিদপুর, ফরিদপুর ৫০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্লান্ট, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের একাডেমিক কাম পরীক্ষা হল, সদর উপজেলাধীন চর কমলাপুর খেয়াঘাট থেকে বিলমামুদপুর স্কুল সড়কে কুমার নদীর ওপর ৯৬ মিটার আরসিসি ব্রিজ, ভাংগা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৩১-শয্যা থেকে ৫০-শয্যায় উন্নয়ন প্রকল্প, আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস ফরিদপুর, বিএসটিআই ভবন, ভাংগা থানা ভবন, মধুখালী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন, সদর উপজেলা থেকে বাখুন্ডা জিসি হয়ে রসুলপুর ভায়া চর নিখুরদি সড়ক বিসি দ্বারা উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্প, ফরিদপুর সদর উপজেলাধীন ডিক্রিরচর ইউনিয়নের মুন্সীডাঙ্গী কমিউনিটি ক্লিনিক এবং ৩৩/১১ কেভি হারুকান্দি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র (ক্ষমতা ২০/২৬.৬৬ এমভিএ)। এই ২০টি প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ৩৮ কোটি টাকা। এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী যেসব প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন সেগুলো হচ্ছে- কুমার নদ পুনঃখনন প্রকল্প, আলফাডাঙ্গা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রকল্প, ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয় নির্মাণ প্রকল্প, পুলিশ হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্প, পুলিশ অফিসার্স মেস, সালথা টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের একাডেমিক কাম প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ, চন্দ্রপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ ফরিদপুরের ছাত্রী নিবাস নির্মাণ, চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নির্মাণ, ১৫০০-আসনবিশিষ্ট মাল্টিপারপাস হলরুম নির্মাণ, সালথা ফায়ার সর্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন, সদরপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন নির্মাণ প্রকল্প। এই বারটি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৪২৫ কোটি ৩২ লাখ টাকা। প্রধানমন্ত্রী পরে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের জনসভায় যোগ দেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের কাজ পড়াশুনা করা। তাদের জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ পরিহার করতে হবে। অবিভাবক, প্রশাসন, ইমাম, শিক্ষকদের কাছে আমার আবেদন একটা ছেলে মেয়েও যেন জঙ্গিবাদের পথে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। নিজের ছেলে মেয়ে কার সঙ্গে মেশে, কার সাথে চলে তা দেখতে হবে। আমরা উচ্চ শিক্ষার জন্য বৃত্তি দিচ্ছি। কাজেই শিক্ষা নিতে হবে। জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে। তিনি আরও বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম, ভ্রাতৃত্বের ধর্ম। ইসলাম হামলা ও আত্মহননের পথ বেছে নেওয়া সমর্থন করে না। যারা জঙ্গি ও সন্ত্রাসের পথে গেছে তারা ইসলামের বদনাম করছে, মানসম্মান নষ্ট করছে। তারা যাতে এ পথ পরিহার করে সে চেষ্টা আপনাদের নিতে হবে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী উন্নয়ন কাজ অব্যাহত রাখতে ফরিদপুরবাসীর কাছে ২০১৯ সালের নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট চান। তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছি। বাংলাদেশ আজ বিশ্বে অভিশাপমুক্ত দেশ। ২০২১ সালে বাংলাদেশ হবে মধ্যম আয়ের ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ।
×