ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

টাইব্রেকারে ইতালিকে কাঁদিয়ে সেমিতে জার্মানি

প্রকাশিত: ১৯:২৭, ৩ জুলাই ২০১৬

টাইব্রেকারে ইতালিকে কাঁদিয়ে সেমিতে জার্মানি

অনলাইন ডেস্ক ॥ ফুটবল বিশ্বের চোখ ছিল সব সময়ের শক্তিশালী দল জার্মানি আর ফেভারিটের তকমা লাগানো ইতালির ম্যাচটির ওপর। চলমান ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় কোয়ার্টার ফাইনালের হাইভোল্টেজ এ ম্যাচে পেনাল্টি শুটআউটে ৬-৫ ব্যবধানে জয় পেয়েছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন জার্মানি। ফ্রান্সের বোর্দোয় বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত একটায় মাঠের লড়াইয়ে নামে দুই দল। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলায় ১-১ এ সমতা থাকলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। তাতেও কোনো গোল না হলে ম্যাচ গড়ায় পেনাল্টি শুটআউটে। তাতে ৫-৫ সমতা হলে ইতালির ডারমিয়ানের নেওয়া নবম শটটি রুখে দেন জার্মার গোলরক্ষক ম্যানুয়েল ন্যুয়ের। আর জার্মানির জোনাস হেক্টরের নেওয়া নবম শটটি বুফন রুখনে না পারলে আর বল জালে জড়ালে ৬-৫ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানি। শেষ চারের টিকিট নিশ্চিত হওয়ায় সেমি-ফাইনালের মঞ্চে স্বাগতিক ফ্রান্স অথবা বিশ্ব ফুটবলকে নাড়া দেওয়া আইসল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামতে হবে জার্মানিকে। চতুর্থ কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচে মাঠে নামবে ফরাসি আর আইসল্যান্ডের ফুটবলাররা। জার্মানির জন্য এ ম্যাচটি ছিল ইতিহাস বদলানোর ম্যাচ। কারণ শক্তিশালী জার্মানরা যে সব সময় বড় মঞ্চে এসে ইতালির কাছে চুপসে যায়! এ ম্যাচের আগ পর্যন্ত বড় টুর্নামেন্টে ইতালির বিপক্ষে আটবার খেলে একবারও জয় পায়নি ডয়েসল্যান্ড খ্যাত দেশটি। কোয়ার্টার ফাইনালের এ ম্যাচের আগে দুই দল ৩৩ বার মুখোমুখি হলেও, সর্বোচ্চ ১৫ বার জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল ইতালি। আটবার জার্মানরা জিতলেও বাকি ম্যাচগুলো ড্র হয়েছে। ইউরোতে দু’দল চারবার মুখোমুখি হয়, যেখানে দু্’বার ইতালি জিতলেও বাকি দুটি ম্যাচ ড্র হয়। কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচের প্রথম দিকে ইতালিয়ানদের চেপে ধরে জার্মানরা। প্রথমার্ধে নিজেদের দখলে ৫৫ শতাংশ বল ধরে রাখে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন জার্মানি। তবে, গোলের দেখা পায়নি ম্যানুয়েল ন্যুয়ের, ম্যাট হ্যামেলস, বেনেডিক্ট, জেরম বোয়েতাং, সামি খেদিরা, টনি ক্রুস, মারিও গোমেজ, মেসুত ওজিল, থমাস মুলার, লুকাস পোডলস্কি, মারিও গোতজে আর বাস্তিয়ান শোয়াইন্সটাইগারদের নিয়ে সাজানো জার্মানি। খেলার ১৮তম মিনিটে গোমেজের একটি দুর্বল শট প্রতিহত করেন ইতালির প্রাচীর খ্যাত গোলরক্ষম বুফন। তবে, তার আগে জোয়াকিম লো’র শিষ্যরা দেখিয়েছে ওয়ান-টু-ওয়ান পাসের দারুণ ডেলিভারি। ম্যাচের ২৮ মিনিটের মাথায় শোয়াইন্সটাইগারের গোলের একটি সুযোগ নষ্ট হয়। ৪১ মিনিটে আবারো ইতালিয়ান ডিফেন্স চিড়ে বল পান গোমেজ। তবে, এবারো ফিনিসিংয়ের অভাবে বুফনের দেওয়াল ডিঙ্গাতে পারেনি জার্মানি। এর তিন মিনিট পর নিজেদের অর্ধ থেকে লম্বা পাসে ইতালির তারকা চিয়েল্লিনি বল দেন স্টুরারোকে। খ্রিপ গতিতে তার কোনাকুনি শটটি জার্মান গোলরক্ষক ন্যুয়েরের পায়ে লেগে প্রতিহত হয়। প্রথমার্ধে কোনো গোল না নিয়ে বিরতিতে যায় দুই দল। বিরতির পর নিজেদের রক্ষণভাগ সামলে খেলা চালিয়ে যায় ইতালিয়ানরা। এরই ফাঁকে ম্যাচের ৫৫ মিনিটে থমাস মুলারের গতিসম্পন্ন ডানপায়ের বাঁকানো শটটি হেড করে বাঁচান ইতালিয়ান ডিফেন্ডার। ৬৫ মিনিটের মাথায় লিড নেয় জার্মানি। আর্সেনালের তারকা মেসুত ওজিলের গোলে এগিয়ে যায় বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। জোনাস হেক্টরের অ্যাসিস্ট থেকে বুফনকে ফাঁকি দেন ওজিল। ৭৮ মিনিটে সমতায় ফেরে ইতালি। সাবেক ইউরো চ্যাম্পিয়নদের হয়ে পেনাল্টির সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দলকে সমতায় ফেরান বনুচ্চি। নিজেদের ডি-বক্সে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে বোয়েতাং হাতে বল লাগিয়ে বসেন। আর সেই সুবাদে পেনাল্টি লাভ করে ইতালি। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে আর কোনো গোল না হলে অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে ম্যাচটি গড়ায়। তাতেও দুই দল একাধিক আক্রমণে গেলেও কাঙ্খিত গোলের দেখা পায়নি। ফলে, ম্যাচ গড়ায় পেনাল্টি শুটআউটে। আর তাতে ৬-৫ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করে জার্মানি।
×