ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

‘বঙ্গবন্ধু মানে স্বাধীনতা’ শীর্ষক আলোকচিত্র ও শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রদর্শনী ॥ চলবে ২৪-২৬ মার্চ

নাজিমুদ্দীন রোডে পুরনো কারা ফটক ফের উন্মুক্ত হচ্ছে ২৫ মার্চ

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ২১ মার্চ ২০১৭

নাজিমুদ্দীন রোডে পুরনো কারা ফটক ফের উন্মুক্ত হচ্ছে ২৫ মার্চ

মশিউর রহমান খান ॥ স্বাধীনতার মাসে বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে এবং পুরনো ও অদেখা অনেক স্মৃতি জাতির সামনে তুলে ধরতে দ্বিতীয়বারের মতো পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দীন রোডের পুরনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ফটক জনসাধারণের জন্য খুলে দিচ্ছে কারা অধিদফতর। কারা অধিদফতর ও বেসরকারী সংস্থা জার্নির যৌথ উদ্যোগে ‘বঙ্গবন্ধু মানে স্বাধীনতা’ শীর্ষক বিশেষ দুর্লভ আলোচকচিত্র প্রদর্শনী ও শিশুদের নিয়ে চিত্রাঙ্কন প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। প্রদর্শনীতে ১৯৫২ থেকে ’৭১ সাল পর্যন্ত সাতটি ধাপে কিভাবে স্বাধীনতা এলো তা স্থিরচিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরা হবে। এজন্য আগামী ২৫ থেকে ২৭ মার্চ পর্যন্ত তিন দিন এ কারাগারটি দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে। এজন্য প্রতি দর্শনার্থীকে এক শ’ টাকা মূল্যের টিকেট কেটে প্রবেশ করতে হবে। তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ২৪ মার্চ বিকেল সাড়ে তিনটায় এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হলেও এদিন দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ রাখা হবে। কারা কর্তৃপক্ষ পরদিন ২৫ মার্চ দেশে প্রথমবারের মতো গণহত্যা দিবস পালন উপলক্ষে দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেবে। মোগল আমলে তৈরি ঐতিহাসিক এ কারাগারটির ভেতরে জাতির জনকের স্মৃতি রক্ষার্থে তৈরি বঙ্গবন্ধু কারা স্মৃতি জাদুঘর ও জাতীয় চার নেতা স্মৃতি জাদুঘরসহ প্রায় সকল সেল ও ওয়ার্ড খুলে দেয়া হবে। এ কারাগারটিতেই বঙ্গবন্ধু তার কারাজীবনের সবচেয়ে বেশি সময় কাটিয়েছেন। এবারের বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে ঐতিহাসিক এ কারাগারটিতে অন্য যুদ্ধাপরাধীর পাশাপাশি সর্বশেষ যুদ্ধাপরাধের দায়ে আদালতের রায়ে অভিযুক্ত ফাঁসির দ-প্রাপ্ত আসামি বিএনপির সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াত নেতা মুজাহিদকে একদিনে একসঙ্গে কার্যকর করা ‘ফাঁসির মঞ্চ’ দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেয়া হবে। কারা সূত্র জানায়, দর্শনার্থীদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে কারা অধিদফতর প্রথমবারের মতো গণহত্যা দিবস পালন ও স্বাধীনতার মাসের গুরুত্ব সকল শ্রেণীর মানুষের কাছে তুলে ধরতে এ বিশেষ কর্মসূচীর আয়োজন করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দুর্লভ এ আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৬৬ সালের ঐতিহাসিক ৬ দফা প্রস্তাব, ’৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান ও ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন ভূমিকা ও সাতটি ধাপে কিভাবে স্বাধীনতা এলো তার স্থিরচিত্র তুলে ধরা হবে। এছাড়া এ মাসেই বঙ্গবন্ধু জন্মগ্রহণ করায় দুই শতাধিক শিশুকে নিয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে ও বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হবে। উল্লেখ্য, গত বছরের ২ নবেম্বর পুরনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এ বিশেষ আলোকচিত্র প্রদর্শনী উপলক্ষে দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেয়া হয়। এতে প্রায় ১০ হাজার দর্শনার্থী অংশ নেয়। প্রদর্শনীর অর্জিত অর্থ কারাগারে মায়ের সঙ্গে আটক শিশুদের কল্যাণে ব্যয় করা হয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অনুষ্ঠানের সহযোগী আয়োজক বেসরকারী সংস্থা জার্নির প্রধান নির্বাহী নাজমুল হোসেন জনকণ্ঠকে বলেন, রাজধানীর পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দীন রোডের পুরনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে বাংলাদেশ জেল ও বেসরকারী সংস্থা জার্নির উদ্যোগে দ্বিতীয়বারের মতো স্থিরচিত্রে ১৯৫২ সালের পর থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত সাত ধাপে আসা মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধম্যে অর্জিত স্বাধীনতায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিশেষ অবদান জাতির সামনে তুলে ধরতে ‘বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা’ শীর্ষক এক বিশেষ আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। দ্বিতীয়বারের প্রদর্শনীটি ২৪ মার্চ উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। সভাপতিত্ব করবেন কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন। তবে ২৫ থেকে ২৭ মার্চ পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেয়া হবে। প্রদর্শনীতে প্রবেশে টিকেটের মূল্য রাখা হবে এক শ’ টাকা। নতুন প্রজন্ম ও সর্বসাধারণ এ প্রদর্শনীর মাধ্যমে স্বাধীনতায় বঙ্গবন্ধুর অবদানের ইতিহাস চিত্রের মাধ্যমে জানতে পারবেন।
×