অনলাইন রির্পোটার ॥ অস্ত্রধারীরা বিদেশিদের বহনকারী একটি গাড়ি অনুসরণ করে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে ঢুকেছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানিয়েছেন।
কূটনৈতিকপাড়ার ওই ক্যাফেতে শুক্রবার রাতে জঙ্গিরা অন্তত ৩০ জনকে জিম্মি করলে পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে তাদের ছোড়া বিস্ফোরকের স্প্লিন্টারে মারা যান দুই পুলিশ কর্মকর্তা।
পরে শনিবার সকালে কমান্ডো অভিযানে জিম্মি সঙ্কটের অবসানের পর সেখান থেকে বিদেশিসহ ২০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। অভিযানে ছয় বন্দুকধারীর মৃত্যুর খবরও দেয় আইএসপিআর।
শনিবার দুপুরে গুলশান ২ এর ৭৯ নম্বর সড়কের ওই রেস্তোরাঁর কাছের একটি ভবনের নিরাপত্তকর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, শুক্রবার রাত ৯টার কিছুক্ষণ আগে কয়েকজন বিদেশিকে বহনকারী একটি গাড়ি দ্রুত এই সড়কের লেক ভিউ ক্লিনিকের গেইট দিয়ে ভেতরে ঢোকে।
“ঠিক ওই গাড়ির পেছনে আরও দুটি গাড়ি ঢোকে এবং পরক্ষণই গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। মনে হয়েছে বিদেশিদের বহনকারী গাড়িটি অনুসরণ করে পেছনের দুটি গাড়ি ঢুকেছে।”
গোলাগুলি শুরুর পরপরই ওই গাড়ি দুটি বের হয়ে যায় বলে জানান তিনি।
হলি আর্টিজান বেকারির আরেকটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে গুলশান ২ এর ১১৩ নম্বর সড়কে; নাম ইজুমি। এটিও খাবারের দোকান বলে জানান ইজুমির নিরাপত্তাকর্মী মোহন মিয়া।
তার কথায়ও ওই প্রত্যক্ষদর্শীর দেওয়া বর্ণনার মিল পাওয়া যায়।
মোহন বলেন, দুটি প্রতিষ্ঠানের মালিক শাহজাদ মেহেদীসহ আরও কয়েকজন। ঘটনার সময় মালিক মেহেদী ১১৩ নম্বর সড়কের ইজুমিতে ছিলেন।
হলি আর্টিজানে ছয়জন নিরাপত্তাকর্মী ছিল জানিয়ে সেখানকার এক নিরাপত্তাকর্মীর বরাত দিয়ে তিনি বলেন, রাত পৌনে ৯টার দিকে বিদেশিদের বহনকারী একটি গাড়ি বেকারি ও হাসপাতাল গেইটে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে পেছনে আরও দুটি গাড়ি ঢোকে।
“ওই গাড়ি দুটি থেকে নেমে কয়েকজন যুবক বিদেশিদের বহনকারী গাড়ি চালকের দিকে গুলি চালায়।”
যুবকরা গাড়ি থেকে নামার পর তাদের বহনকারী গাড়ি দুটি চলে যায় বলে ওই নিরাপত্তাকর্মীর বরাত দিয়ে জানান মোহন মিয়া।
গাড়ি চালককে গুলি করার পর অস্ত্রধারীদের গুলিতে হলি আর্টিজানের একজন নিরাপত্তাকর্মীও আহত হয়েছেন।
বিদেশিদের বহনকারী যে গাড়িটির চালককে গুলি করা হয়েছিল, তার নাম রাজ্জাক। জাপানি এক নাগরিকের গাড়ি চালান তিনি।
গুলশানের ঘটনাস্থল থেকে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধারের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, “তার (রাজ্জাকের ) পিঠে গুলি লাগে।”
জিম্মি সঙ্কট অবসানের পর যে ২০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়, তাদের মধ্যে সাতজনই জাপানি নাগরিক।
বিদেশিদের বহনকারী যে গাড়িকে অনুসরণ করে জঙ্গিদের গাড়ি দুটি বেকারি প্রাঙ্গণে ঢুকেছিল তার মধ্যে অধিকাংশরাই জাপানি নাগরিক ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।