ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রাজিব হোসেন

মুক্তিযুদ্ধ ও আজকের প্রজন্ম

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ২৩ মার্চ ২০১৭

মুক্তিযুদ্ধ ও আজকের প্রজন্ম

শৃঙ্খল থেকে মুক্তি ‘স্বাধীনতা’ সে তো লাখো শহীদের তাজা রক্তে ভেজা সংগ্রামের অপর নাম। ‘স্বাধীনতা’ সে তো স্বজনহারা বেদনার অপর নাম। ‘স্বাধীনতা’ সে তো সবুজ বাংলার সকালে রক্তির লাল সূর্যের হাসি। ‘স্বাধীনতা’ মানে পরাধীনতার শোষণ ও শৃঙ্খল থেকে মুক্তি। ‘স্বাধীনতা’ মানে স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার স্বপ্নচাবি। ব্রিটিশ শাসন অবসানের পর নিরীহ বাঙালীর ওপর পাকিস্তানের সামরিক সরকারের অন্যায় অত্যাচারের মাত্রা যখন দিন দিন বাড়তে থাকে তখন এদেশের প্রতিবাদী ও সাহসী নেতা শেখ মুজিবুর রহমান তাদের বিরুদ্ধে শক্তহাতে রুখে দাঁড়ায়। এজন্য তাঁকে বহুবার কারাগারে বন্দীও থাকতে হয়েছে। বাঙালী জাতি শেখ মুজিবুর রহমানকে তাঁর দূরদর্শী ও সাহসিক নেতৃত্বের জন্য বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করেন। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ও জ¦ালাময়ী ভাষণে সাঁড়া দিয়ে বাঙালীরা দীর্ঘ নয় মাস মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে ছিনিয়ে আনে পবিত্র স্বাধীনতা। সেই সঙ্গে ১৯৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে হারিয়ে যাওয়া এদেশের স্বাধীনতা আবার ফিরে পায় ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে। আজ আমরা পৃথিবীর বুকে গর্বিত এক বাঙালী জাতি। স্বাধীনতার দীর্ঘদিন পরও আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সম্পর্কে সঠিকভাবে সকল ইতিহাস সংরক্ষণ করা হয়নি। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার সঠিক সকল ইতিহাস দেশের আনাচে-কানাচে তথা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে সংরক্ষণ করতে না পারলে কালের বিবর্তনে এসব অমূল্য ইতিহাস হারিয়ে যাবে। ভবিষ্যতে স্বাধীনতার বিপক্ষে অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি দেশ ও মানুষগুলো স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলবে? তাই এখনও সময় আছে এ বিষয়ে (মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা) সঠিক ইতিহাস সংরক্ষণ করার। দেশ ও জাতি শুধু মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে স্বাধীনতা অর্জন করলেই তার বা তাদের সব দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী স্বাধীনতাকে রক্ষা করা প্রত্যেকটি নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য। স্বাধীনতাকে ভূলুণ্ঠিত করতে মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি অথবা অন্য কোন বৈদেশিক ষড়যন্ত্র এদেশের মাটিকে বা এদেশের গণতন্ত্রকে বার বার আঘাত হানতে পারে। এসব শক্তি ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের সকল নাগরিককে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শক্তহাতে ও দূরদৃষ্টি-বিচক্ষণতার সঙ্গে দমন করতে হবে। স্বাধীনতার ঘটনা সম্পর্কে সঠিক ও সত্য ইতিহাস পাঠ্যপুস্তকে লিপিবদ্ধ করে স্কুল ও বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের জ্ঞানার্জনের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম মিডিয়াতে স্বাধীনতার স্বপক্ষে প্রামাণ্যচিত্র ও ঘটনাবলি তুলে ধরে বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মকে জাগরিত করে তুলতে হবে- যাতে ভবিষ্যত প্রজন্ম কখনই স্বাধীনতার বিপক্ষে কথা না বলে। তবেই সংরক্ষিত হবে স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব। আলাদাতপুর, নড়াইল থেকে
×