ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রয়ের ব্যাটে ইংল্যান্ডের সিরিজ জয়

প্রকাশিত: ০৬:৩৬, ১ জুলাই ২০১৬

রয়ের ব্যাটে ইংল্যান্ডের সিরিজ জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ফর্মের তুঙ্গে আছেন ২৫ বছর বয়সী ডানহাতি ইংলিশ ওপেনার জেসন রয়। দক্ষিণ আফ্রিকা বংশোদ্ভূত এ তরুণ সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতেই খেলেছিলেন ১১২ রানের হার না মানা ইনিংস। রেকর্ড গড়ে জেতে ইংল্যান্ড। লন্ডনের কেনিংটন ওভালে বুধবার রাতে সিরিজের চতুর্থ ওয়ানডেতেও রয়ের ব্যাটে রানের ফোয়ারা থামাতে পারেনি লঙ্কান বোলাররা। তার ১৬২ রানের সুবাদে বৃষ্টিবিঘিœত ম্যাচে ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে ৬ উইকেটে জয় পায় ইংল্যান্ড। বৃষ্টির কারণে ম্যাচটি ৪২ ওভারে নামিয়ে আনা হয়েছিল। লঙ্কানদের দেয়া ৩০৬ রানের টার্গেট ১১ বল বাকি থাকতেই ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ইংল্যান্ড। তিন ওয়ানডেতে ২৭৯ রান করার পর অবশেষে সাজঘরে ফিরেছেন রয়। কিন্তু এক ম্যাচ হাতে রেখেই ৫ ম্যাচের সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতে গেছে ইংল্যান্ড। উল্লেখ্য, সিরিজের প্রথম ওয়ানডে টাই হওয়ার পর, দ্বিতীয় ম্যাচে ১০ উইকেটে জিতেছিল ইংল্যান্ড এবং তৃতীয় ওয়ানডে বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের মাত্র একটা বছর পার করেছেন। সবমিলিয়ে খেলার সুযোগ হয়েছে ২৪ ম্যাচ। সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন তিনটি যার মধ্যে দুটিই আসল এবার সফরকারী শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। সত্যি দারুণ ফর্মে আছেন জন্মগতভাবে প্রোটিয়াস রয়। শ্রীলঙ্কা দলটি অনেকদিন হাড়ে হাড়ে মনে রাখবে তাকে। কারণ তিনিই টানা দুটি জয়ে ইংলিশদের নেতৃত্ব দিয়েছেন। যদিও ওভালে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে বেশ দুরন্ত গতিতেই রান করছিল লঙ্কানরা। যদিও ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারেই ফিরে গিয়েছিলেন কুসাল পেরেরা (১) রানআউটের খপ্পরে পড়ে। তবে এরপর ঝড় তোলেন দানুস্কা গুনাতিলকা এবং কুসাল মেন্ডিস। দ্বিতীয় উইকেটে ১৮.১ ওভারেই তারা যোগ করেন ১২৮ রান। তবে দারুণ এ জুটি ভাঙ্গার কারণ হতে পারে মাঝে দীর্ঘক্ষণের বিরতি। বৃষ্টির কারণে খেলা বন্ধ ছিল ইনিংসের ১৯তম ওভারের প্রথম বল হওয়ার পর থেকেই। বৃষ্টি শেষে খেলা শুরু হলেও সেটা ৮ ওভার কমিয়ে ৪২ ওভার করা হয়। বৃষ্টির পর খেলা শুরুর পরে জোড়া আঘাত হানেন স্পিনার আদিল রশিদ। ২০তম ওভারেই সাজঘরে ফেরেন মেন্ডিস। মাত্র ৬৪ বলে ১৩ চারে ৭৭ রান করেছিলেন তিনি। এরপর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি গুনাতিলকা। স্পিনার আদিল রশিদের দ্বিতীয় আঘাতে আউট হন তিনি ৫৪ বলে ৭ চারে ৬২ রান করার পর। তবে এরপরেও লঙ্কান ব্যাটসম্যানদের আটকাতে পারেননি ইংলিশ বোলাররা। দিনেশ চান্দিমাল ৫১ বলে ১ চার ও ৩ ছক্কায় ৬৩ এবং এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস ৫৪ বলে ৬ চার ও ১ ছক্কায় অপরাজিত ৬৭ রান করেন। এ দুজন চতুর্থ উইকেটে ৮৭ রানের জুটি গড়ে দলকে বড় সংগ্রহ এনে দেন। ৪২ ওভারে ৫ উইকেটে ৩০৫ রান তোলে শ্রীলঙ্কা। দুটি করে উইকেট নেন আদিল ও উইলি। জবাব দিতে নেমে চতুর্থ ওভারেই মঈন আলীকে (২) হারায় ইংল্যান্ড। তবে দ্বিতীয় উইকেটে ১০৮ বলে ১৪৯ রানের দ্রুতগতির জুটি গড়েন রয় ও জো রুট। রুট ৫৪ বলে ৯ চারে ৬৫ রান করে সাজঘরে ফেরেন। কিন্তু বিধ্বংসী রয়কে থামানো যায়নি। ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি আদায় করেন তিনি। ধীরস্থির ইয়ন মরগানের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে ৫৪ এবং চতুর্থ উইকেটে জনি বেয়ারস্টোর সঙ্গে ৬০ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান তিনি। তবে দলকে জয় থেকে ২৫ রান দূরে রেখে সাজঘরে ফেরেন পেসার নুয়ান প্রদীপের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হয়ে। এর আগেই ইংল্যান্ডের ওয়ানডে ইতিহাসে দ্বিতীয় ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংস খেলেন তিনি। রবিন স্মিথ ১৯৯৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলেছিলেন ১৬৭ রানের অপরাজিত ইনিংস। আর এদিন রয় খেললেন মাত্র ১১৮ বলে ১৩ চার ও ৩ ছক্কায় ১৬২ রানের ইনিংস। ৪০.১ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ৩০৯ রান তুলে জয় পায় ইংল্যান্ড। এটি ছিল ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় সর্বাধিক রান তাড়া করার রেকর্ড। এর আগে গত বছর ১৭ জুন ট্রেন্ট ব্রিজে নিউজিল্যান্ডের করা ৩৪৯ রান তাড়া করে ৭ উইকেটে জিতেছিল ইংল্যান্ড। স্কোর ॥ শ্রীলঙ্কা ইনিংস- ৩০৫/৫; ৪২ ওভার (মেন্ডিস ৭৭, ম্যাথুস ৬৭*, চান্দিমাল ৬৩, গুনাতিলকা ৬২; আদিল ২/৫৭, উইলি ২/৫৮)। ইংল্যান্ড ইনিংস- ৩০৯/৪; ৪০.১ ওভার (রয় ১৬২, রুট ৬৫, বেয়ারস্টো ২৯*, মরগান ২২; প্রদীপ ২/৭৮)। ফল ॥ ইংল্যান্ড ৬ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ জেসন রয় (ইংল্যান্ড)। সিরিজ ॥ ৫ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে ইংল্যান্ড।
×