ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিটিভির প্রযোজকের বিরুদ্ধে যাত্রাশিল্পীদের অভিযোগ

প্রকাশিত: ০৪:২১, ৪ জুলাই ২০১৬

বিটিভির প্রযোজকের বিরুদ্ধে যাত্রাশিল্পীদের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মাইকেল মধুসূদনের ১৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিশিষ্ট যাত্রানট মিলন কান্তি দে’কে দিয়ে সম্প্রতি বিটিভির একটি অনুষ্ঠানের অংশবিশেষ ধারণ করা সত্বেও তা সম্প্রচার করা হয়নি। উপরন্তু অনুষ্ঠান কর্তৃপক্ষ বিষয়টি মিলন কান্তি দে’কে অবগতও করেন নি। দেশের শীর্ষস্থানীয় যাত্রাশিল্পীরা এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও ক্ষোভ জানিয়েছেন। সম্প্রতি যৌথ এক বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়। তবে এ বিষয়ে বিটিভির সংশ্লিষ্ট প্রযোজকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান মাইকেল মধুসূদনকে নিয়ে নির্মিত অনুষ্ঠানের ওই অংশ টুকুর গেটআপ মানসম্মত হয়নি। এছাড়া পরে ওই অংশটকুু রিশূট করারও সুযোগ না থাকায় মূল অনুষ্ঠান থেকে তা বাদ দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায় মাইকেল মধুসূদনের ১৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ২০ জুন বিটিভির নিজস্ব স্টুডিওতে আলোচনা-আবৃত্তি ও অভিনয়ের সমন্বয়ে একটি বিশেষ অনুষ্ঠান ধারণ করা হয়। অনুষ্ঠানের প্রযোজক ছিলেন সোলেমান হক। ড. বিশ্বজিৎ ঘোষের উপস্থাপনায় আলোচনায় অংশ নেন ড. আমিনুর রহমান সুলতান ও অধ্যাপক শান্তুনু কায়সার, আবৃত্তি করেন ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, মাইকেল মধুসূদন যাত্রাপালার অংশবিশেষ অভিনয় করেন মিলন কান্তি এবং তার সহশিল্পী ডাঃ দীপক বণিক। ২৯ জুন সন্ধ্যায় অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার হলে দেখা যায়, যাত্রা অভিনয়ের অংশটুকু বাদ দেয়া হয়েছে। এতে মিলন কান্তি দেসহ অন্য যাত্রাশিল্পীরা ক্ষুব্ধ হন। এ অবস্থায় যাত্রাশিল্পীরা ওই বিবৃতিতে প্রতিবাদ করে বলেন, মিলন কান্তি দে এদেশের যাত্রা শিল্প আন্দোলনের অগ্রনায়ক এবং যাত্রাশিল্প বিষয়ক লেখক। এছাড়া তিনি একজন অভিনেতা। তার মতো একজন ব্যক্তিকে আমন্ত্রণ জানিয়ে অনুষ্ঠান রেকর্ড করে বাদ দেয়ায় জাতীয় ক্ষেত্রে তার ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হয়েছে বলে আমরা মনে করি। এতে ওই প্রযোজক শিষ্টাচারবহির্ভূত ও স্বেচ্ছাচারী মন মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। আমরা বিটিভির উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে এই প্রযোজকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই। এ প্রসঙ্গে মিলন কান্তি দে বলেন, কেনই বা আমাকে ডেকে নিয়ে গেল, কেনই বা বাদ দেয়া হলো- কিছুই বুঝলাম না। সারা জীবন মাইকেল চর্চা করে, মাইকেল সাধনা করে, মাইকেল যাত্রাপালায় অভিনয় করে বিটিভির কাছে কি আমার এই পাওনা ছিল! অনুষ্ঠানে আমার অংশটুকু না যাওয়ার বিষয়টি আগে আমাকে জানানো উচিত ছিল। প্রযোজক সেই সৌজন্যবোধটুকু দেখাননি। তবে এ প্রসঙ্গে অনুষ্ঠান প্রযোজক সোলেমান হক বলেন, একজন যাত্রানট হিসেবে মিলন কান্তি দে’কে আমরা শ্রদ্ধা করি, সম্মান করি। তিনি আমাদের দেশের অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তি। তবে যে উদ্দেশ্য নিয়ে আমরা ওই অনুষ্ঠান নির্মাণ করেছিলাম, ওই অংশটুকু যথাযথভাবে সেই মান ধারণ করতে পারছিল না। মিলন কান্তি দে’র ওই অংশটুকু আমাদের অনুষ্ঠানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়নি বলে আমাদের মনে হয়েছে। ওই অংশটুকু প্রচার হলে অনুষ্ঠানের মান ক্ষুণœ হতো বিধায় আমরা ওই অংশটুকু বাদ দিয়েছি। তবে একজন স্বনামধন্য যাত্রানট হিসেবে মিলন কান্তি দে’র প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা অটুটু রয়েছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। অচিরেই এ বিষয়ে তাকে অবহিত করা হবে বলে জানান তিনি। বিবৃতিতে প্রতিবাদকারী যাত্রাশিল্পীরা হলেন ছেন: অভিনেতা-নির্দেশক সুলতান সেলিম, রিক্তা সুলতানা, এসএম শফি, গাজী বেলায়েত, সুদর্শন চক্রবর্তী, বেগম তবতী, এম সিরাজ, সন্তোষ বিশ্বাস, মোনায়েম হোসেন রতন, শাহ্ মোহাম্মদ আলী, লুৎফুন্নাহার রিক্তা, জাকির হাসান, আমির সিরাজী, অলিউল্ল্যাহ অলি, মনিমালা এবং ময়মনসিংহ জেলার নবনির্বাচিত সভাপতি আবুল বাশার ফকির ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম।
×