ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বেনজির আবরার

ইউরোপ-আমেরিকায় ট্যুরে চিরসবুজ মেটালিকা

প্রকাশিত: ০৬:১৬, ২৩ মার্চ ২০১৭

ইউরোপ-আমেরিকায় ট্যুরে চিরসবুজ মেটালিকা

হেভি মেটাল গানের ভক্ত অথচ মেটালিকার গান শোনেননি এমন লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন! আশির দশক থেকে শুরু করে আজ অবধি মেটালিকার বিচরণ চলছে সফলভাবেই। হেভি মেটাল, থ্র্যাশ মেটাল এবং হার্ড রক গান গেয়ে ব্যান্ড সঙ্গীতকে অন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেছে মার্কিন হেভি মেটাল ব্যান্ড মেটালিকা। মেটালিকার ‘মাস্টার অফ পাপেট’ এ্যালবামটি পৃথিবীজুড়ে বলা হয়ে থাকে সবচেয়ে প্রভাবশালী থ্র্যাশ মেটাল এ্যালবাম। দীর্ঘ সময় ধরে জনপ্রিয়তা ধরে রাখা ব্যান্ড দলটির রয়েছে চড়াই-উৎরাইয়ের নানা গল্প। সম্প্রতি টিম মেটালিকা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাদের এ্যালবাম ‘হার্ড-উইয়ার্ড-টু সেল্ফ ডিসরাক্ট’ নিয়ে বিশ্বভ্রমণের। এমন সিদ্ধান্তের ফলে তারা আলোচনায় এসেছে আরেকবার। ব্যান্ডটির অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের দেয়া তথ্যানুসারে এ বছর এবং আগামী বছরকে তারা ওয়ার্ল্ড ট্যুরের জন্য বেঁছে নিয়েছে। বিশ্বভ্রমণের পথটি সেপ্টেম্বরে শুরু হয়ে চলবে ২০১৮এর মে পর্যন্ত। ইতোমধ্যে অনেক জায়গাতেই টিকেট বিক্রি প্রায় শেষের পথে। তাদের চির সবুজতার গল্প ছিল এমন।... ড্রামার লারস উলরিস লস এ্যাঞ্জেলেসের স্থানীয় একটি পত্রিকা দ্য রিসাইক্লারে একজন গিটারিস্ট চেয়ে বিজ্ঞাপন দেন। বিজ্ঞাপন দেখে গিটারিস্ট জেমস হেটফিল্ড যোগাযোগ করেন উলরিসের সঙ্গে। সবকিছু দেখে-শুনে হেটফিল্ডকে কাজ করার আহ্বান জানান উলরিস। তারা দুজন মিলে ‘মেটাল ম্যাসাকার’ শিরোনামের একটি এ্যালবামে একসঙ্গে কাজ করেন। একসঙ্গে কাজ করতে করতে উলরিস ও হেটফিল্ড বন্ধু বনে যান। এর ঠিক ৫ মাস পর ১৯৮১ সালের অক্টোবরে ক্যালিফোর্নিয়ার লস এ্যাঞ্জেলেসে মেটালিকা ব্যান্ডের জন্ম হয়। এর আগে উলরিস তার বন্ধু রন কুইনটানার কাছে ব্যান্ডের জন্য কয়েকটি নাম চেয়ে পাঠান। রন ‘মেটালম্যানিয়া’ ও ‘মেটালিকা’- এদুটি নাম উলরিসের কাছে পাঠান। তিনি ‘মেটালিকা’ নামটিকেই বেছে নেন। এভাবেই শুরু“হয় মেটালিকার যাত্রা যা আজ অবধি তৃষ্ণা মেটাচ্ছে মেটাল গানের অগণিত ভক্তের। মেটালিকার জন্মের কয়েকদিন পর এতে যোগ দেন ডেভ মাস্টেইন। ডেভের অতীত অভিজ্ঞতা এবং মূল্যবান গিটার সামগ্রী দেখে উলরিস ও হেটফিল্ড দুজনই তাকে ব্যান্ডে নেয়ার ব্যাপারে একমত হন। এরপর তাদের ব্যান্ডে যোগ দেন বেজ গিটারিস্ট রন ম্যাকগভনি। ১৯৮২ সালের ১৪ মার্চ ক্যালিফোর্নিয়ার রেডিও সিটিতে প্রথম লাইভ শো করে মেটালিকা। ১৯৮৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর সুইডেনে বাস দুর্ঘটনায় ক্লিফ বার্টনের আকস্মিক মৃত্যু হলে তার স্থলাভিষিক্ত হন জেসন নিউস্টেড। কিন্তু জেসনের আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে ২০০৩ সালে ব্যান্ড মেম্বাররা বেজ গিটারিস্ট হিসেবে রবার্ট ট্রুজিলো’কে তার স্থলাভিষিক্ত করেন। ‘মেটালিকা’র প্রথম এ্যালবাম ‘কিল দেম অল’ প্রকাশিত হয় ১৯৮৩ সালে। এরপর একের পর এক এ্যালবাম ঝড় তুলেছে নিয়মিত বিশ্বজুড়ে। ২০০৫ সালে তাদের ‘সাম কাইন্ড অফ মনস্টার’ এ্যালবামটি প্রকাশিত হয়। ১৯৮৩ সালে প্রকাশিত ‘কিল দেম অল’ এ্যালবামটি সেভাবে বাণিজ্যিক সাফল্য না পেলেও, বিল বোর্ডের ২০০ এ্যালবামের ভেতর জায়গা করে নেয়। পরবর্তী এ্যালবাম ‘রাইড দ্যলাইটেনিং’ বিল বোর্ডের শীর্ষ একশোতে পৌঁছে যায়। এরই মধ্যে মেটালিকা তরুণ প্রজন্মের মন কেড়ে নেয়। ব্যান্ডটির তৃতীয় স্টুডিও এ্যালবাম ‘মাস্টার অফ পাপেটস’ বিল বোর্র্ডের শীর্ষ ত্রিশে জায়গা করে নেয় এবং টানা ৭২ সপ্তাহ টপচার্টে অবস্থান করে রেকর্ড গড়ে। ১৯৯১ সালে প্রকাশিত ‘ব্ল্যাক’ এ্যালবামটি শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই দেড় কোটি কপি বিক্রি হয়। এটি সর্বকালের সেরা ব্যবসা সফল ২৫টি এ্যালবামের একটিতে পরিণত হয়। ২০০৯ সালে এসে এই এ্যালবামটিই আগের সব রেকর্ড ভেঙ্গে সর্বকালের সেরা ব্যবসা সফল এ্যালবামে পরিণত হয়। অবাক করা তথ্য আজ পর্যন্ত মেটালিকা’র সব এ্যালবাম ১০ কোটির বেশি বিক্রি হয়েছে! মাঝে ৬ বছরের বেশি সময়ে তারা প্রকাশ করেনি কোন এ্যালবাম। ওয়ার্ল্ড ট্যুরে মেটালিকা যাচ্ছে খবরটি চাউর হবার পর থেকে ইউরোপ-আমেরিকা কেন্দ্রিক ভক্তদের মাঝে বিপুল উৎসাহ দেখা যাচ্ছে, সবচেয়ে অবাক করা যে বিষয়টি শোবিজ মিডিয়ার আলোচনার বিষয়বস্তুতে পরিণত সেটা হচ্ছে মেটালিকা ব্যান্ড সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যেভাবে দর্শকপ্রিয়তা ধরে রেখেছে। তা সত্যিই বিস্ময়কর।
×