ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ ঋণ সহায়তা দিচ্ছে জাপান

প্রকাশিত: ২৩:৫৬, ২৯ জুন ২০১৬

বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ ঋণ সহায়তা দিচ্ছে জাপান

অনলাইন রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের বড় ৬ প্রকল্পে ১৭৩ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন ইয়েন বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১২ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা ঋণ দিবে জাপান। যা এ যাবত কালের মধ্যে সর্বোচ্চ। বুধবার (২৯ জুন) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে ঋণচুক্তিতে স্বাক্ষর করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব কাজী শফিকুল আযম এবং জাইকার প্রধান প্রতিনিধি মিকিও হেতেদা। অনুষ্ঠানে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান ও জাপানের রাষ্ট্রদূত মাসাতো ওয়াটানাবে উপস্থিত ছিলেন। জাপানের রাষ্ট্রদূত মাসাতো ওয়াতানাবে অনুষ্ঠানে বলেন, টাকার অংকে বাংলাদেশের জন্য এটিই সবচেয়ে বড় জাপানি ঋণ। এই চুক্তি অনুযায়ী, জাপানের ৩৭তম লোন প্যাকেজের আওতায় ওই অর্থ পাবে বাংলাদেশ। ঋণের জন্য বার্ষিক সুদের হার হবে মাত্র ০.০১ শতাংশ। ঋণ শোধ করতে হবে ৪০ বছরে। ঋণ চুক্তিতে রেয়াতকাল ধরা হয়েছে ১০ বছর; অর্থাৎ চুক্তির প্রথম দশ বছর পর থেকে ঋণের কিস্তি পরিশোধ শুরু হবে। এসময় অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে চেনা বাংলাদেশ অচেনা হয়ে যাবে। বদলে যাবে বর্তমান চেহেরা। সেতু, অবকাঠামো, জ্বালানি, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় জাপানের সহযোগিতায় এসব বড় প্রকল্প দেশ এগিয়ে নেবে। তিনি বলেন, সরকার দারিদ্র্য বিমোচনে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এ জন্য অবকাঠামো উন্নয়নসহ সব ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে। যে ৬টি মেঘা প্রকল্পে ঋণ ব্যবহার করা হবে তার মধ্যে-যমুনা রেল সেতু নির্মাণে ২ হাজার ৪৬৪ মিলিয়ন ইয়েন, সীমান্ত এলাকায় নেটওয়ার্ক ব্যবস্থার উন্নয়নে ২৮ হাজার ৬৯৮ মিলিয়ন ইয়েন, মেট্রোরেল প্রকল্পে ৭৫ হাজার ৫৭১ মিলিয়ন ইয়েন, মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ৩৭ হাজার ৮২১ মিলিয়ন ইয়েন, জ্বালানি সাশ্রয় এবং উন্নয়ন প্রকল্পে ১১ হাজার ৯৮৮ মিলিয়ন ইয়েন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্পে ১৬ হাজার ৯৯৬ মিলিয়ন ইয়েন ব্যয় করা হবে। ঢাকায় ২০ দশমিক ১ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রোরেল প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে পরামর্শক নিয়োগ, বিস্তারিত নকশা প্রণয়ন ও নির্মাণ কাজে জাইকা ১৬ হাজার ৫৯৪ কোটি দেবে। যমুনা নদীর ওপর প্রায় পৌনে ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে পৃথক একটি রেল সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বিদ্যমান বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুটি ডুয়াল গেজ ডাবল লাইনের এই সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই বছরের শেষ দিকে এই রেল সেতুর নির্মাণ শুরু করে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। যমুনা সেতুর ওপর রেল সেতু নির্মাণের প্রকল্প প্রস্তাব তৈরিসহ বেশ কিছু কাজ এগিয়ে রেখেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যেরে এই সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯ হাজার ৭৪১ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে জাইকা ৭ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা ঋণ দেবে। মাতারবাড়ি প্রকল্পের অধীনে মহেশখালির মাতারবাড়ি ও ধলঘাটা ইউনিয়নে ৬শ’ মেঘাওয়াট করে ১২শ’মেগাওয়াটের দুটি আলট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণ হবে। প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা। মাতারবাড়ি প্রকল্পে জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকা সহায়তা দেবে ২৮ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা। এরই অংশ হিসেবে দ্বিতীয় ধাপে সংস্থাটি প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে।
×