ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাগতিক ফ্রান্সের বাধা আজ আইসল্যান্ড

প্রকাশিত: ০৭:০১, ৩ জুলাই ২০১৬

স্বাগতিক ফ্রান্সের বাধা আজ আইসল্যান্ড

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এবারের ইউরোর আয়োজক ফ্রান্স। আসরের শুরু থেকেই নিজেদের সেরাটা খেলে জায়গা করে নেয় কোয়ার্টার ফাইনালে। তবে সেমিফাইনালে উঠার পথে স্বাগতিকদের সামনে আজ বড় বাধা টুর্নামেন্টে ইতোমধ্যেই চমক জাগানিয়া পারফর্মেন্স উপহার দেয়া আইসল্যান্ড। ইউরোর এবারের আসরে আইসল্যান্ডের উত্থানে বিস্মিত ফুটবলবিশ্ব। কেননা শেষ ষোলোতে যে এবার ইংল্যান্ড-বধ করে শেষ আটে জায়গা করে নেন তারা। ইতোমধ্যেই রূপকথার জন্ম দেয়া আইসল্যান্ড এবার ফ্রান্সের বিরুদ্ধেও চমক দেখানোর অপেক্ষায়। ফুটবলের প্রথম মেজর কোন টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েই রূপকথার জন্ম দিয়েছে আইসল্যান্ড। একের পর এক সাফল্যে ভাসছে তারা। গ্রুপ পর্বে পর্তুগাল-হাঙ্গেরির সাথে ড্রয়ে সাফল্যের প্রথম সিঁড়িতে পা রেখেছিল আইসল্যান্ড। এরপর রাউন্ড অব সিক্সটিনে ইংল্যান্ড-বধ করে নতুন ইতিহাসের জন্ম দেয় তারা। সাড়ে তিন লাখেরও কম জনসংখ্যার দেশ আইসল্যান্ড। হ্যান্ডবল, এ্যাথলেটিকস, বাস্কেটবল, গলফ ছাপিয়ে এখন আলোচনায় ফুটবল। হবেই না কেন সিগার্ডসন-সিগথোর্সনরা যে আইল্যান্ডকে ফুটবল বিশ্বে নতুন করে পরিচয় দিয়েছেন। সাফল্যের কারিগর হ্যালগ্রিমসন ও ল্যাগারব্যাক। পাঁচ বছর ধরে দলটাকে তৈরি করেছেন এই দুই কোচ। তাদের সামনে এখন ফ্রান্সকে হারানোর স্বপ্ন। স্বাগতিকদের হারাতে পারলেই যে আরেকবার রূপকথায় নাম তুলবে আইসল্যান্ড। তবে কাজটা যে সহজ হবে না তা জানা আছে দলটির। স্বাগতিক দর্শকদের সামনে নিজেদের সেরাটা দিতে হবে। আইসল্যান্ডের প্রধান কোচ হেইমির হ্যালগ্রিমসন জানান, ‘ফ্রান্স গত কয়েকটা ম্যাচে শেষ দিকে গোল করেছে। তাই ম্যাচের ৯০ মিনিট না, ইনজুরি টাইমেও তাদের ওপর কড়া নজর রাখতে হবে।’ আইসল্যান্ডের সহকারী প্রধান কোচ লার্স ল্যাগারব্যাকের মতে, ‘আন্ডারডগ হিসেবে নামবো, এতে কিছু মনে করার নেই। বরং আমরা উপকৃত হবো। এ ম্যাচে ফ্রান্সের অনেক প্রত্যাশা থাকবে, সেটার সুযোগ নিতে হবে।’ হ্যালগ্রিমসন ও ল্যাগারব্যাক রসায়ন জমেছে, ফ্রান্সের বিপক্ষে দুই কোচের সাথে খেলোয়াড়দের রসায়ন জমলে নিজ দেশে দর্শক হয়ে থাকতে হবে ফ্রান্সকে। তবে ইংল্যান্ডকে হারানোটাই ক্যারিয়ারের বড় সাফল্য হিসেবে দেখছেন আইসল্যান্ডের হেড কোচ হেইমির হেলগ্রিমসন। এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, ম্যাচটায় ইংল্যান্ড চাপে ছিল। আমাদের হারানোর কিছু ছিল না। আমরা ইতোমধ্যে পারফর্মেন্স দিয়ে সমর্থকদের মন জয় করেছি। দেশটির সহকারী প্রধান কোচ লার্স লেগারব্যাক জানান, আমি বলছি না ইংল্যান্ড খারাপ খেলেছে, কিন্তু আমি বলবো আমার খেলোয়াড়রা অসাধারণ পারফর্ম করেছে। তার ফল আমরা পেয়েছি। মাত্র তিন লক্ষ তিরিশ হাজার মানুষের দেশ আইসল্যান্ড। আর ইংল্যান্ডকে ইউরো থেকে বিদায় করাটাই ফুটবল ইতিহাসে তাদের সবচেয়ে সেরা সাফল্য। ইংল্যান্ডের পর এবার লক্ষ্য ফ্রান্স। রবিবার রাতের কোয়ার্টার ফাইনালে আয়োজক দেশের মুখোমুখি হচ্ছেন আর্নাসনরা। তবে কোয়ার্টার ফাইনালের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে আইসল্যান্ড কোচ বলছেন চাপ থাকবে গ্রিজম্যান-পোগবাদের ওপরই। কেননা আয়োজক দেশ হওয়ায় প্রত্যাশার চাপটা তাদের বেশি থাকাটাই স্বাভাবিক। অন্যদিকে তাদের কিছুই হারানোর নেই বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন আইসল্যান্ডের কোচ। ইংলিশদের বিদায় করে টুর্নামেন্টের শেষ আটে জায়গা করে নেয়া আইরিশদের বিপক্ষে আজ সতর্ক থেকেই মাঠে নামবে দিদিয়ের দেশমের শিষ্যরা। এই ম্যাচের আগে আইসল্যান্ডকে প্রিমিয়ার লীগের চ্যাম্পিয়ন লিচেস্টার সিটির সঙ্গে তুলনা করেছেন ফরাসী ডিফেন্ডার বেকারি সাগনা, ‘এবারের ইউরোতে তারা লিচেস্টারের মতোই দল। চেকপ্রজাতন্ত্র এবং হল্যান্ডকে হারিয়ে বাছাইপর্বেই নিজের প্রমাণ দিয়েছেন তারা। যোগ্য দল হিসেবেই এখানে খেলছে তারা। যে কারণে আইসল্যান্ডকে অবহেলা করার কোন সুযোগ নেই।’ এদিকে কোয়ার্টার ফাইনালে নামার আগে নিজের দলকেই জেগে উঠতে বললেন ফ্রান্সের অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার প্যাট্রিক এভরা। ফরাসীদের জার্সিতে দীর্ঘদিন ধরে খেলা এই লেফট ব্যাক মনে করেন আইসল্যান্ডকে হালকাভাবে নেয়ার প্রশ্নই নেই। যে কারণে তাদের বিপক্ষে শুরুতেই গোল তুলে নিতে হবে। এবারের ইউরোয় চারটি ম্যাচ খেলে ফেলেছে দিদিয়ের দেশমের দল। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন ম্যাচেই প্রথমার্ধে গোল পায়নি তারা। গ্রিজম্যান-পায়েতরা ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে ঠিকই জ্বলে উঠেছেন। এভরা মনে করছেন, সব ম্যাচেই এমনটা হবে না। তাই আইসল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমার্ধেই সতীর্থদের জেগে উঠার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
×