ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আনন্দঘন ঈদ প্রত্যাশা

নতুন সাজে পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্র, উৎসবের হাতছানি

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ৪ জুলাই ২০১৬

নতুন সাজে পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্র, উৎসবের হাতছানি

মোরসালিন মিজান ॥ ঈদের প্রস্তুতি মোটামুটি সম্পন হয়েছে। এখন যে যার মতো করে পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন। ফাঁকা ঢাকায় ঘুরে বেড়ানোর সুযোগটা এবারও কাজে লাগাবে রাজধানীবাসী। পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ভিড় করবেন প্রতিবারের মতোই। শিশুপার্ক চিড়িয়াখানা জাদুঘর দর্শনার্থীদের স্বাগত জানানোর অপেক্ষায় এখন। ঢাকা থেকে দূরে হলেও, প্রধান প্রধান থিমপার্কগুলো ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। এসব থিমপার্কে আনন্দঘন সময় কাটাবেন শহুরে মানুষ। সব বয়সী মানুষের উপস্থিতিতে উৎসবমুখর হয়ে উঠবে বিনোদন কেন্দ্রগুলা। ঢাকা শিশুপার্ক ॥ শাহবাগে অবস্থিত শিশুপার্কটি অনেক পুরনো। বহুকালের চেনা জানা। শহরের প্রাণকেন্দ্রে হওয়ায় এই ঈদেও ছোট্ট সোনামণিদের আনন্দঘন সময় কাটবে এখানে। সেভাবেই প্রস্তুতি নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বাকি কাজও এগিয়ে চলেছে। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদ উপলক্ষে সবগুলো রাইড পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। যেখানে সমস্যা, ঠিক করা হয়েছে। রং নষ্ট হয়ে যাওয়া কোন কোন রাইডে নতুন রং করা হয়েছে। ব্যবস্থা করা হবে বাড়তি আলোকসজ্জার। এর পাশাপাশি পার্কের পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। পার্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান, শিশুপার্কে বর্তমানে ১০টি রাইড রয়েছে। ঈদের প্রথম চার দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে পার্ক। প্রবেশমূল্য ১৫ টাকা। প্রতিটি রাইড চড়ার জন্য দিতে হবে ১০ টাকা করে। তবে ঈদে সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা এখানে বিনা টিকেটে প্রবেশ করতে পারবে। বিভিন্ন রাইড উপভোগ করতে পারবে। এখন অনেক আধুনিক বিনোদন কেন্দ্র হলেও শিশুপার্কের দর্শনার্থী কমেনি জানিয়ে তিনি বলেন, ঈদে প্রতিদিন গড়ে ৫০ হাজার দর্শনার্থী আসেন। চিড়িয়াখানা ॥ ঈদের ছুটিতে বহু মানুষ চিড়িয়াখানা ঘুরে বেড়ান। পরিবার পরিজন নিয়ে আনন্দঘন সময় কাটান। এবারও ব্যতিক্রম হবে না। প্রতিদিনের মতোই সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকবে চিড়িয়াখানা। প্রবেশমূল্য ২০ টাকা। চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডাঃ এনায়েত হোসেন জানান, ঈদের ছুটিতে প্রতিদিন ৮০ থেকে ১ লাখ দর্শনার্থী চিড়িয়াখানা পরিদর্শন করেন। তাঁদের সব ধরনের সেবা নিশ্চিত করতে কাজ করছে কয়েকটি কমিটি। চিড়িয়াখানার অভ্যন্তরীণ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের পাশাপাশি থাকবে র‌্যাবের টহল। জাতীয় জাদুঘর ॥ ঈদ উপলক্ষে প্রস্তুত জাতীয় জাদুঘর। প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী জানান, এবার ঈদের দিন খোলা না থাকলেও, পরদিন বেলা ১১টা থেকে খোলা থাকবে জাদুঘর। অন্য দিনগুলোতে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত গ্যালারি ঘুরে দেখা যাবে। ঈদে শিশু কিশোর ও প্রতিবন্ধীদের জন্য বিনা টিকেটে জাদুঘর পরিদর্শনের সুযোগ থাকবে বলেও জানান তিনি। ফ্যান্টাসি কিংডম ॥ থিমপার্কগুলোর মধ্যে বিশেষ জনপ্রিয় ফ্যান্টাসি কিংডম। ঢাকার অদূরে আশুলিয়ায় গড়ে উঠেছে আধুনিক এই বিনোদন কেন্দ্র। প্রতিবারের মতো এবারও ঈদে এখানে ঢল নামবে দর্শনার্থীদের। পার্কের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদের প্রথম সাত দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে ফ্যান্টাসি কিংডম। বড়দের প্রবেশমূল্য ২৫০ টাকা। ছোটদের ১৫০ টাকা। প্রবেশসহ সব রাইডে চড়তে চাইলে বড়দের জন্য ৪৫০ এবং ছোটদের জন্য ২৫০ টাকার টিকেট সংগ্রহ করতে হবে। বাড়তি ২৭০ টাকার টিকেট কেটে সাঁতার কাটা যাবে ওয়াটার কিংডমে। একই সঙ্গে ওয়েভপুল, লেজি রিভার, টিউব সøাইড, ওয়াটারপুলসহ বিভিন্ন রাইডে চড়া যাবে। নন্দন পার্ক ॥ ঈদের ছুটিতে নন্দন পার্কে যাওয়ার মজাই আলাদা। এ সময় হাতে সময় বেশি থাকে। ফলে ঢাকা থেকে সামান্য দূরে হলেও সমস্যা হয় না। পার্ক কর্তৃপক্ষও সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। এখন প্রতীক্ষার পালা। পার্কের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জুবায়েদ জানান, ঈদের দিন সকাল থেকেই খোলা থাকবে পার্ক। সাধারণ প্রবেশ মূল্য ২৪০ টাকা। সব রাইড উপভোগ করতে লাগবে ৮০০ টাকার মতো। ঈদে একটি বিশেষ প্যাকেজ অফার করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এই প্যাকেজটির আওতায় ৫২০ টাকা মূল্যের তিনটি টিকেট কিনলে একটি ফ্রি পাওয়া যাবে। ওয়াটার ওয়ার্ল্ড ও ড্রাই পার্কের সব রাইডও উপভোগ করা যাবে এই প্যাকেজের আওতায়। ঈদের পরবর্তী দিনগুলোতে পার্কে লাইভ মিউজিক, ডিজে, ড্যান্স শো ইত্যাদির আয়োজন থাকবে বলে জানান তিনি। হেরিটেজ পার্ক ॥ ফ্যান্টাসি কিংডমের পাশেই হেরিটেজ পার্ক। এখানে দেখা যাবে বেশি কিছু ঐতিহাসিক স্থাপনা। রেপ্লিকা ধরনের হলেও নিদর্শনগুলো দেখে ভাল লাগবে দর্শনার্থীদের। পাশাপাশি চড়া যাবে জায়ান্ট ফেরিস হুইল, পাইরেট শিপ, ড্রাই সøাইড, কফি কাপ, ব্যাটারি কার, ফ্যামিলি ট্রেনসহ বিভিন্ন রাইডে। শিশুমেলা ॥ মিরপুর মোহাম্মদপুর ও আশপাশের এলাকার শিশুকিশোরদের প্রধান বিনোদন কেন্দ্র শিশুমেলা। শ্যামলীতে অবস্থিত। এখানে আছে ৪০টির মতো রাইড। পরিবারের সকলের চড়ার মতো আছে ১২টি রাইড। শিশুমেলা কর্তৃপক্ষ জানায়, ঈদের প্রথম সাত দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে শিশুমেলা। এ সবের বাইরে ছোট-বড় আরও বহু বিনোদন কেন্দ্রে ঈদ উদযাপনের বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে। পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা পার্ক, চন্দ্রিমা উদ্যান, সংসদ ভবনসহ বিভিন্ন খোলামেলা জায়গায় মনের আনন্দে ঘুরে বেড়াবেন সাধারণ মানুষ। এই ঘুরে বেড়ানো আনন্দঘন হোক। নিরাপদ হোক।
×