ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মুফতি হান্নান ছিনতাই চেষ্টায় আইএসআই কানেকশন!

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ২৫ মার্চ ২০১৭

মুফতি হান্নান ছিনতাই চেষ্টায় আইএসআই কানেকশন!

শংকর কুমার দে ॥ ফাঁসির আসামি হুজি প্রধান মুফতি হান্নানকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টার সঙ্গে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই) কানেকশন থাকার বিষয়ে তদন্ত করছে গোয়েন্দা সংস্থা। আইএসআই-ই হুজি নেতাকে বাংলাদেশের জঙ্গী তৎপরতায় সম্পৃক্ত করেছে। দেশে নতুন করে জঙ্গী সংগঠনগুলোকে সংগঠিত করে আত্মঘাতী জঙ্গী হামলা চালানোর বিষয়েও আইএসআইর সম্পৃক্ত থাকার বিষয়ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গোয়েন্দা সংস্থা সূত্র জানায়, প্রায় ২৩ বছর আগে ১৯৯৩ সালে মুফতি হান্নানকে বাংলাদেশের জঙ্গী তৎপরতায় রিক্রুট করে পাকিস্তান। ওই বছর পাকিস্তানভিত্তিক হরকাতুল জিহাদের মুজাহিদীনের (যোদ্ধা) হয়ে দেশে জঙ্গী তৎপরতায় যুক্ত হন তিনি। এর এক বছর পর তিনি ১৯৯৪ সালে হুজি-বি গঠন করে নিজে প্রধান হয়ে জঙ্গী তৎপরতা শুরু করেন। পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইর মদতেই তাকে দিয়ে তখন পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গী হরকাতুল জিহাদের মুজাহিদীনের হয়ে বাংলাদেশে জঙ্গী তৎপরতা করানো হয় বাংলাদেশে। মূলত, তখন থেকে তার মাধ্যমেই বাংলাদেশে জঙ্গী সংগঠনের প্রকাশ্যে আত্মপ্রকাশ ঘটানো হয়। গোয়েন্দা সূত্র মতে, ১৯৮৮ সালে পাকিস্তানে যান মুফতি হান্নান। করাচীর জামিয়া ইউসুফ বিন নূরিয়া মাদ্রাসায় ফিকাহশাস্ত্রে ভর্তি হন তিনি। সেখান থেকে তিনি সীমান্তবর্তী শহর খোস্তে মুজাহিদ ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ নিয়ে আফগানিস্তানে সোভিয়েত বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নেন। যুদ্ধে আহত হয়ে তিনি পেশোয়ারে কুয়েত আল-হেলাল হাসপাতালে ১০ মাস চিকিৎসা নেন। এরপর করাচীর ওই মাদ্রাসায় লেখাপড়া শেষ করেন। তারপরই মুফতি হান্নান ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশে ফিরে এসে পাকিস্তানভিত্তিক হরকাতুল মুজাহিদীনের হয়ে তৎপরতা শুরু করে এবং পরের বছর ১৯৯৪ সালে হুজি-বি গঠন করেন। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, রাজধানী থেকে গত সোমবার জেএমবির পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে রয়েছে অলিউজ্জামান ওরফে অলি, আনোয়ারুল আলম, সালেহ আহাম্মেদ শীষ, আবুল কাশেম ও মোহন ওরফে মহসিন-এই পাঁচজন। গ্রেফতারের পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে একজন মুফতি হান্নানের আত্মীয় পাওয়া গেছে, যিনি হুজির সদস্য বলে পরিচয় দিয়েছে। তাদের আবারও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। রিমান্ড পাওয়া গেলে জিজ্ঞাসাবাদে এই বিষয়ে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলবে বলে আশা করছেন তদন্তকারীরা। এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, প্রথম থেকেই ফাঁসির দ-প্রাপ্ত হুজি প্রধান মুফতি হান্নানের ছিনতাইয়ের চেষ্টা চক্রান্তের পেছনে দেশী-বিদেশী যোগসাজশের গোয়েন্দা সংস্থা। জঙ্গী সদস্যদের কাছে কারাগার থেকে তাকে মুক্ত করার জন্য জিহাদের ডাক সংবলিত একটি অডিওবার্তা আল-জাজিরা টেলিভিশনে প্রচারে পাঠায় মুফতি হান্নান। হুজি-বি সঙ্গে আরেক নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিম (এবিটি) মুফতি হান্নানসহ ১৯ জঙ্গী ছিনতাই চেষ্টার সঙ্গে জড়িত। প্রিজনভ্যান থেকে জঙ্গীদের ছিনতাইয়ের ঘটনা সফল হলে আল-জাজিরা টেলিভিশনে প্রচার হতো বলে গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের দাবি।
×