ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মেগা প্রকল্পে অর্থায়ন;###;কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের অলস অর্থ থেকে এই তহবিল হবে;###;সড়ক, সেতু, বিদ্যুতসহ বড় বড় অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে এই তহবিল থেকে ঋণ নিয়ে;###;বাংলাদেশ ব্যাংক পাবে ঋণের সুদ;###;অর্থও দেশে থাকবে

১০ বিলিয়ন ডলারের ॥ সার্বভৌম সম্পদ তহবিল

প্রকাশিত: ০৫:১৮, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

১০ বিলিয়ন ডলারের ॥ সার্বভৌম সম্পদ তহবিল

রহিম শেখ ॥ রফতানি খাতকে সহায়তা করতে রিজার্ভের অর্থ দিয়ে রফতানি উন্নয়ন ফান্ড (ইডিএফ) গঠন করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। তারই আদলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের অলস অর্থ থেকে পাঁচ বছরে ১০ বিলিয়ন ডলার নিয়ে ‘বাংলাদেশ সার্বভৌম সম্পদ তহবিল’ গঠন করতে যাচ্ছে সরকার। এই তহবিল থেকে অর্থ নিয়ে সড়ক, সেতু, বিদ্যুতসহ বড় বড় অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে সরকার। ইতোমধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে যাওয়ার পথে সরকার অবকাঠামো খাতে নতুন করে বড় বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এরমধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম উড়াল সড়ক, চট্টগ্রাম পর্যন্ত বুলেট ট্রেন, মাওয়া সড়ক পর্যন্ত উড়াল সেতু, কক্সবাজারের মহেশখালী ও পটুয়াখালীর পায়রাতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণ, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর নিচ দিয়ে টানেল নির্মাণের মতো যমুনা নদীর নিচ দিয়েও আলাদা একটি টানেল নির্মাণ করতে চায় সরকার। এছাড়া রাজধানীর যানজট নিরসনে ঢাকায় পাতাল রেল নির্মাণে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসব মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নে রিজার্ভের কিছু অংশ থেকে ঋণ নিয়ে অর্থ যোগান দেবে সরকার। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বৈদেশিক ঋণের চাপ কমিয়ে সরকার এই তহবিল থেকে অর্থ নেবে। ফলে ঋণের সুদ বাংলাদেশ ব্যাংক পাবে। অর্থও দেশে থাকবে। বিষয়টি দেশের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এদিকে রিজার্ভের অর্থে বিনিয়োগের সুস্পষ্ট পরিকল্পনা আগামী ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে থাকবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। জানা গেছে, খাদ্য মজুদ সন্তোষজনক থাকায় বিপুল পরিমাণ ডলার অলস রাখার সমালোচনা হচ্ছে গত কয়েক বছর ধরে। তা বিনিয়োগে আনতে সুপারিশও করে আসছিলেন দেশের অর্থনীতিবিদরা। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বিভিন্ন সময়ে রিজার্ভ কাজে লাগানোর কথা বলে এলেও গত ডিসেম্বরে সাংবাদিকদের সামনে প্রথমবারের মতো তিনি সার্বভৌম সম্পদ তহবিল গঠনের পরিকল্পনা প্রকাশ করেন। এ ধরনের তহবিল গঠনের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে গঠিত কমিটি সরকারকে একটি প্রতিবেদন দেয়। এরপর তহবিলের জন্য অর্থ নিলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর কোন চাপ সৃষ্টি হবে কিনা জানতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে মতামত চেয়ে চিঠি পাঠায় অর্থ মন্ত্রণালয়। এ ধরনের তহবিল গঠনের ইতিবাচক দিকনির্দেশনা তুলে ধরে মতামত পাঠায় বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ৬ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে ‘বাংলাদেশ সার্বভৌম সম্পদ তহবিল’ গঠন প্রস্তাবের নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠকে জানানো হয়, প্রাথমিকভাবে বছরে দুই বিলিয়ন ডলার করে পাঁচ বছরে মোট ১০ বিলিয়ন ডলার ঋণ হিসেবে বড় বড় প্রকল্পে বিনিয়োগ করবে সরকার। দেশের অর্থনীতিতে উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য অবকাঠামো খাতে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে ‘সভরেন ওয়েলথ ফান্ড’ গঠনের প্র্রক্রিয়া প্রথম শুরু করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর ড. আতিউর রহমান। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, কেবল পদ্মা সেতুই দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি দশমিক ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি করবে। পদ্মা সেতুর মতো কিছু মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারলে ‘উচ্চতর প্রবৃদ্ধির ক্লাবে’ যুক্ত হতে পারবে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, অবকাঠামো খাতে বিমানবন্দর বা গভীর সমুদ্রবন্দরের মতো দু’একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারলেই দেশের প্রবৃদ্ধি সাত শতাংশের ওপর চলে যাবে। এক্ষেত্রে ‘ফার্স্ট ট্র্যাক’ প্রকল্পগুলো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে হবে। বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থায়নের কোন অভাব হবে না বলে তিনি মনে করেন। সরকারের সার্বভৌম সম্পদ তহবিল গঠন ইতিবাচক বলে মন্তব্য করে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গবর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের অনেকটাই অলস অর্থ হিসেবে পড়ে থাকে। ৪-৫ মাসের আমদানি খরচ মেটানোর অর্থ রেখে সরকার চাইলে বাকিটা উন্নয়ন কাজে খরচ করতে পারে। তিনি বলেন, রিজার্ভের অর্থ কোনভাবেই যাতে অপচয় না হয়, তা দেখেই প্রকল্প নির্বাচন করতে হবে। এ জন্য এমন প্রকল্প নির্বাচন করতে হবে যার সুশাসন সর্বোচ্চ মাত্রায় নিশ্চিত হবে, দীর্ঘমেয়াদি হবে এবং নিশ্চিতভাবেই মুনাফা আসবে। মোট কথা, তহবিলের অর্থ ফেরত পাওয়াটা যেকোনভাবেই হোক নিশ্চিত করতে হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান জনকণ্ঠকে বলেন, রিজার্ভ থেকে একটি অংশ সরিয়ে এই ‘বাংলাদেশ সার্বভৌম সম্পদ তহবিল’ গঠন করা হবে, যাতে সরকার বড় প্রকল্পে প্রয়োজনীয় অর্থ ব্যবহার করতে পারে। তিনি বলেন, এই তহবিল থেকে অর্থ নিয়ে সড়ক, সেতু, বিদ্যুতসহ বড় বড় অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে সরকার। ইতোমধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে যাওয়ার পথে সরকার অবকাঠামো খাতে নতুন করে বড় বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স ও রফতানি আয় থেকে দেশে যেসব বিদেশী মুদ্রা আসে তার একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ব্যাংকগুলো নিজের কাছে রাখতে পারে। এটাকে ব্যাংকিংয়ের ভাষায় নেট ওপেনিং পজিশন বলা হয়। নেট ওপেনিং পজিশনের অতিরিক্ত বিদেশী মুদ্রা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে জমা (সারেন্ডার) দিতে হয়। ওই সব বিদেশী মুদ্রা মূলত কিনে নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর বিপরীতে ব্যাংকগুলোকে নগদ টাকার পরিবর্তে বিভিন্ন মেয়াদের বিল দেয়া হয়। কেননা, বাজারে নগদ টাকা বেড়ে গেলে তা মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ তৈরি করতে পারে। মেয়াদ পূর্তির পর ওই বিলগুলো ভাঙিয়ে নগদ টাকা তুলে নেয় ব্যাংকগুলো। এই প্রক্রিয়াকে হিসাবায়নের পরিভাষায় ‘স্টেরিলাইজেশন’ বলা হয়। ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার কেনার পর যে বিল দেয় তার বিপরীতে যদি ৩ শতাংশ হারে সুদ দিতে হয়, বিদেশের ব্যাংকে ওই ডলার জমা রেখে বাংলাদেশ ব্যাংক ১ থেকে ১.৫ শতাংশের বেশি সুদ পায় না। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যত বেশি ডলার কিনবে তত বেশি ব্যয় বাড়বে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গবর্নর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোর উদ্দেশে সরকারের বড় বড় প্রকল্পে রিজার্ভের ক্ষুদ্র একটি অংশ বিনিয়োগ করা যেতে পারে। এতে কোন অসুবিধা নেই। তবে এ্যাকাউন্টিংয়ের সব নিয়মকানুন মেনে এই বিনিয়োগ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, রিজার্ভের একটি ক্ষুদ্র অংশ বিনিয়োগ করতে পারলে সেটা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জন্যই ভাল হবে। এদিকে আগামী বাজেটে বিদেশী মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ঋণ নিয়ে বড় প্রকল্পে বিনিয়োগের সুস্পষ্ট পরিকল্পনা থাকবে বলে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে জানান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, মধ্যম আয়ের দেশে যাওয়ার পথে সরকার অবকাঠামো খাতে নতুন করে বড় বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে। কোন ধরনের যানজট ছাড়া ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যেতে উড়াল সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এ ছাড়া ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত বুলেট ট্রেন, মাওয়া সড়ক পর্যন্ত উড়াল সেতু নির্মাণ, কক্সবাজারের মহেশখালী ও পটুয়াখালীর পায়রাতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর নিচ দিয়ে টানেল নির্মাণের মতো যমুনা নদীর নিচ দিয়েও আলাদা একটি টানেল নির্মাণের স্বপ্ন রয়েছে সেতু বিভাগের। রাজধানীর যানজট নিরসনে ঢাকায় পাতাল রেল নির্মাণে এরই মধ্যে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গঙ্গা ব্যারাজের মতো দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন জরুরী। এসব মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হবে। এ ধরনের মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নে সরকার রিজার্ভ থেকে ঋণ নিতে পারে। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক কেএএস মুরশিদ বলেন, এমন তো নয় যে সরকার এর আগে এ ধরনের ঋণ নেয়নি। সরকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে ঋণ নিচ্ছে, অন্যান্য ব্যাংক থেকেও ঋণ নিচ্ছে। সে ক্ষেত্রে রিজার্ভ থেকেও ঋণ নিতে পারে দেশের স্বার্থে। কারণ, আমদানি ব্যয় বাদে রিজার্ভে বাড়তি অর্থ আছে। তবে রিজার্ভ থেকে যাতে অনিয়ন্ত্রিত ঋণ না নেয়া হয়, সেদিকে বিশেষ নজর দেয়ার পরামর্শ দেন তিনি। বিআইডিএস মহাপরিচালক বলেন, রিজার্ভ থেকে ঋণ নিলে সেই ঋণের সুদের হার কত হবে, সেটি দেখতে হবে। তা ছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ যেন প্রাক্কলিত সময়ের মধ্যেই শেষ হয় সেদিকে নজর দিতে হবে। জানা গেছে, সরকারের প্রকল্পগুলোতে বিদেশী বিভিন্ন অর্থায়ন প্রতিষ্ঠানের দেয়া ঋণের সুদের হার এক রকম নয়। একেক প্রতিষ্ঠানের ঋণের সুদহার একেক হারের। সে ক্ষেত্রে রিজার্ভ থেকে ঋণ নিলে সরকারকে কী হারে সুদ দিতে হবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্র বলছে, উন্নয়ন সহযোগী দেশ ও সংস্থা থেকে সহজশর্তে ঋণ পাওয়ার সুযোগ দিন দিন সংকুচিত হয়ে আসছে। গত বছর জুলাইয়ে বহুজাতিক সংস্থা বিশ্বব্যাংক যখন বাংলাদেশকে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে ঘোষণা করে তখন থেকেই উন্নয়ন সহযোগীরা সুদের হার বাড়ানোর পাশাপাশি ঋণের শর্ত কঠিন করার চাপ দিয়ে আসছে সরকারকে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্র বলছে, বর্তমানে সরকার বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী দেশ ও সংস্থা থেকে ভিন্ন ভিন্ন হার সুদে ও শর্তে ঋণ নিয়ে থাকে। বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি ঋণ দেয়া সংস্থা বিশ্বব্যাংক তাদের ঋণের সার্ভিস চার্জ নেয় ০.৭৫ শতাংশ। অর্থাৎ ১০০ টাকা ঋণ নিলে সে ঋণের সুদের হার ৭৫ পয়সা। জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থার (জাইকা) ঋণের সুদের হার আরও কম ০.০১ শতাংশ। ঋণের সুদের হার সবচেয়ে বেশি ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি)। তেল আমদানি করতে সরকার এই সংস্থা থেকে ঋণ নেয়; যে ঋণের সুদের হার ৪ শতাংশের মতো। এ ছাড়া চীন সরকার থেকে যেসব প্রকল্পে ঋণ নেয়া হয়, সেই ঋণের সুদের হার ২ শতাংশ; সঙ্গে কমিটমেন্ট ফি ০.২৫ শতাংশ। তবে দেশটির বড় শর্ত হলো, যেকোন প্রকল্পে পণ্য বা উপকরণ আনতে হবে সে দেশ থেকে। তা ছাড়া ঠিকাদারও ঠিক করে দেয় দেশটি। ভারতের ঋণের সুদের হার ২ শতাংশ। দেশটি থেকেও ঋণ নিতে হলে ঠিকাদার নিয়োগ দিতে হয় সে দেশ থেকে। আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানের সুযোগ থাকে না এই দুই দেশ থেকে ঋণ নিলে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক বা এডিবির ঋণের গড় সুদের হার ২ শতাংশ। অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, এসব দেশ ও সংস্থার তুলনায় রিজার্ভ থেকে নেয়া ঋণের সুদের হার অনেক কম হবে। তা ১ শতাংশেরও কম। তবে রিজার্ভ থেকে ঋণ নিলে সেই ঋণ কিভাবে পরিশোধ করতে হবে, সে বিষয়েও গবেষণা করার কথা বলেন অর্থনীতিবিদরা। ইআরডি সূত্র বলছে, বর্তমানে সারা দেশে যেসব বড় অবকাঠামো নির্মাণের কাজ চলছে তার বেশিরভাগ অর্থায়ন চীন, জাইকা, বিশ্বব্যাংক ও এডিবির। রাশিয়ার অর্থায়নে একটি বড় প্রকল্পের কাজ চলছে। সেটি হলো রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র। মাতারবাড়ীতে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতকেন্দ্রের প্রকল্পে সুদের হার ০.০১ শতাংশ। চীনের অর্থায়নে কর্ণফুলী নদীর নিচে টানেল নির্মাণ প্রকল্পে সুদের হার ৩ শতাংশের কাছাকাছি। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্রের ঋণ সুদের হার প্রায় ৪ শতাংশ। দোহাজারী থেকে ঘুনধুম পর্যন্ত ১২৯ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণে এডিবির ঋণের সুদের হার ২ শতাংশ। এসব প্রকল্পের সঙ্গে তুলনা করলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ঋণ নিলে সেই ঋণের সুদের হার অনেক কম হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা।
×