ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে হত্যার অভিযোগ, গৃহকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ৭ অক্টোবর ২০১৬

সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে হত্যার অভিযোগ, গৃহকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সেনাবাহিনীর সাবেক এক ব্রিগেডিয়ার জেনারেলকে হত্যার অভিযোগে গৃহকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। নিহতের পরিবারের তরফ থেকে এমন অভিযোগ এনে কাফরুল থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। বৃহস্পতিবার ভোরে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলাটি দায়ের হয়। কাফরুল থানা পুলিশ জানায়, মামলাটি দায়ের করেন নিহত সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ওয়াজি আহমেদ চৌধুরীর ভাতিজা রেশাদ আহমেদ চৌধুরী। মামলার এজাহারনামীয় একমাত্র আসামি আব্দুল আহাদ। এছাড়াও অজ্ঞাত কয়েকজন রয়েছে। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ওয়াজি আহমেদ চৌধুরী (৭৬) ১৯৯২ সালে অবসরে যান। তার বাড়ি সিলেটের গোলাপগঞ্জে। নিহতের স্ত্রী আতিয়া চৌধুরী বছর ছয়েক আগে মারা যান। তাদের বড় ছেলে নাবিদ আহমেদ চৌধুরী (৪৪) প্রায় এক দশক যাবত আমেরিকায় বসবাস করছেন। ছোট ছেলে ফুয়াদ আহমেদ চৌধুরী (৪০) বাকপ্রতিবন্ধী। ছোট ছেলেকে নিয়ে ঢাকার মহাখালী ডিওএইচএসের ৪ নম্বর রোডের ১৪৮ নম্বর বাড়িতে বসবাস করছিলেন। বুধবার সন্ধ্যার পর বাইরে থেকে বাসায় ফিরে ফুয়াদ তার পিতাকে অচেতন অবস্থায় পড়ে দেখতে দেখেন। তিনি দ্রুত পিতাকে ঢাকা সেনানিবাসে অবস্থিত সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা ওয়াজি আহমেদ চৌধুরীকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে পুলিশ মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। কাফরুল থানা পুলিশ জানায়, উদ্ধারকালে লাশের গলায় কালো দাগ ছিল। বুকের বাঁ পাশ আর ডান পায়ের গোড়ালিতে আঘাতের চিহ্ন ছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ সোহেল মাহমুদ জানান, ওয়াজি আহমেদ চৌধুরীর গলায় রশি পেঁচিয়ে পা বেঁধে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে আলামত পাওয়া গেছে। নিহতের ভাতিজা মামলার বাদী রেশাদ আহমেদ চৌধুরী জানান, দুই মাস আগে তার চাচার বাসায় পরিচিত একজনের মাধ্যমে আব্দুল আহাদ (৩৫) নামে একজন কাজে যোগ দেয়। চাচা খুন হওয়ার পর থেকেই আব্দুল আহাদের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। বাসা থেকে একটি টেলিভিশন, মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ খোয়া গেছে। আর কী পরিমাণ টাকা-পয়সা খোয়া গেছে তা এখনও বোঝা যাচ্ছে না। ধারণা করা হচ্ছে, আব্দুল আহাদ চাচাকে খুন করে বাসা থেকে টাকা-পয়সা ও মূল্যবান সামগ্রী চুরি করে পালিয়ে গেছে। ওয়াজি আহমেদের ছোট ভাই এজাজ আহমেদ চৌধুরী ১৯৯৬ সালে সেনাবাহিনী থেকে মেজর জেনারেল হিসেবে অবসরে যান। তিনি সাংবাদিকদের জানান, ওয়াজি আহমেদকে সিলেটে গ্রামের বাড়িতে দাফন করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি আরও জানান, পলাতক কাজের ছেলে আব্দুল আহাদের গ্রামের বাড়িও সিলেট। একজন পরিচিত লোক আব্দুল আহাদকে তার ভাইয়ের বাসায় কাজে দিয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, আব্দুল আহাদই ভাইকে হত্যা করেছে। পুলিশের মিরপুর জোনের উপ-কমিশনার মাসুদ আহমেদ জানান, গুরুত্বের সঙ্গে মামলাটির তদন্ত চলছে। দ্রুত অপরাধীকে শনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে।
×