ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মৃত্যুদ-/যাবজ্জীবন কারাদ-ের বিধান রেখে সড়ক পরিবহন আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন

‘ড্রাইভিংকালে মোবাইলে কথা বলা দণ্ডনীয় অপরাধ’

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ২৮ মার্চ ২০১৭

‘ড্রাইভিংকালে মোবাইলে কথা বলা দণ্ডনীয় অপরাধ’

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বিশেষ ক্ষেত্রে মৃত্যুদ-/যাবজ্জীবন কারাদ-ের বিধান রেখে ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৭’ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এ আইনে সাধারণ অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদ- ও জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রে অষ্টম শ্রেণী পাস হওয়ার পাশাপাশি মহিলা সিটে পুরুষ যাত্রী বসা, গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোনে কথা বলা, ফুটপাথ দিয়ে মোটরসাইকেল চালানোসহ বেশকিছু অপরাধের জন্য জেল জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। সচিবালয়ের সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে আইনটির অনুমোদন দেয়া হয়। এছাড়া শ্রম আইন অনুযায়ী ড. ইউনূসের প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে লভ্যাংশের হিস্যা আদায় করতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে তিনি প্রায় ১৯ হাজার কোটি টাকার হিসাব না দিয়ে কর ফাঁকি দিয়েছেন। বৈঠকে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে এনেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। সূত্র জানায়, বাংলাদেশ শ্রম আইন অনুযায়ী কোন কোম্পানি বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দুই কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করলে তার লভ্যাংশের ১০ শতাংশের এক শতাংশ সরকারের শ্রমিক কল্যাণ ফান্ডে জমা করার বিধান রয়েছে। বাকি টাকা কর্মরত শ্রমিক-কর্মকর্তা-কর্মচারী সমান ভাগে পাবেন। ড. ইউনূসের গ্রামীণ টেলিকমের হিসাব অনুযায়ী তারা এক হাজার নয়শ’ কোটি টাকা লাভ করেছেন। সে হিসাবে ১৯ কোটি টাকা কল্যাণ ফান্ডে জমা দেয়ার কথা। কিন্তু তাও দেয় না আবার শ্রমিক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশও দেয় না। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে লিখিতভাবে এই টাকা দেয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু তাতেও প্রতিষ্ঠানটি তা দেয় না। অবশেষে শ্রমিকরা প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। সোমবার পর্যন্ত ১৩টি মামলা হয়েছে। ইতোমধ্যে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী তাদের লাভ হয়েছে ২১ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু এনবিআরকে যে তথ্য দিয়েছে তাতে দেখানো হয়েছে ১৯০০ কোটি টাকা। ইতোমধ্যে এনবিআর থেকে এ ব্যাপারে চিঠি দেয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে। বিষয়টি সোমবার মন্ত্রিসভা বৈঠকের শেষ মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। খসড়া আইনে নতুন ব্যবস্থা হিসেবে চালকদের পয়েন্ট নির্ধারণ করে দিয়ে অনিয়মের জন্য তা কাটার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এছাড়া নতুন আইন অনুযায়ী ফুটপাথ দিয়ে মোটরসাইকেল চালালেও শাস্তির মুখে পড়তে হবে। এছাড়া বাড়ছে পরিবহন ক্ষেত্রের নানা অপরাধের শাস্তি। নতুন আইনে দুর্ঘটনায় হতাহতের ক্ষেত্রে চালকদের কোন শাস্তি নির্ধারণ করা হয়নি। এক্ষেত্রে ১৮৬০ সালের দ-বিধি অনুযায়ী শাস্তি নির্ধারণের কথা খসড়া আইনে বলা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘দি মোটর ভেহিক্যাল অর্ডিন্যান্স ১৯৮৩’ আছে। এটা যেহেতু অর্ডিন্যান্স ও মার্শাল ল‘ আমলের করা সেজন্য আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী নতুনভাবে আইনে পরিণত করার বাধ্যবাধকতা আছে। সেজন্য এটি নিয়ে আসা হয়েছে। এখানে বেশ বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। পরিবহন সেক্টরটা অনেক ‘ভাইব্র্যান্ট’, অনেকগুলো এজেন্সি কাজ করে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে অনেক লিঙ্ক রাখতে হয়। আমাদের রিজিওনাল কানেকটিভিটি, আন্তর্জাতিক অনেক বিষয়-আশায় এর মধ্যে চলে আসে। শাস্তির মধ্যে পরিবর্তন আনা হয়েছে ও সময়ের ধারাবাহিকতায় যে পরিবর্তন হয়েছে সে জিনিসগুলো আইনে নিয়ে আনা হয়েছে। গাড়ি চালনার সময় মোবাইল ব্যবহারের বিষয়টি তো আগে ছিল না জানিয়ে শফিউল আলম বলেন, বিষয়টি নতুনভাবে আইনের মধ্যে নিয়ে আসা হয়েছে। গাড়ি চালানোর সময় কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবে না। গাড়ি চালনার সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে সর্বোচ্চ এক মাসের কারাদ- বা ৫ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয়দ- পেতে হবে। খসড়া আইন অনুযায়ী, সড়কের ফুটপাথের ওপর দিয়ে কোন ধরনের মোটরযান চলাচল করতে পারবে না। যদি করে তবে তিন মাসের কারাদ- বা ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হবে। গাড়ি চালকের বয়সসীমা আগে ছিল কমপক্ষে ১৮ বছর, পেশাদার হলে কমপক্ষে ২১ বছর বয়স হতে হবে। নতুন আইনে এ বিষয়টি আগের মতোই রয়েছে। আগে গাড়ি চালকদের লেখাপড়ার বিষয়ে কিছু ছিল না জানিয়ে তিনি বলেন, নতুন আইনে এ বিষয়টি নিয়ে আসা হয়েছে। নতুন আইন অনুযায়ী ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য কমপক্ষে অষ্টম শ্রেণী পাস হতে হবে। কন্ডাক্টর বা চালকের সহযোগীকে কমপক্ষে লেখার ও পড়ার সক্ষমতা থাকতে হবে। পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত তার লেখাপড়া থাকতে হবে। পরিবহন বিশেষজ্ঞ ও বিশিষ্টজনরা চালকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি করার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন সময়ে পরিবহন শ্রমিকরা এর বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামেন। পরিবহন শ্রমিকরা যেভাবে চেয়েছেন আইনটি সেভাবে করা হয়েছে- এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আইনটি প্রণয়নে যথেষ্ট পরামর্শ গ্রহণ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানের ক্ষেত্রে যে বিধানগুলো দরকার সবগুলো আনার চেষ্টা করা হয়েছে। শফিউল আলম বলেন, প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, ছয় মাস বা এর বেশি কারাদ- ও ৫০ হাজার টাকা বা এর বেশি জরিমানার অপরাধগুলোর ক্ষেত্রে পুলিশ বিনা পরোয়ানায় আসামি গ্রেফতার করতে পারবে। অন্য কোন ক্ষেত্রে তা পারবে না। যদি কেউ ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালায় তবে সর্বোচ্চ ৬ মাসের কারাদ- বা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয়দ-ে দ-িত হবে। কেউ এই অপরাধ করলে তাকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করা যাবে। আগে এক্ষেত্রে ৩ মাসের কারাদ- বা ৫ হাজার টাকা জরিমানা ছিল। চালকের সহকারীর লাইসেন্স লাগবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কন্ডাক্টারের লাইসেন্স না থাকলে এক মাসের কারাদ- বা ২৫ হাজার টাকা জরিমানা হবে। তিনি বলেন, জাল ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যবহার করলে আগে শাস্তি ছিল সর্বোচ্চ ২ বছরের কারাদ- বা এক লাখ টাকা জরিমানা। প্রস্তাবিত আইনে মূল শাস্তি কারাদ- আগের মতোই আছে, জরিমানা ৩ লাখ টাকা করা হয়েছে। ফিটনেস না থাকা মোটরযান চালালে আগে শাস্তি সর্বোচ্চ ৬ মাসের কারাদ- বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, সে ক্ষেত্রে এখন শাস্তি সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদ- বা সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা জরিমানা। এ শাস্তি পাবে মূলত গাড়ির মালিক। দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে দ-বিধিতে যে শাস্তি রয়েছে সেই শাস্তি প্রযোজ্য হবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, দ- বিধিতে তিন রকমের বিধান রয়েছে। (দুর্ঘটনা) যদি (ইচ্ছাকৃতভাবে) নরহত্যা হয়, তবে দ-বিধির ৩০২ ধারা হবে। এটার শাস্তি মৃত্যুদ-। (দুর্ঘটনায়) হত্যা না হলে, ক্ষেত্রে ৩০৪ ধারা প্রযোজ্য হবে। এক্ষেত্রে শাস্তি যাবজ্জীবন। বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণে দুর্ঘটনা হলে ৩০৪ এর (বি) অনুযায়ী ৩ বছরের কারাদ- হতে পারে। নতুন আইনে শুধু পরিবহন ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের দ-গুলো আনা হয়েছে। ওজনসীমা অতিক্রম করলে সর্বোচ্চ ৩ বছরের কারাদ- বা ৩ লাখ টাকা জরিমানা। এখানে মালিক ও ড্রাইভার দুই গ্রুপকেই যুক্ত করা হয়েছে, তারা দায়ী হবে। এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণে মানুষ আহত বা নিহত হলে তা দ-বিধি অনুযায়ী বিচার হবে। বেপরোয়া গাড়ি চালানো, দুই গাড়িতে পাল্লা দেয়ার কারণে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে ৩ বছরের কারাদ- বা ২৫ লাখ টাকা জরিমানা হবে। বেপরোয়া গাড়ি চালানো এবং এতে দুর্ঘটনা না ঘটলেও ২ বছরের কারাদ- বা ২ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে প্রস্তাবিত আইনে। মদপান বা নেশাদ্রব্য পান করে গাড়ি চালানো, মদপান বা নেশাদ্রব্য পান করে মোটর শ্রমিকদের গাড়িতে অবস্থান করা, মোটরযান চালক কোন অবস্থাতেই হেল্পারকে গাড়ি চালাতে দেয়া, সড়ক বা মহাসড়কে নির্ধারিত অভিমুখ ছাড়া বিপরীত দিক থেকে গাড়ি চালানো, সড়ক বা মহাসড়কের নির্ধারিত স্থান ছাড়া অন্য কোন স্থানে বা রং সাইডে মোটরযান থামিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে তিন মাস কারাদ- বা ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা হবে। একই সঙ্গে মোটরসাইকেলে চালক ছাড়া একজনের বেশি যাত্রী বহন, মোটরসাইকেলের চালক ও যাত্রীর হেলমেট ব্যবহার না করা, চলন্ত অবস্থায় চালক বা কন্ডাক্টার কোন যাত্রীকে গাড়িতে উঠাতে বা নামাতে পারবেন না, প্রতিবন্ধীদের জন্য অনুকূল সুযোগ সুবিধা না রাখা, ঝুঁকিপূর্ণভাবে গাড়িতে কোন যাত্রী বা পণ্য বহন করা যাবে না, কোন সড়ক বা মহাসড়কে গাড়ি মেরামতের জন্য যন্ত্রাংশ ও মালামাল রেখে যানবাহন বা পথচারী চলাচলে বাধা সৃষ্টি করলেও একই শাস্তি পেতে হবে। অনিয়মে পয়েন্ট কাটা যাবে চালকদের ॥ শফিউল আলম বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশে গাড়ি চালকদের অপরাধের জন্য পয়েন্ট কাটার ব্যবস্থা আছে। নতুন আইনেও সেই পদ্ধতিটি প্রস্তাব করা হয়েছে। তিনি বলেন, ড্রাইভিং সংক্রান্ত বিধি-বিধান অমান্য করলে আস্তে আস্তে চালকদের পয়েন্ট কমতে থাকবে। ১২টি পয়েন্ট দেয়া থাকবে, দোষের কারণে পয়েন্ট কর্তন হতে থাকবে। কোন অপরাধ করলে কত পয়েন্ট কাটা যাবে তাও আইনে বলা হয়েছে। পয়েন্ট জিরো হয়ে গেলে তার আর লাইসেন্স থাকবে না। পাবলিক বাসগুলোতে প্রায়ই দেখা যায়, মহিলাদের জন্য নির্ধারিত আসনগুলো পুরুষদের দখলে থাকে। খসড়া আইনে সাধারণ নির্দেশাবলী নামে একটি ধারা যুক্ত করা হয়েছে জানিয়ে শফিউল আলম বলেন, এখানে ১৪টি অনিয়মের জন্য সর্বোচ্চ ৩ মাস কারাদ- বা সর্বোচ্চ ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয়দ-ের বিধান রাখা হয়েছে। ১১টি অনুশাসন না মানলে সর্বোচ্চ এক মাসের কারাদ- বা ৫ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয়দ- পেতে হবে। মহিলা, শিশু, বয়োজ্যেষ্ঠ ও প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষিত আসনে অন্য কোন যাত্রী বসলে বা বসার অনুমতি দিলে সর্বোচ্চ এক মাসের জেল বা ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। সিট বেল্ট না বাঁধালেও একই শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। শফিউল আলম বলেন, মদপান বা নেশাদ্রব্য পান করে গাড়ি চালানো, মদপান বা নেশাদ্রব্য পান করে মোটর শ্রমিকদের গাড়িতে অবস্থান করা, মোটরযান চালক কোন অবস্থাতেই হেল্পারকে গাড়ি চালাতে দেয়া, সড়ক বা মহাসড়কে নির্ধারিত অভিমুখ ছাড়া বিপরীত দিক থেকে গাড়ি চালানো, সড়ক বা মহাসড়কের নির্ধারিত স্থান ছাড়া অন্য কোন স্থানে বা রং সাইডে মোটরযান থামিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে তিন মাস কারাদ- বা ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা হবে। একই সঙ্গে মোটরসাইকেলে চালক ছাড়া একজনের বেশি যাত্রী বহন, মোটরসাইকেলের চালক ও যাত্রীর হেলমেট ব্যবহার না করা, চলন্ত অবস্থায় চালক বা কন্ডাক্টার কোন যাত্রীকে গাড়িতে উঠাতে বা নামাতে পারবেন না, প্রতিবন্ধীদের জন্য অনুকূল সুযোগ সুবিধা না রাখা, ঝুঁকিপূর্ণভাবে গাড়িতে কোন যাত্রী বা পণ্য বহন করা যাবে না, কোন সড়ক বা মহাসড়কে গাড়ি মেরামতের জন্য যন্ত্রাংশ ও মালামাল রেখে যানবাহন বা পথচারী চালাচলে বাধা সৃষ্টি করলেও একই শাস্তি পেতে হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, উচ্চতর আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে সামরিক শাসনামলে জারিকৃত সকল অধ্যাদেশ আইনে পরিণত করার ইতোপূর্বেকার মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বর্তমান অধ্যাদেশসমূহ বাংলায় অনুবাদ করে ‘বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট আইন-২০১৭’ এর খসড়াও মন্ত্রিসভা অনুমোদন করেছে। ‘দ্য ফিশারিজ রিসার্চ ইনস্টিটিউট অর্ডিনেন্স ১৯৮৪’ বাংলায় অনুবাদ করে এবং এর সঙ্গে ৪টি নতুন ধারা যুক্ত করে নতুন আইন প্রণীত হচ্ছে। তিনি বলেন, বিদ্যমান অধ্যাদেশে সংযুক্ত নতুন ৪টি অধ্যায় হচ্ছে ৮, ২১, ২২ ও ২৩। বর্তমান অধ্যাদেশের বোর্ড অব গবর্ন্সেসের কার্যক্রম সংজ্ঞায়িত হয়নি। ‘কিন্তু বোর্ডের কার্যক্রম সংজ্ঞায়িত করে প্রস্তাবিত আইনে ধারা ৮ সংযুক্ত করা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনের সংযুক্ত ধারা ২১ অনুযায়ী ব্যক্তিপর্যায়ে অথবা কোন সংস্থায় পরামর্শ সেবা দিয়ে ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানিরা বোর্ড নির্ধারিত হারে ফি নিতে পারবেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, যে সব বিজ্ঞানী বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, মৎস্য শিল্প স্থাপন ও অনুসন্ধান কাজে পরামর্শ সেবা দেবেন তারা ফি’র ৩০ শতাংশ নিতে পারবেন এবং বাকি ৭০ শতাংশ ওই ইনস্টিটিউটকে প্রদান করবেন। বিদ্যমান আইনে কিছু নতুন পরিবর্তন এনে মন্ত্রিসভা নীতিগতভাবে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট (সংশোধন) ২০১৭’ এর খসড়াও অনুমোদন দিয়েছে। এই ইনস্টিটিউটের প্রধানের পদ হচ্ছে মহাপরিচালক, আর ইউনেক্সের প্রধানও মহাপরিচালক। কিন্তু ইউনেক্সের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী অথবা অনুমোদনের শর্ত মোতাবেক এই ইনস্টিটিউটের প্রধানের পদ হবে পরিচালক। বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই সংশোধনী আনা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মহাপরিচালক’ শব্দের বদলে ‘পরিচালক’ শব্দটি সংযোজিত হবে। ইউনেক্সের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ইনস্টিটিউটের ২২ সদস্যের গবর্নিং বডির স্থলে হবে ৬ সদস্যের গবর্নিং বডি। তাছাড়া ইনস্টিটিউটের দৈনন্দিন কার্যক্রম দেখভালের জন্য বড় আকারের একটা নির্বাহী কমিটি গঠন করা হবে।
×