ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বেল নাকি রোনাল্ডো, শেষ চারে হাসবেন কে?

প্রকাশিত: ০৬:২৩, ৫ জুলাই ২০১৬

বেল নাকি রোনাল্ডো, শেষ চারে হাসবেন কে?

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বর্তমান বিশ্ব ফুটবলের সেরা দুই তারকা। স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদে খেলেন তারা। কত ম্যাচ যে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তারা জিতিয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদকে। বেলের পাসে রোনাল্ডোর গোল কিংবা রোনাল্ডোর পাসে বেলের গোল। সেই গোলের পর একে অপরের কাঁধে উঠে উদযাপন! আরও কত কী! তবে এবার সবই বুঝি মিথ্যে হওয়ার পথে। কেননা এসব শুধুই যে রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে? জাতীয় দলের জার্সিতে যে এখন তারা দুজনই পরম শত্রু। প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী। ইউরোর ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে এখন রোনাল্ডো এবং বেল একে অপরের শত্রু। ৬ জুলাই যে লিওঁতে মুখোমুখি হচ্ছে পর্তুগাল এবং ওয়েলস। প্রথমবারের মতো ইউরো খেলতে এসেই স্বপ্নের ভেলায় ভাসছে এখন বেলের ওয়েলস। অপরদিকে দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে খেলার সামনে দাঁড়িয়ে পেপে-রোনাল্ডোরা। সেমিফাইনাল জিতে শেষের হাসিটা হাসবেন কে? ভক্ত-অনুরাগীরাও এখন সেটা দেখার অপেক্ষায়। সময়ের অন্যতম দুই সেরা ফুটবল তারকা বেল-রোনাল্ডো। যে কারণে পর্তুগাল-ওয়েলস ম্যাচেও ফুটবলামোদীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে রোনাল্ডো-বেল দ্বৈরথ। বিশ্বের সবচেয়ে দামী দুই ফুটবলার। ২০০৯ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে ৮০ মিলিয়ন পাউন্ড ট্রান্সফার ফিতে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে পা দিয়েছিলেন সিআর সেভেন। সেই রেকর্ড ভেঙ্গে ২০১৩ সালে টটেনহাম হটস্পার থেকে ৮৬ মিলিয়ন পাউন্ড ট্রান্সফার ফিতে রোনাল্ডোর সতীর্থ হন বেল। তারপর থেকেই ক্লাবে রোনাল্ডো-বেলের অম্ল-মধুর সম্পর্ক নিয়ে নানা মুখরোচক খবর। এবার পরস্পরের মুখোমুখি দুই তারকা। লক্ষ্য ইউরোর ফাইনালে ওঠা। তবে দুজনের লড়াই নিয়ে বেল অবশ্য নির্ভার। তার সাফ কথাÑ ফুটবল যখন ১১ জনের সঙ্গে ১১ জনের খেলা, তখন লড়াইটা দলের সঙ্গে দলেরই। সেখানে ব্যক্তির লড়াইয়ের জায়গা নেই। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি মোটেই রোনাল্ডোর সঙ্গে লড়ছি না। ম্যাচটা হবে ওয়েলস বনাম পর্তুগাল। আমরা একটা দলের বিপক্ষে খেলব। যেখানে দলীয় সাফল্যই শেষ কথা। ব্যক্তি গৌণ। আমার পুরো মনোযোগ পর্তুগাল ম্যাচের দিকে। কোন একজন খেলোয়াড়কে নিয়ে ভাবছিই না। আমরা এ পর্যন্ত এভাবে খেলেই সেমিতে উঠেছি।’ এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘পুরো পর্তুগাল দলে শুধু রোনাল্ডো নয়, আরও অনেক ভাল খেলোয়াড় রয়েছে। গেমপ্ল্যান তাই গোটা দলের বিপক্ষে। একক কোন তারকার বিরুদ্ধে নয়। আমরা আত্মবিশ্বাসী। যে ব্র্যান্ডের ফুটবল আমরা খেলছি, তাতে ফাইনালে ওঠার স্বপ্নই দেখছি আমরা।’ ক্লাবে তো তারা দুজন সতীর্থ। তার প্রভাব কি ম্যাচে পড়বে না? এমন প্রশ্নও উড়িয়ে দিয়েছেন বেল। এ বিষয়ে ওয়েলস তারকার অভিমত হলোÑ ‘কোন সন্দেহ নেই রোনাল্ডো এ সময়ের সুপারস্টার। রিয়ালে তার পাশে সতীর্থ হিসেবেই আমি খেলি। তখন আমাদের সম্পর্ক একরকম। কিন্তু দেশের হয়ে আমরা পরস্পরের প্রতিপক্ষ। পেশাদার ফুটবলার হিসেবে আমাদের দুজনেরই দৃষ্টিভঙ্গি একইরকম। আমরা যখন দেশের প্রতিনিধিত্ব করি তখন ক্লাবের কথা মাথাতেই থাকে না; তা ক্লাবের হয়ে আমরা যত ট্রফিই জিতি না কেন।’ এবারের ইউরোতে ৩১ বছর বয়সী রোনাল্ডো এখনও তেমনভাবে জ্বলে উঠতে পারেননি। কিন্তু ২৭ বছর বয়সী ‘ওয়েলস জাদুকর’ নিজেকে প্রমাণ করে চলেছেন। দলকে যেমন টানছেন, তেমনি গোলও করে চলেছেন। এখন পর্যন্ত তিন গোল করেছেন বেল। ওদিকে রোনাল্ডো করেছেন দুটি গোল। কিন্তু সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছেÑ রিয়ালের সেই অপ্রতিরোধ্য রোনাল্ডোকে এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি ইউরোতে। যদিও তার ওপর আস্থার কোন কমতি নেই পর্তুগাল কোচের। ইউরোতে ঘরের মাঠে পর্তুগাল ২০০৪ সালে রানার্সআপ হলেও ওয়েলস প্রথমবারের মতো খেলতে এসেই ইতিহাস তৈরি করেছে। রোনাল্ডো ও বেল একবারই পরস্পরের প্রতিপক্ষ হিসেবে মুখোমুখি হয়েছিলেন ক্লাব পর্যায়ে, ২০১১-১২ মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে। সেবার রোনাল্ডোর একমাত্র গোলেই হোয়াইট হার্ট লেনে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ম্যাচে টটেনহামকে হারিয়েছিল রিয়াল। আর দুই পর্ব মিলে রিয়াল জিতেছিল ৫-০ গোলে। এবারও কি জিতবেন সিআর সেভেন, নাকি ক্লাব সতীর্থকে হারিয়ে নতুন ইতিহাস গড়বে বেলের ওয়েলস। সময়ের হাতেই এখন তার সঠিক উত্তর। সেমিফাইনালের আগে দুই দলই কঠোর অনুশীলনে এখন ব্যস্ত সময় পার করছে। ওয়েলসের গ্যারেথ বেল সোমবার আলাদাভাবে অনুশীলন করেছেন। তার সঙ্গে ছিলেন ফিটনেস কোচ। তবে বেলের চোটের শঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়েছে ওয়েলস।
×