ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

থানায় ধর্ষিতার সঙ্গে সেলফি তুলে বিপাকে

প্রকাশিত: ২১:৫৯, ৩০ জুন ২০১৬

থানায় ধর্ষিতার সঙ্গে সেলফি তুলে বিপাকে

অনলাইন ডেস্ক ॥ এক ধর্ষিতা নারীর সঙ্গে সেলফি তুলে বিপাকে পড়েছেন ভারতের এক রাজ্য মহিলা কমিশনের সদস্যা। রাজস্থান রাজ্য মহিলা কমিশনের ওই সদস্যা সৌম্যা গুর্জর ওই ধর্ষিতার সঙ্গে থানায় বসে কথা বলার সময়েই সেলফিটি তোলেন। তাঁর সঙ্গে সেই সময়ে থানায় হাজির ছিলেন মহিলা কমিশনের সভানেত্রী সুমন শর্মাও। ওই ধর্ষিতা নারীকে মাঝখানে রেখে এই দুই মহিলা কমিশন সদস্য যখন সেলফি তুলছিলেন, তখন সেই দৃশ্য ধারণ করেন অন্য একজন। মহিলা কমিশনের সদস্যদের চূড়ান্ত অসংবেদনশীল কাজের এই নিদর্শন ছড়িয়ে পড়ে হোয়াটস্অ্যাপের মাধ্যমে। এ নিয়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক সমালোচনা। এক তো নির্যাতিতার ছবি তোলা কঠোরভাবে আইনবিরুদ্ধ। অন্য দিকে নির্যাতিতা নারীর পাশে দাঁড়ানোটা যে মহিলা কমিশন সদস্যদের নৈতিক দায়িত্ব, তাঁরাই চরম অসংবেদনশীলের মতো কাজ করেছেন। ভারতের সুপ্রীম কোর্টের নির্দেশ আর ভারতীয় দন্ডবিধির ২২৮-এ ধারা অনুযায়ী কোনও নির্যাতিতার নাম ঠিকানা প্রকাশ বা ছবি তোলাই শুধু নিষিদ্ধ নয়, ওই নির্যাতিতাকে কোনও ভাবে চেনা যেতে পারে এমন কোনও ছবি প্রকাশ করাও কঠোরভাবে আইন বিরুদ্ধ। পশ্চিমবঙ্গ মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন সুনন্দা মুখার্জি বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, “২২৮-এ ধারা অনুযায়ী শুধু ওই নির্যাতিতার ছবি নয়, তাঁর শরীরের কোনও অংশ, পোষাক, প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন, গ্রাম বা পাড়ার ছবি – এগুলোও দেখানো আইনে স্পষ্টত নিষিদ্ধ। কোনওভাবেই যাতে নির্যাতিতার সম্ভ্রমহানি না ঘটে তারজন্য খুবই কঠোর আইনের এই ধারাটি। কারও সেটা ভাঙ্গার অধিকার নেই – সে যেই হোক না কেন।“ বিষয়টি নিয়ে নড়াচড়া শুরু হওয়ায় জবাব তলব করা হয়েছে মহিলা কমিশনের যে সদস্য সেলফি তুলেছিলেন সেই সৌম্যা গুর্জরের কাছে। কমিশনের সভানেত্রী সুমন শর্মা সংবাদ সংস্থার কাছে সাফাই দিতে গিয়ে বলেছেন, “আমরা যখন ওই নির্যাতিতার সঙ্গে থানায় বসে কথা বলছিলাম, তারমধ্যে কখন ওই সেলফি তোলা হয়েছে সেটা খেয়াল করি নি। সৌম্যা গুর্জরের কাছে জবাব তলব করেছি আমি।“ তবে যে ছবি ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে যে মিজ. শর্মা নিজেও ওই সেলফি তোলার সময়ে মোবাইল ক্যামেরার দিকেই তাকিয়ে আছেন আর সেলফির ফ্রেমেও তিনি স্পষ্টভাবেই রয়েছেন। বছর তিরিশের ওই নারীকে ৫১০০০ টাকা যৌতুকের দাবীতে তাঁর স্বামী আর দেওর মিলে ধর্ষন করে। সেখানে শেষ নয়, তাঁর মাথার চুল কামিয়ে অশ্লীল কথাও লিখে দেওয়া হয় – এমনটাই লেখা হয়েছে পুলিশের কাছে দায়ের হওয়া অভিযোগ পত্রে। সূত্র : বিবিসি বাংলা
×