ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঘরে ঘরে ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ৩০ জুন ২০১৬

ঘরে ঘরে ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি

স্টাফ রিপোর্টর ॥ ঈদ-উল-ফিতরকে সামনে রেখে রাজধানী ঢাকাসহ দেশে ঈদের জামাতের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান ঈদ-উল-ফিতর। আর কয়েকদিন পরই পালন হবে বৃহৎ এ ধর্মীয় উৎসব। ঈদ-উল-ফিতরকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে ঈদ উদযাপনেরও প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে। রমজান মাসের হিসাব অনুযায়ী আজ বৃহস্পতিবার শেষ হচ্ছে ২৪ রমজান। বাংলাদেশ এ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি জানিয়েছে এবারের রমজান মাস ২৯ দিনে হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এ হিসাবে রোজাও হবে ২৯টি। আর ২৯ রোজা হলে ঈদ-উল-ফিতর পালিত হবে আগামী ৬ জুলাই বুধবার। এ হিসাবে রমজানের বাকি আছে আর মাত্র ৫টি। ইতোমধ্যে সারাদেশে ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। ঈদ কেনাকাটও প্রায় শেষের পথে। আগামীকাল শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে ঈদের দীর্ঘ ছুটি। ছুটির প্রথম দিন থেকেই মানুষের ঘরে ফেরার ঢল শুরু হবে। ইতোমধ্যে নির্বিঘেœ ঘরে ফিরতে অগ্রিম টিকেট সংগ্রহ করেছে অনেকেই। এবারের রমজানে শেষ জুমবার পড়ছে আগামীকাল শুক্রবার। ওইদিন বিশ্বের মুসলমানরা আল কুদস্ দিবস হিসেবে পালন করে থাকে। এছাড়া আগামী শনিবার দিবাগত রাতে পালিত হবে পবিত্র লাইলাতুল কদর। বাংলাদেশ এ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক এফআর সরকার জানান আগামী ৪ জুলাই সোমবার বিকেল ৫টা ১ মিনিটে বর্তমান চাঁদের অমাবস্যা কলা পূর্ণ করে নতুন চাঁদের জন্ম হবে। এটি ওইদিন সন্ধ্যা ৬টা ৪৯ মিনিটে সূর্যাস্তের সময় দিগন্ত রেখার ৩ ডিগ্রী নিচে ২৯১ ডিগ্রী দিগংশে অবস্থান করবে। ফলে এ সন্ধ্যায় বাংলাদেশের আকাশে চাঁদ দেখা যাবে না। এটি পরদিন ৫ জুলাই মঙ্গলবার, সন্ধ্যা ৬টা ৪৯ মিনিটে সূর্যাস্তের সময় দিগন্ত রেখা হতে ৮ ডিগ্রী উপরে ২৮৫ ডিগ্রী দিগংশে অবস্থান করবে। প্রায় ৪২ মিনিট দেশের আকাশে অবস্থান শেষে সন্ধ্যা ৭টা ৩১ মিনিটে ২৮৯ ডিগ্রী দিগংশে অস্ত যাবে। এ সময় চাঁদের ২% অংশ আলোকিত থাকবে। দেশের আকাশ মেঘমুক্ত পরিষ্কার থাকলে একে ভালভাবে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। ওই সন্ধ্যায় সূর্যাস্তের পর আকাশে উদিত চাঁদের বয়স হবে ২৫ ঘণ্টা ৪৮ মিনিট। সবচেয়ে ভালভাবে দেখা যাবে সন্ধ্যা ৭টা ৮ মিনিটে। ইসলামী নিয়মানুযায়ী আগামী ৫ জুলাই সন্ধ্যায় নতুন চাঁদ দেখার সাপেক্ষে ৬ জুলাই বুধবার পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর পালিত হবে। এছাড়া ওইদিন থেকেই আরবি ১৪৩৭ হিজরীর শাওয়াল মাসের গণনাও শুরু হবে। এদিকে ঈদ-উল-ফিতরকে সামনে রেখে ঈদের জামাতের প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। দেশের প্রধান ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের প্রস্তুতি প্রায় শেষ হওয়ার পথে। রাষ্ট্রপতি, জাতীয় সংসদের সদস্য মন্ত্রী পরিষদের সদস্য ছাড়াও কূটনীতিকরা প্রধান ঈদের জামাতে নামাজ আদায় করবেন। এছাড়া রাজধানীতে প্রধান প্রধান ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে, জাতীয় সংসদ ভবনের পাশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ ও কেন্দ্রীয় মসজিদে। এছাড়া রাজধানীর প্রায় মসজিদগুলোতেও ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এর পাশাপাশি সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকেও প্রত্যেক ওয়ার্ডে আলাদা ঈদের জামাতের প্রস্তুতি নিয়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন জানিয়েছে প্রতি বছরের মতো এবারও রোজার ঈদের প্রধান জামাত হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে সকাল সাড়ে ৮টায় হবে। তবে আবহাওয়া প্রতিকূল হলে প্রধান জামাত সকাল ৯টায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে হবে। এছাড়াও এবার বায়তুল মোকাররম মসজিদে পাঁচটি ঈদ জামাত হবে। জাতীয় ঈদগাহ ময়দানসহ বায়তুল মোকাররমে নারীদের জন্যও ঈদের নামাজ পড়ার আলাদা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া প্রধান জামাতগুলোতে বিদেশী রাষ্টদূত ও কূটনৈতিকদের ঈদের নামাজের জন্য আলাদা জায়গা সংরক্ষণ করা হয়েছে। জাতীয় ঈদগাহে পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এদিকে এক মাস রোজা পালন শেষে সারাদেশে ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। আগমীকাল শুক্রবার থেকে প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে রাজধানী ছেড়ে যাবে সাধারণ মানুষ। এবারের ঈদের দীর্ঘ ছুটির কারণে পরিবারের সঙ্গে বেশি সময় কাটাতে পারবেন তারা। এজন্য ঈদের ছুটির শুরুতে তারা ফেরার প্রস্তুতি রয়েছে তাদের। রজমান শেষে ইসলামিক নিয়মানুযায়ী সামর্থ্যবানরা ইচ্ছামতো দান সদগা দিতে শুরু করেছেন। এছাড়া গরিব মানুষের ঈদের আনন্দের শরিক করতে ফিতরার হার নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। এবারের সর্বনিম্ন ফিতরার হার ধরা হয়েছে ৬৫ টাকা। এছাড়া সর্বোচ্চ ১ হাজার ৬৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
×