ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আতিয়া মহলে নারীসহ ৪ জঙ্গির লাশ মিলেছে : সেনাবাহিনী

প্রকাশিত: ০৩:০৮, ২৭ মার্চ ২০১৭

আতিয়া মহলে নারীসহ ৪ জঙ্গির লাশ মিলেছে : সেনাবাহিনী

জনকণ্ঠ রিপোর্ট ॥ তিন দিনের অভিযানে সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় জঙ্গি আস্তানার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সেনাবাহিনীর কমান্ডো দল; সেখানে চারটি লাশ পাওয়ার কথা জানিয়েছে তারা। একই সাথে এও জানিয়েছেন, ওই বাড়িতে ব্যাপক বিস্ফোরক মজুদ রয়েছে তাই অভিযান এখনও শেষ হয়নি। সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় এক জঙ্গি আস্তানা ঘিরে চলা অভিযানের চতুর্থ দিন সোমবার সন্ধ্যায় ব্রিফিংয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়। ‘আতিয়া মহল’ নামে পাঁচ তলা ওই ভবনের কাছে পাঠানপাড়া মসজিদের কাছে সোমবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে অপারেশন টোয়াইলাইটের সর্বশেষ অবস্থা জানান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ ফখরুল আহসান। তিনি বলেছেন, তারা যে চারটি লাশ পেয়েছেন, তার মধ্যেও তিনজন পুরুষ ও একজন নারী। ভেতরে অবস্থানরত সম্ভাব্য সব জঙ্গি নিহত হলেও তারা বাড়িটিতে ব্যাপক বিস্ফোরক মজুদ করে রেখেছিল জানান ব্রিগেডিয়ার ফখরুল। তিনি আরো বলেন, অভিযান এখনও শেষ হয়নি। পুলিশ ও র্যা ব ঘিরে রাখার একদিন পর শনিবার সকালে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নের অভিযান শুরুর পর ব্রিগেডিয়ার ফখরুলই প্রতিদিন নিয়মিত সাংবাদিকদের ব্রিফ করে আসছেন। সোমবার সাংবাদিকদের সামনে উপস্থিত হয়েই তিনি অভিযান প্রায় শেষ হওয়ার ইঙ্গিত দেন। তিনি বলেন, দুঃসাহসিক অভিযানের জন্য আমরা সকলেই গর্বিত। আপনারও গর্ববোধ করতে পারেন। দেশবাসীর দোয়ায় এখন পর্যন্ত কোনো ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই খুব সুন্দর, সফলভাবে অভিযানটা চলেছে। পাঁচ তলা ওই ভবনের নিচ তলায় চারটি লাশ পাওয়ার কথা জানিয়ে এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, পুলিশের যে গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছিলাম, মোটামুটি তথ্য ছিল যে এখানে চারজন জঙ্গি আছে। এটাও তথ্য ছিল যে তিনজন পুরুষ ও একজন মহিলা। যে ডেডবডি আমরা পেয়েছি তার মধ্যে তিনজন পুরুষ, একজন মহিলা। দুটি লাশ পুলিশের কাছে তুলে দেওয়া হলেও বাকি দুটি এখনও ওই বাড়ির ভেতরেই রয়েছে। ব্রিগেডিয়ার ফখরুল বলেন, বাকি দুটো ডেডবডির মধ্যে সুইসাইড ভেস্ট লাগানো আছে। যে অবস্থায় আছে, তাদেরকে ওইখান থেকে বের করাটা খুব ঝুঁকিপূর্ণ। এই ডেডবডিগুলো কীভাবে বের করব, সেজন্য আমরা পরিকল্পনা করছি। চারজনের বাইরে আর কারও থাকার সম্ভাবনা রয়েছে কি না-এই প্রশ্নে তিনি বলেন, চারজনের বিষয়ে আমরা জানতাম, চারটা ডেডবডি আমরা পেয়েছি। যতটুকু ধারণা হচ্ছে, এখানে জীবিত আর কেউ নাই। তবে কেউ হঠাৎ করে থেকেও যেতে পারে। ওই বাড়িটির নানা স্থানে বিস্ফোরক স্থাপন করে জঙ্গিরা তা দুর্গম করে তুলেছিল বলে আগের দিনই জানিয়েছিলেন ব্রিগেডিয়ার ফখরুল। সেজন্য অভিযানটি ঝুঁকিপূর্ণও বলেছিলেন তিনি। সোমবার তিনি বলেন, সার্বিক যে অবস্থাটা দেখলাম, যে একটা রুমের ভেতরে একটা ডেডবটি, তার পাশেই ছড়ানো ছিটানো আইইডি লাগানো রয়েছে। “পুরো বিল্ডিংটায় যে পরিমাণ এক্সপ্লোসিভ আছে এগুলো যদি বিস্ফোরণ হয় তাহলে এই বিল্ডিংয়ের অংশ বিশেষ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। যে অবস্থায় আছে, এটা খুব ঝুঁকিপূর্ণ এবং সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে হচ্ছে।” অভিযান শেষ হয়নি জানিয়ে ব্রিগেডিয়ার ফখরুল বলেন, এই অপারেশনে আরও হয়ত কিছু সময় লাগতে পারে। আমাদের ঊর্ধতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা বাকি কাজটুকু এগিয়ে নিয়ে যাব।
×