ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

নিহতদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা, লাশ হস্তান্তর

প্রকাশিত: ১৮:৫৬, ৪ জুলাই ২০১৬

নিহতদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা, লাশ হস্তান্তর

অনলাইন রিপোর্টার॥ গুলশানে ক্যাফেতে সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের উদ্দেশ্যে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিহতদের স্মরণে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় শোকের দ্বিতীয় দিন আজ সোমবার সকাল ১০টায় ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে শ্রদ্ধা নিবেদনের এই আনুষ্ঠানিকতা হয়। প্রধানমন্ত্রী পায়ে হেঁটে শ্রদ্ধা নিবেদন মঞ্চে গিয়ে ফুল দেন এবং কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। তার আগে ভুটান সফরে থাকা রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। শ্রদ্ধা নিবেদনের পর প্রধানমন্ত্রী আর্মি স্টেডিয়ামে উপস্থিত নিহতদের স্বজনদের সামনে দিয়ে হেঁটে যান এবং তাদের সমবেদনা জানান। মন্ত্রিসভার সদস্য, তিন বাহিনীর প্রধান এবং উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তারাও এ সময় উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর একে একে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ভারতের রাষ্ট্রদূত, ইতালির রাষ্ট্রদূত, জাপানের রাষ্ট্রদূত, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত, নিহত বাংলাদেশি নাগরিকদের পরিবারবর্গ, নিহত দুই পুলিশ কর্মকর্তার পরিবারবর্গ, আওয়ামী লীগ, ১৪ দল, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি ও বিশিষ্টজনেরা। উপস্থিত ছিলেন তিন বাহিনীর প্রধান, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের মেয়রসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। এরপর স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী।মৃতদেহ ময়নাতদন্তের পর গতকাল রবিবারই হস্তান্তর করা হবে—এই আশায় স্বজনেরা সকাল থেকেই সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) অপেক্ষা করতে শুরু করেন। পরে সিএমএইচ থেকে তাঁদের আজ সকাল ১০টায় আর্মি স্টেডিয়ামে আসতে অনুরোধ জানানো হয়। জানানো হয় সেখানেই লাশ হস্তান্তর করা হবে। বেলা ১২টা পর্যন্ত এই শ্রদ্ধা অনুষ্ঠানে সর্বস্থরের জনগণও অংশ নিতে পারবেন। গত শুক্রবার রাতে গুলশান ২ নম্বরের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালায় একদল অস্ত্রধারী জঙ্গি; দেশি বিদেশি অন্তত ৩৩ জন সেখানে জিম্মি হন। প্রায় ১২ ঘণ্টা পর কমান্ডো অভিযান চালিয়ে ওই রেস্তোরাঁর নিয়ন্ত্রণ নেয় সশস্ত্রবাহিনী। ১৩ জন জিম্মিকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও ২০ জনের লাশ পাওয়া যায় জবাই করা অবস্থায়। নিহতদের মধ্যে নয়জন ইতালির, সাতজন জাপানি ও একজন ভারতের নাগরিক। বাকি তিনজন বাংলাদেশি, যাদের মধ্যে একজনের যুক্তরাষ্ট্রেরও নাগরিকত্ব ছিল। নিহত যারা ইতালির নয়জন: নাদিয়া বেনেদিত্তো, ভিনসেনজো দ আলেস্ত্রো,ক্লদিও মারিয়া দান্তোনা, সিমোনা মন্টি, মারিয়া রিবোলি, আডেলে পুগলিসি, ক্লদিও চাপেলি, ক্রিস্টিয়ান রোসিস ও মারকো তোনডাট। সাত জাপানি: তানাকা হিরোশি, ওগাসাওয়ারা, শাকাই ইউকু, কুরুসাকি নুবুহিরি, ওকামুরা মাকাতো, শিমুধুইরা রুই ও হাশিমাতো হিদেইকো। একজন ভারতীয়: তারিশি জৈন। তিন বাংলাদেশি: ইশরাত আখন্দ, অবিন্তা কবীর ও ফারাজ হোসেন। নিহত সাত জাপানির মধ্যে ছয়জন মেট্রোরেল প্রকল্পের সমীক্ষা কাজে নিয়োজিত ছিলেন। তাদের সঙ্গে ওই ক্যাফেতে ছিলেন আরও একজন, যাকে পরে উদ্ধার করা হয়। এর আগে রাতে রেস্তোরাঁয় হামলার পরপরই সেখানে আটকেপড়াদের উদ্ধারে গিয়ে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার ওসি সালাউদ্দীন হামলাকারীদের বোমার স্প্লিন্টারে নিহত হন। শনিবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের উপর আস্থা রাখুন। ৩০ লাখ শহীদ এবং দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব আমরা যে কোনো মূল্যে রক্ষা করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।” দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র ঠেকাতে জনগণকে সক্রিয় হওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
×