ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

দীর্ঘবিরতি বাংলাদেশকে ভোগাবে ॥ তামিম

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ৩০ জুন ২০১৬

দীর্ঘবিরতি বাংলাদেশকে ভোগাবে ॥ তামিম

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরেই কোন ম্যাচ খেলছে না। ২৬ মার্চ টি২০ বিশ্বকাপের মিশন শেষ করেছে বাংলাদেশ। এরপর থেকে আর কোন আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেনি দল। তিন মাস হয়ে গেল। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা হয়নি। আর ওয়ানডে খেলা হয় না, সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে। গত বছর ১১ নবেম্বর সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেছে বাংলাদেশ। টেস্ট ক্রিকেট থেকেও প্রায় এক বছর দূরে! গত বছর জুলাই মাসের ৩০ তারিখে সর্বশেষ টেস্ট খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ। এ দীর্ঘ বিরতি যে বাংলাদেশকে ভোগাতে পারে, তা সবারই জানা। বাংলাদেশ দলের ওপেনার তামিম ইকবালত নিজ মুখে তা বলেই দিলেন। ইএসপিএন ক্রিকইনফোকে তামিম বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে দীর্ঘবিরতি বাংলাদেশকে ভোগাবে।’ টি২০ ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হচ্ছেন তামিম, যিনি শতক করে দেখাতে পেরেছেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নতির জন্য বেশি বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে চান এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচটি কবে খেলেছেন, তা যেন ভুলতেই বসেছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। ২০১৫ সালে দারুণ সাফল্যের পর এ বছর অলস সময়ই কাটছে মাশরাফি, মুশফিক, সাকিব, তামিম, মুস্তাফিজদের। সেপ্টেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ হতে পারে। দুই বোর্ডের মধ্যে আলোচনা চলছে। তা যদি না হয় তাহলে অক্টোবরের আগে আর কোন আন্তর্জাতিক খেলা নেই বাংলাদেশের। অক্টোবরে যখন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ খেলতে নামবে বাংলাদেশ, তখন টেস্টে ১৫ মাস, ওয়ানডেতে এক বছর পর খেলতে নামবে বাংলাদেশ। লম্বা একটা সময় এভাবে বসে থাকাটা অসহনীয়ই মনে হচ্ছে তামিম ইকবালের কাছে। দীর্ঘ সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে থাকার প্রভাব মাঠের পারফর্মেন্সেও পড়বে বলে আশঙ্কা বাংলাদেশের এই বাঁহাতি ওপেনারের। আগামী আগস্টে ভারত সফরে যাওয়ার কথা থাকলেও সেটা যে হচ্ছে না, তা নিশ্চিতই হয়ে গেছে। ফলে দীর্ঘ বিরতির পর আবার খেলার সুযোগ আসবে আগামী অক্টোবরে। এভাবে লম্বা সময় ধরে না খেললে সেটা মাঠের পারফর্মেন্সের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলেই আশঙ্কা করছেন তামিম। বলেছেন, ‘দারুণ একটা মৌসুম কাটানোর পর আমরা ছয় মাস ধরে খেলছি না। এটা অবশ্যই আমাদের ওপর প্রভাব ফেলবে। আমাদের বিপক্ষে খেলার জন্য সবারই আগ্রহী হওয়া উচিত। কিন্তু আমরা বসে আছি। আমরা জানি না যে ছয় মাস পর কীভাবে খেলতে পারব। জিম্বাবুইয়ে ছাড়া এমন কোন দল নেই, যারা এত লম্বা সময় বসে থাকে।’ টেস্ট খেলুড়ে সব দলই কাটাচ্ছে ব্যস্ত সময়। টি২০ বিশ্বকাপের পর অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ খেলেছে ত্রিদেশীয় সিরিজ। শ্রীলঙ্কা টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ খেলেছে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। পাকিস্তান গেছে ইংল্যান্ড সফরে। জিম্বাবুইয়ে সফর শেষে ভারত এখন প্রস্তুতি নিচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের। আগামী জুলাই-আগস্টে নিউজিল্যান্ডও যাবে জিম্বাবুইয়ে ও দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে। সবারই কাটছে ব্যস্ত সময়। শুধু বাংলাদেশই পাচ্ছে না আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার সুযোগ। এভাবে টানা ছয় মাস বসে থাকতে হলে সব দলের পারফর্মেন্সেই নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মতো দিয়েছেন তামিম, ‘যে কোন শীর্ষ দলকে ছয় মাসের জন্য বসে থাকতে বলেন। আট মাস বসে থাকার পর তারা কেমন খেলছে, সেটা দেখতে পাবেন। আগে যেভাবে খেলত, তারা কোনভাবেই আর সেভাবে খেলতে পারবে না।’ ২০১৫ সালে সত্যিই দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটের নজর কেড়েছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। ওয়ানডে সিরিজে হারের স্বাদ দিয়েছিলেন পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো শক্তিশালী দলগুলোকে। বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো পৌঁছে গিয়েছিল বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত। এ বছরের শুরুতে এশিয়া কাপেও শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনাল খেলেছিলেন মাশরাফিরা। এত সাফল্যের পরও অন্য দেশগুলো কেন বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলতে আগ্রহী হচ্ছে না, তা কিছুতেই ভেবে পাচ্ছেন না তামিম। তিনি বলেছেন, ‘ছয় মাস ধরে বসে থাকাটা কোন কিছুরই ন্যায্যতা দিচ্ছে না। পাঁচ বছর আগে যেমন খেলতাম, এখনও তেমন খেললে তবু কিছু বোঝা যেত। তখন আমাদের ফলাফলটা ছিল অনুমানযোগ্য। কিন্তু এত ভাল নৈপুণ্য দেখানোর পরও তারা কেন আমাদের বিপক্ষে খেলতে চায় না, আমি জানি না।’
×