ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানি হারাল ইংল্যান্ডকে

প্রকাশিত: ০৬:৩৬, ২৪ মার্চ ২০১৭

বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানি হারাল ইংল্যান্ডকে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে জয় পেয়েছে জার্মানি। বুধবার বিশ্বকাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা ১-০ গোলে হারিয়েছে শক্তিশালী ইংল্যান্ডকে। সফরকারীদের বিপক্ষে ম্যাচের জয়সূচক একমাত্র গোলটি করেছেন জার্মান অধিনায়ক লুকাস পোডলস্কি। জার্মান জাতীয় দলের জার্সি গায়ে এটিই ছিল তার ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। এর ফলে বিদায়ী ম্যাচটাকে রূপকথার গল্পের শেষের মতোই স্মরণীয় করে রাখলেন এই জার্মান তারকা। বুধবার ডর্টমুন্ডের মাঠ সিগনাল ইদুনা পার্কে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে ইংল্যান্ডকে আতিথ্য দেয় জার্মানি। ইনজুরির কারণে এই ম্যাচে ছিলেন না জার্মানির সেরা গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নিউয়ের, জেরমি বোয়াটেং, স্যামি খেদিরা, মেসুত ওজিল, মার্কো রেউস এবং মারিও গোমেজের মতো তারকারা। অন্যদিকে পূর্ণ শক্তির দল নিয়েই জার্মান সফরে আসে গ্যারেথ সাউথগেট। তাই ম্যাচের শুরু থেকেই দুর্দান্ত খেলতে থাকে ইংলিশ শিবির। প্রথমার্ধের ৩০ মিনিটে এ্যাডাম লালানার শক্তিশালী শট পোস্টে লেগে ফেরত আসে। ডেল আলির শট জার্মান গোলরক্ষক মার্ক-আন্দ্রে স্টেগান কোনরকমে রক্ষা করেন। তবে ছাড় দেয়নি স্বাগতিকরাও। যে কারণেই গোলশূন্য ড্রয়ে শেষ হয় ম্যাচের প্রথমার্ধ। দ্বিতীয়ার্ধেও নিজেদের সেরাটা দিয়ে খেলতে থাকে দুই দল। তবে প্রথমে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। ম্যাচের ৬৯ মিনিটে প্রতিপক্ষের রক্ষণ দেয়াল ভাঙতে সক্ষম হয় জোয়াকিম লোর দল। আন্দ্রে শুরলের পাস থেকে ২৫ গজ দূর থেকে ইংলিশ গোলরক্ষক জো হার্টকে পরাস্ত করেন লুকাস পোডলস্কি। সেইসঙ্গে ম্যাচের নায়কও বনে যান তিনি। শেষ পর্যন্ত এই গোলেই যে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারিত হয়। ২০০৪ সালে জার্মান জাতীয় দলে অভিষেক হয় পোডলস্কির। সেই যে শুরু এরপর আর কখনই পেছনের দিকে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। ২০০৬ বিশ্বকাপে জার্মানির জাতীয় দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব গ্রহণ করেন জোয়াকিম লো। তখন থেকেই কোন ম্যাচে অনুপস্থিত ছিলেন না পোডলস্কি। ২০১৪ সালে মাত্র দুটি ম্যাচে তার পরিবর্তে বদলি খেলোয়াড় নামিয়েছিলেন লো। আর প্রিয় সেই শিষ্যের বিদায়ী ম্যাচ। আবেগ ছুঁয়ে গেছে লোর হৃদয়কেও। তবে ম্যাচ শেষে শিষ্যদের পারফর্মেন্সে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন জোয়াকিম লো। যদিওবা তার দাবি ছন্দে ফিরতে কিছুটা সময় লেগেছে শিষ্যদের। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রথমার্ধে ইংল্যান্ড খুবই ভাল খেলেছে। যদিওবা ম্যাচে ছন্দে ফিরতে আমাদের কিছুটা সময় লেগেছে। তবে দিনশেষে বলব ম্যাচটা খুব ভাল হয়েছে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে এমন জয় সত্যিই আমাদের আনন্দিত করেছে।’ ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচেও নায়কের ভূমিকায় আবির্ভাব ঘটল লুকাস পোডলস্কির। তাও আবার দর্শনীয় এক গোল করে। ম্যাচ শেষে তাই মুগ্ধ ইংল্যান্ডের কোচ গ্যারেথ সাউথগেটও। দ্বিতীয়ার্ধে পোডলস্কির করা একমাত্র গোলের পর সাউথগেট বলেন, ‘সাধারণত ফুটবলে রূপকথা বলে কিছু নেই। কিন্তু আজ সেটাই হয়েছে তার ক্ষেত্রে। গোলের ক্ষেত্রে এটি ছিল অসাধারণ। যদিওবা তার সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারে এমন অসংখ্য গোলই রয়েছে তার। তবে এই ধরনের শটে সাধারণত গোলরক্ষকের কিছুই করার থাকে না।’ ১৯৮৭ সালে সর্বশেষ ঘরের মাঠে পুরনো প্রতিন্দ্বন্দ্বী ইংল্যান্ডকে পরাজিত করেছিল জার্মানি। দীর্ঘ সময়ের অপেক্ষার পর এই জয় জার্মান কোচ জোয়াকিম লো’য়ের জন্য দারুণ এক মধুর অভিজ্ঞতা হয়েই থাকবে। তবে স্মরণীয় ম্যাচ খেলে বিদায় নিতে পেরে পোডলস্কিও দারুণ রোমাঞ্চিত। ২০১৬ সালে ইউরোর সেমিফাইনালে ফ্রান্সের কাছে হারের পর টানা সাত ম্যাচে একটি গোলও হজম না করে জয়ের রেকর্ড গড়েছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। ২০১৪ সালে ব্রাজিল বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন হয় ব্রাজিল। বিশ্বফুটবলের শক্তিশালী দল আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে দুই যুগ অপেক্ষার অবসান ঘটায় জার্মানরা। এখন তাদের লক্ষ্য শিরোপা নিজেদের করে রাখা। সে লক্ষ্যেই রাশিয়া বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে আগামী রবিবার মাঠে নামবে জোয়াকিম লোর দল। সেই ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ আজারবাইজান। আর ইংল্যান্ড ঘরের মাঠে স্বাগত জানাবে লিথুয়ানিয়াকে।
×