ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আমরা কৃষকের লাভ দেখব, কোন দেশ বা সংস্থার এজেন্ডা নয়

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২৪ মার্চ ২০১৭

আমরা কৃষকের লাভ দেখব, কোন দেশ বা সংস্থার এজেন্ডা নয়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নতুন ৩ জাতের বিটি বেগুনের উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি), যা এখন চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায়। এছাড়া আরও দুটি বীজে জিন ঢুকানো হয়েছে, যা নিয়ে গবেষণা চলছে। শীঘ্রই এ দুটি বীজের অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হবে। এখন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির উদ্ভাবিত ৯ জাতের বিটি বেগুনের মধ্যে সীমিত আকারে ৪ জাতের চাষাবাদ হচ্ছে। দেশে বর্তমানে সাড়ে ৫ হাজার কৃষক বিটি বেগুন চাষের সঙ্গে সম্পৃক্ত। বিটি বেগুনের জাতসমূহ হাইব্রিড না হওয়ায় নিজেদের বীজ কৃষক নিজেরাই উৎপাদন ও সংরক্ষণ করতে পারছে। ফলে উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় চাষাবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত কৃষকের আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বিটি বেগুন বাজারজাতকরণে কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়ে গেছে। তা কাটিয়ে উঠতে পুরোদমে কাজ চলছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে বিটি বেগুনের গবেষণা অগ্রগতি শীর্ষক দিনব্যাপী এক কর্মশালায় বক্তাদের আলোচনায় এসব কথা উঠে আসে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এই কর্মশালার আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি বলেন, বর্তমান সরকার যে কোন ধরনের উদ্ভাবনী বা প্রযুক্তি গ্রহণ করতে প্রস্তুত, যদি তা জনগণের জন্য ক্ষতিকর না হয়। আমরা কৃষকের লাভ দেখব, কোন দেশ বা সংস্থার এজেন্ডা নয়। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে জিএমও প্রযুক্তির প্রসার ঘটে। আমরা বায়োটেকনোলজিরও প্রসার ঘটাতে চাই। তিনি আরও বলেন, ১৯৯৬ সালে আমরা হাইব্রিডের ব্যবহার শুরু করি। ফলে দেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। পুরো দেশ সবজিতে সয়লাব। আর হাইব্রিড বীজ ব্যবহারের কারণেই দেশে উৎপাদন বেড়েছে। এটা শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই সম্ভব হয়েছে। কারণ সিদ্ধান্তটা নিতে হয়েছে আমাদের। বিটি বেগুন নিয়ে সমালোচনার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশে বিটি বেগুন নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে। কিন্তু আমাদের বিজ্ঞানীরা দীর্ঘ সময় নিয়ে নিরলস পরিশ্রম করেছেন। তারপর আমরা এটা অনুমোদন দিয়েছি। বিটি বেগুন এখন কৃষকের মাঠে। সাড়ে ৫ হাজার কৃষকের ক্ষেতে এখন বিটি বেগুন উৎপাদন হচ্ছে। তারা ফলন কাজে অংশ নিচ্ছেন। যে কোন উদ্ভাবনী বা প্রযুক্তি মানুষের উন্নয়নের জন্য। বিটি বেগুনের জাতের উদ্ভাবনও মানুষের উন্নয়নের লক্ষ্যেই। যার সফলতা এখন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. আবুল কালাম আযাদ বলেন, বিটি বেগুন নিয়ে গবেষণা এগিয়ে চলছে। নতুন ৩টি জাতের জন্য আবেদন করা হয়েছে। জাতগুলো দ্রুতই অনুমোদন পাবে বলে আশা করি। তিনি আরও বলেন, বিটি বেগুন নিরাপদ সবজি। তবে এটি বাজারজাতকরণে কিছু সমস্যা রয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক মহাপরিচালক রফিকুল ইসলাম ম-ল বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত ৯টি বিটি বেগুনের জাত উদ্ভাবন করেছি। নতুন ৩ জাতের জন্য আবাদ করা হয়েছে। আরও দুটি জাত রিলিজের অপেক্ষায়। বেগুনের জাতগুলো দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পরিচয় করিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছি। আমরা বিটি বেগুনকে জনপ্রিয় করতে তুলতে চাই। কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মোহাম্মদ নাজমুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেনÑ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মোঃ মনজুরুল হান্নান, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক মোঃ রইছউল আলম ম-ল, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ জালাল উদ্দীন এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসতিয়াক আহমেদ। কারিগরি সেশনে সভাপতিত্ব করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব আনোয়ার ফারুক।
×