কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদ্যু বলেছেন, ব্রেক্সিট প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশকে এখন নতুন পথে অগ্রসর হতে হবে। এছাড়া ব্রেক্সিটের ফলে শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বজুড়েই প্রভাব পড়বে বলে তিনি জানিয়েছেন। মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হকের সঙ্গে বৈঠক করেন ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদ্যু। বৈঠক শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্তে বাংলাদেশেও প্রভাব পড়বে। শুধু বাংলাদেশ নয়, এর প্রভাব পড়বে গোটা বিশ্বে।
পিয়েরে মায়াদ্যু বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে বাংলাদেশ ডিউটি ফ্রি, কোটা ফ্রি, অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা ইত্যাদি পেত। এটা বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রতিটি দেশের জন্যই লাভজনক। তবে ব্রেক্সিটের ফলে এখন নতুন পথে বাংলাদেশকে অগ্রসর হতে হবে বলে তিনি জানান।
এক প্রশ্নের উত্তরে পিয়েরে মায়াদ্যু বলেন, যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসার ‘ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া’ ধীরে ধীরে কার্যকর করবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের রেজ্যুলেশন অনুযায়ী ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন হবে। এ ক্ষেত্রে কিছুটা সময় লাগবে বলেও তিনি জানান।
পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে ব্রেক্সিট ছাড়াও এশিয়া-ইউরোপ সম্মেলন (আসেম) নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে পিয়েরে মায়াদ্যু জানান। এ বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত বলেন, আগামী ১৫-১৬ জুলাই মঙ্গোলিয়ার উলানবাটোরে আসেম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ওই সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কাউন্সিলের প্রেসিডেন্টের বৈঠকের বিষয়ে আলোচনা করেছি। দুই নেতার মধ্যে যেন একটি সফল বৈঠক হতে পারে সেজন্য আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি।
বৈঠক সূত্র জানায়, যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্তের পর ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্পর্কের বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেন। বৈঠকে পিয়েরে মায়াদ্যু জানিয়েছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্য বেরিয়ে গেলেও বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্পর্ক সমুন্নত থাকবে।
এদিকে ব্রেক্সিট প্রেক্ষাপটে নতুন কর্মকৌশল বের করার বিষয়ে মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক। এতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্য বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্তের পর বাংলাদেশের ভূমিকা কি হতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে নতুন করে বাণিজ্যিক সম্পর্ক তৈরির বিষয়ে বাংলাদেশকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে আলোচনা প্রাধান্য পায়।