ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সরকারী-বেসরকারী মেডিক্যালে কয়েকটি চক্র এই ব্যবসায় জড়িত ;###;নতুন কঙ্কাল ৬০ থেকে ৭৯ হাজার টাকায় কেনাবেচা;###;আজিমপুর ও জুরাইন কবরস্থানে গোরখোদকদের কাছে ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকায় মিলে ;###;গডফাদাররা ধরাছোঁয়ার বাইরে

কোটি কোটি টাকার রমরমা বাণিজ্য সিন্ডিকেটের ॥ কঙ্কালের হাট

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ২৯ মার্চ ২০১৭

কোটি কোটি টাকার রমরমা বাণিজ্য সিন্ডিকেটের ॥ কঙ্কালের হাট

নিয়াজ আহমেদ লাবু ॥ দেশের বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী হাসপাতালে মানব কঙ্কালের অদৃশ্য হাট বসে। কবর থেকে অজ্ঞাত ও গলিত লাশ উত্তোলনের পর প্রয়োজনীয় কেমিক্যাল ব্যবহার করে এসব লাশ থেকে মাংস আলাদা করার পর ঝকঝকে কঙ্কাল বেরিয়ে আসার পরই এর সূচনা। এসব কঙ্কাল দেশের মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীদের কাছে মোটা অঙ্কের টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এমনকি দেশের বাইরেও পাচার হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্র জানায়, অধিক লাভজনক ব্যবসা বলে এই কাজে জড়িয়ে পড়ছে মেডিক্যাল শিক্ষক, শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে অপরাধীরা। এরা বিশাল নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে দেশের সরকারী ও বেসরকারী মেডিক্যালে। প্রতিবছর এসব মানব কঙ্কাল বিভিন্ন মেডিক্যাল শিক্ষার্থী ও বাইরে পাচার করে শতকোটি টাকার ওপর হাতিয়ে নিচ্ছে একাধিক সিন্ডিকেট। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সুনির্দিষ্ট নীতিমালার অভাবে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে কঙ্কাল কিনতে গিয়ে মেডিক্যাল শিক্ষার্থীরা হিমশিম খাচ্ছে। অনেক দরিদ্র পরিবারের সন্তানের শিক্ষাজীবন সঙ্কটের মুখে পড়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে মাঝে মধ্যে কেউ কেউ ধরা পড়লেও এর গডফাদাররা ধোরাছোঁয়ার বাইরে থাকছে। মেডিক্যাল কলেজের অনেক শিক্ষার্থী জানান, মেডিক্যাল শিক্ষকদের মাধ্যমে তার ঠিকানা নিয়ে পাঠদানের জন্য কঙ্কাল কিনে থাকেন। একেকটি নতুন কঙ্কাল ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকায় কিনে থাকেন। আবার অনেকে আজিমপুর ও জুরাইন কররস্থানে গোরখোদকের সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকার চুক্তিতে কঙ্কাল নিয়ে থাকেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ক্রেতার চাহিদা অনুসারে বিক্রেতা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কঙ্কাল নেয়ার স্থান ও ক্ষণ নির্ধারণ করে। এসব কঙ্কাল সংগ্রহ করা হচ্ছে রাজশাহী, ময়মনসিংহ, সোহরাওয়ার্দীর মতো সরকারী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে। গাজীপুর, ময়মনসিংহের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কবরস্থান থেকে পচাগলা লাশ প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে এসব কঙ্কাল সরবরাহ করা হচ্ছে। এছাড়া ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ, আজিমপুর কবরস্থান ও জুরাইন কবরস্থান থেকে বেওয়ারিশ লাশ ও কঙ্কাল সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। রাজধানীর কাফরুলসহ দেশের কয়েকটি থানায় মানব কঙ্কালসহ গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদের পর বেরিয়ে এসেছে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের এনাটমি বিভাগের এক অধ্যাপক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দেশে বর্তমানে ২২টি সরকারী ও ৫৫টি বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজ রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে প্রতিবছর ৭ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি হন। এদের মধ্যে শতকরা ৬০ ভাগ আগের ব্যাচে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর কাছ থেকে কঙ্কাল বা বোনস সংগ্রহ করে থাকেন। বাকি ৪০ ভাগ অর্থাৎ তিন হাজার শিক্ষার্থী প্রতিবছর বাজার থেকে নতুন বোনস বা কঙ্কাল কিনে নেন। প্রতিবছর দেশে মেডিক্যাল পড়ুয়া তিন হাজার ছাত্রছাত্রীর কঙ্কালের চাহিদা রয়েছে। মেডিক্যাল যন্ত্রাংশ বিক্রির বড় বড় প্রতিষ্ঠানে চাহিদার কথা জানিয়ে অগ্রিম টাকা দিলেই মেলে বোনস বা কঙ্কাল। অনেক সময় শিক্ষার্থী দেশের বিভিন্ন কবরস্থানে গোরখোদকদের শরণাপন্ন হন। আবার নিজ প্রতিষ্ঠানের চিহ্নিত শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বোনস বা কঙ্কাল সংগ্রহ করে থাকেন। সূত্র জানায়, বাংলাদেশে বোনস বা কঙ্কাল সংগ্রহের কোন নীতিমালা না থাকায় নানা চক্র অবৈধ উপায়ে এ ব্যবসায় নেমেছে। বর্তমানে নিয়ম অনুযায়ী, শুধু বেওয়ারিশ লাশ কিংবা মৃত্যুর আগে কেউ তার দেহ দান করে গেলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে ওই লাশ থেকে প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে কঙ্কাল তৈরি করা হয়ে থাকে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ফরেনসিক বিভাগের এক সহযোগী অধ্যাপকসহ কয়েকজন কঙ্কাল ব্যবসায় জড়িত। পাশাপাশি মিটফোর্ড, সোহরাওয়ার্দী ও কয়েকটি বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীও এই গলা লাশ ও কঙ্কাল কেনাবেচার টাকার ভাগ পান। চক্রটি রাজধানীর বিভিন্ন বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এনাটমি বিভাগে ব্যবহারের জন্য পচাগলা লাশ অথবা কঙ্কাল বিক্রি করে থাকেন। একটি গলা লাশ ও নিখুঁত কঙ্কালের মূল্য ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। আবার লাখ টাকায়ও বিক্রি হয়। কবর থেকে অজ্ঞাত ও গলিত লাশ উত্তোলনের পর কিভাবে কঙ্কাল তৈরি ও সরবরাহ হয় ॥ গত বছর ৫ নবেম্বর রাতে রাজধানীর কাফরুল থানাধীন পূর্ব কাজীপাড়ার ১৮৩/১ নম্বর ‘ব্লিজ রোদেলা’ ভবনের দ্বিতীয় তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে ৩২টি কঙ্কাল ও ৮টি গলিত মানবদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এসব মানবদেহ বড় ড্রামের মধ্যে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড নামে শক্তিশালী কেমিক্যালে ডোবানো ছিল। পুলিশ অভিযানের সময় উদ্ধার করা হয় বিপুল কেমিক্যাল (হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড ও ব্লিচিং পাউডার)। এ সময় পুরনো ঢাকার কোর্টকাছারি এলাকার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের শেষ বর্ষের ছাত্র কামরুজ্জামান ও তার কর্মচারী শাহিন মিয়াকে পুলিশ গ্রেফতার করে। প্রথমে তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখানো হয়। পরে ১১৩/৩৪ ধারায় চোরাই মাল ও ক্রয়-বিক্রয়ে (পাচার) সহযোগিতার অভিযোগে মামলা করা হয়। কঙ্কাল বিক্রির মূল হোতা মেডিক্যাল শিক্ষার্থী কামরুজ্জামান জানায়, তাদের ২০ থেকে ২৫ জনের একটি সিন্ডিকেট এক বছর ধরে পূর্ব কাজীপাড়ার এই ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়ে কঙ্কাল ব্যবসা শুরু করে। রাজধানী, গাজীপুর, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন কবরস্থান থেকে গলিত লাশ উত্তোলন করা হয়। প্রতিটি গলিত লাশ তারা ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকায় কেনার পর প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে কঙ্কাল তৈরি করে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করত। জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার কামরুজ্জামান পুলিশকে বলেছে. বাংলাদেশে বিভিন্ন মেডিক্যালের শিক্ষার্থী ছাড়াও দেশের বাইরেও তারা এসব কঙ্কাল বিক্রি করত। পুলিশকে সে জানায়, তারা গলিত লাশের বেশিরভাগই ময়মনসিংহ এবং গাজীপুর এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিভিন্ন কবরস্থান থেকে সংগ্রহ করত। এসব এলাকায় গভীর বনে বিভিন্ন কবর থেকে লাশ তুলে বিক্রি করার জন্য আরেকটি চক্র রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে কামরুজ্জামান আরও জানায়, কেউ মারা গেলে কবর দেয়ার দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে তারা গলিত ওই লাশ সংগ্রহ করে ফেলে। এক থেকে দেড় সপ্তাহ পার হলে ওই মানবদেহ দিয়ে প্রকৃত কঙ্কাল তৈরি সম্ভব হয় না। এটা লাভজনক ব্যবসা হওয়ায় কবর থেকে গলিত লাশ সংগ্রহের জন্য তারা ওই এলাকায় কিছু কর্মীও নিয়োগ দিয়েছিল। গভীর রাতে এসব লাশ রাজধানীর কাজীপাড়ার ফ্ল্যাটে এনে তা প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে কঙ্কাল তৈরি করা হতো। পুলিশের মিরপুর বিভাগের সহকারী কমিশনার (কাফরুল জোন) মাহবুবুর রহমান জানান, কবর থেকে এত পরিমাণ গলিত লাশ উত্তোলনের তথ্য তাদের কাছে অবিশ্বাস্য বলে মনে হচ্ছে। এ চক্রের সঙ্গে পেশাদার খুনি চক্রের যোগসাজশ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গ্রেফতারের পর নূরুজ্জামান ওরফে কামরুজ্জামান নিজেকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের শেষ বর্ষের ছাত্র দাবি করে পুলিশকে জানায়, গোরস্থান থেকে সংগ্রহ করা মাথার খুলি, হাড় দিয়ে চক্রটি কঙ্কাল তৈরি করত। মাথার খুলি ও হাড়গুলো প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষ করে মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের কাছে অবৈধভাবে বিক্রির উদ্দেশেই এই হাড়গোড় দিয়ে তৈরি কঙ্কাল সংগ্রহ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে কামরুজ্জামান পুলিশকে জানায়, বাংলাদেশে বিভিন্ন মেডিক্যালের শিক্ষার্থী ছাড়াও দেশের বাইরেও তারা এসব কঙ্কাল বিক্রি করত। কিছু কঙ্কাল কেনা হতো পাস করে বেরিয়ে যাওয়া শিক্ষার্থীর কাছ থেকে। আর সেগুলো নতুন শিক্ষার্থীর কাছে বিক্রি করত সে। এছাড়া ঢাকার বাইরে ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে হাড়গোড় সংগ্রহের কাজ করত সে। সে জানায়, ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক তন্ময় তাকে এই কঙ্কাল ব্যবসায় জড়িয়েছে। তিনি বহু আগে থেকে কঙ্কাল ব্যবসায় জড়িত। কামরুজ্জামান আরও জানায়, দেশে কঙ্কাল ব্যবসায়ীর বিশাল নেটওয়ার্ক রয়েছে। এখানে দেশের সরকারী ও বেসরকারী মেডিক্যাল শিক্ষক, শিক্ষার্থী, সন্ত্রাসীরা জড়িত। সে জানায়, এই কঙ্কাল ব্যবসায় জড়িয়ে শুনেছিÑ তন্ময় স্যার সব কিছু জানেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাফরুল থানার এসআই আমিনুল ইসলাম জনকণ্ঠকে জানান, কঙ্কাল ব্যবসায় দেশে বিশাল নেটওয়ার্ক রয়েছে। আমরা ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষক তন্ময়কে গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছি। তাকে গ্রেফতার করলে অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে। এদিকে গলিত লাশ ও কঙ্কাল বিক্রি নিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজকে ঘিরে রয়েছে বিশাল নেটওয়ার্ক। মর্গের বাইরে চা-সিগারেটের এক দোকানদার এই কঙ্কাল ব্যবসার ব্যাপারি হিসেবে পরিচিত। চা-সিগারেটের ব্যবসার আড়ালে লাশ ও কঙ্কালের জমজমাট ব্যবসা করছে। তার এ অবৈধ ব্যবসায় সহযোগী রয়েছে কয়েকজন। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে চায়ের দোকানের আড়ালে প্রধানত লাশ ও কঙ্কালের ব্যবসা করে সে জীবিকা নির্বাহ করছে। বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত তার কাছ থেকে কঙ্কাল কিনছেন। প্রতিটি কঙ্কালের জন্য ৪০ থেকে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম দেয়া হয়। পুরনো কঙ্কালের দাম হাঁকায় ৪০ হাজার টাকা। নতুন কঙ্কালের জন্য ৬০ হাজার টাকা। উজ্জ্বল নামের এক যুবক স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক সময় লাশ ও কঙ্কালের ব্যবসা করত। দুই বছর আগে একটি লাশ বিক্রির অর্থের ভাগবাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্ব হয়। এ নিয়ে তাকে মেডিক্যাল থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ফরেনসিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক সোহেল মাহমুদ জনকণ্ঠকে জানান, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে কঙ্কাল বিক্রির অভিযোগটি আমার জানা নেই। তবে মৃত্যুর আগে কেউ তার দেহ দান করে গেলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে ওই লাশ থেকে প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে কঙ্কাল তৈরি করা হয়ে থাকে। শিক্ষার্থীরা শিক্ষার ক্ষেত্রে তা থেকে উপকৃত হন। দেশের বাইরে থেকে কঙ্কাল আনা হয়। তিনি জানান, বেওয়ারিশ লাশ থেকেই কঙ্কাল তৈরি করা হয়। শিক্ষার্থীরা বেওয়ারিশ লাশ কিভাবে-কোথা থেকে সংগ্রহ করে সে বিষয়ে আমি স্পষ্ট কিছু জানি না। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রশাসন সূত্র জানায়, ঢাকা মেড্যিাকল কলেজ হাসপাতালে আসা বেওয়ারিশ লাশ কলেজের শিক্ষার্থীদের পাঠদানে ব্যবহার করা হয়। লাশগুলো হস্তান্তরের জন্য অন্তত এক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হয়। যদি কোন ওয়ারিশ না পাওয়া যায় তাহলে লাশের ছবি তুলে রেখে তা ব্যবহারের জন্য হস্তান্তর করা হয়। সেটি মেডিক্যাল কলেজের বিষয়। গতবছর ১৯ অক্টোবর রাতে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের লাশকাটা ঘর থেকে ১৫টি মানব কঙ্কালের বিভিন্ন অংশ উদ্ধার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। এ ঘটনায় নগরীর রাজপাড়া থানার লক্ষ্মীপুর বাগানপাড়া এলাকার নিশিপদ ডোমের ছেলে বিপন কুমার ডোম (৫৩) ও একই এলাকার মৃত পাঁচু রবি দাসের ছেলে নিরেন রবি দাসকে (৪২) গ্রেফতার করা হয়। গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, পাচারের উদ্দেশে বাইরে থেকে ১৫টি মানব কঙ্কালের খুলিসহ বিভিন্ন অংশ এনে রামেক হাসপাতালের লাশকাটা ঘরে রাখে চোরাকারবারিরা। একই বছর ৮ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহ শহরের কাঁচিঝুলি টাঙ্গাইল বাসস্ট্যান্ড থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ব্যাগভর্তি মানুষের কঙ্কাল উদ্ধার করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানার ওসি কামরুল ইসলাম জানান, ব্যাগের ভেতরে মানুষের ২টি মাথার খুলিসহ অর্ধশত হাড় পাওয়া যায়। কঙ্কাল পাচারকারী চক্র এগুলো বিক্রির জন্য শহরে নিয়ে আসছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। গ্রেফতাররা জেলহাজতে রয়েছে।
×