ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সুসংবাদ দুঃসংবাদ

প্রকাশিত: ০৩:২৭, ২৯ জুন ২০১৬

সুসংবাদ দুঃসংবাদ

প্রতিদিন পত্রিকার পাতাজুড়ে সুসংবাদ যেমন থাকে, তেমনি থাকে দুঃসংবাদ। টিভি পর্দায়ও তাই। হিসাব করলে হয়ত দেখা যাবে যে, সুসংবাদের পরিমাণই বেশি, গুণে-মানে-পরিমাণে। তুলনামূলকভাবে দুঃসংবাদ অনেক কম। তবে যেটি লক্ষ্য করার বিষয়, তা হলো, দুঃসংবাদের ভিড়ে হারিয়ে যায় সুসংবাদসমূহ। জানি না, এ সম্পর্কে কোন গবেষণাকর্ম সম্পাদন করা হয়েছে কিনা! তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে এ নিয়ে গবেষণা করা যেতে পারে বৈকি। কিছু ক্ষেত্রে যে একেবারেই হয় না, তাও নয়। এর মধ্যে দেখলাম, দেশের লোকজন বিশেষ করে মহিলারা ভারতীয় কিছু টিভি চ্যানেল কেন বেশি দেখেন, তা নিয়ে তথ্য-পরিসংখ্যান সংগৃহীত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, দেশের ৬৫ শতাংশ মহিলা দেখেন ভারতীয় টিভি। অন্যদিকে টেলিভিশন রেটিং বা টিআরপি নিয়ে দেখা দিয়েছে বিতর্ক। বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের মালিক ও কর্মীরা তাতে আপত্তি জানিয়েছেন। এতে অংশ নিয়েছে সরকারও। তথাকথিত টিআর জরিপে দেখা যায়, কিছু প্রায় অজ্ঞাত অখ্যাত টিভি চ্যানেলের দর্শক রেটিং বেশি। সম্ভবত বিজ্ঞাপন পাওয়ার জন্যই বোধহয় এমনটি করা হয়ে থাকে। তবে প্রমাণিত হয়েছে যে, এটি সত্য নয় অধিকাংশ ক্ষেত্রে। অতঃপর এটি বাতিল করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। তা না হয় হলো, তবে দেশের অধিকাংশ দর্শক যে ভারতীয় ও বিদেশী টিভি চ্যানেল বেশি দেখেন, তার কী হবে! এটি কেন হয় ও হচ্ছে, তা নিয়ে রীতিমতো সিরিয়াস গবেষণা দরকার। শুধু শুধু হরে দরে অবারিতভাবে টিভি লাইসেন্স দিয়ে দিলেই হয় না। অনুষ্ঠানের মান ও বৈচিত্র্য কোথায়? নাটকগুলোতে সেই একঘেয়ে চরিত্র, একঘেয়ে নায়ক-নায়িকা, ঘুরে ফিরে একই মুখশ্রী, সর্বোপরি একই ধরনের গল্প। মানুষ দেখতে দেখতে ক্লান্ত, শ্রান্ত। ফলত টিভি বিমুখ। বহুকথিত টকশোগুলোতেও তাই। ঘুরেফিরে সেই একই বুদ্ধিজীবী, একই চেহারার বাচাল বিতার্কিক, ফকফকে আকাশেও যিনি মেঘ দেখতে অভ্যস্ত। সবচেয়ে দৃষ্টিকটু লাগে তখন যখন দেখি একই ব্যক্তি এক চ্যানেলে খ্যাপ মেরে পরমুহূর্তেই হাজির হচ্ছেন অন্য একটি চ্যানেলে। এত সময় তিনি পান কোথায়? তদুপরি একই বিষয়ে তিনি নতুন কী বলবেন? তবু দেখি হাল ছাড়েন না কেউ। দেশ ও জাতিকে উদ্ধার করার জন্য তাকে যেন বলতে হবেই। সুতরাং বলছেনও অবিরাম অবিরত অনর্গল। দর্শক-শ্রোতা সেটা আদৌ দেখছেন কিংবা শুনছেন কিনা, সেদিকে তার ভ্রƒক্ষেপ নেই। সুতরাং বাধ্য হয়ে দর্শক মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন দেশীয় চ্যানেল থেকে। আরও একটি বিষয় লক্ষণীয়। দেশীয় চ্যানেলগুলো যেন ক্রমশ পারিবারিক চ্যানেল হয়ে উঠছে। নিজেদের জন্মদিন, তা সে পারিবারিক, ব্যক্তিগত ও অন্যবিধ যা-ই হোক না কেন, সচিত্র সম্প্রচার করছে বেশ জোরেশোরে। একেবারে ঢাক-ঢোল কারা না কারাসহ নাচে-গানে ভরপুর, কেককাটা, ভুঁরিভোজ তো আছেই। কর্তৃপক্ষ একবারও ভাবেন না যে, মানুষ কেন সময় নষ্ট করে তাদের নিছক ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানগুলো দেখবে! মোটকথা, শতভাগ দেশাদারিত্ব গড়ে না উঠলে দেশে মানসম্মত টিভি চ্যানেল গড়ে উঠবে না কোনদিন। আরও একটি কথা বলে আপাতত শেষ করব চ্যানেল প্রসঙ্গটি। এই মুহূর্তে দেশে যত টিভি চ্যানেল আছে, তত দক্ষ সংবাদকর্মী নেই। এক্ষেত্রে আলাদাভাবে বিটিভির কথা বলছি না এ কারণে যে এর কোন দর্শকই নেই। অর্থাৎ বিটিভি কেউ দেখেন না প্রায়। জানি না, শুধু এই কারণে সরকার টিআরপি বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছে কিনা! ফিরে আসি সূচনা প্রসঙ্গে। সুসংবাদ দুঃসংবাদ। এটা প্রায় নিশ্চিতভাবেই বলা যায় যে, সংবাদপত্রের পাতায় এবং টিভিতেও দুঃসংবাদের তুলনায় সুসংবাদ থাকে অনেক বেশি। তবে দুঃসংবাদগুলো নিয়ে অনেক বেশি আলোড়ন, তর্ক-বিতর্ক ও বাদানুবাদ হয়ে থাকে এবং এর জের চলে দীর্ঘদিন ধরে। আর এজন্যই এগুলো বেশিদিন মনে থাকে দর্শক-শ্রোতার। একটি খুন হলে হৈ-চৈ পড়ে যায় চারদিকে। মানুষ আহা-বাহা-হাহাকার করে, অনেক ক্ষেত্রে মাতম পর্যন্ত। কিন্তু বাংলাদেশী একজন বিজ্ঞানী মহাকর্ষ তরঙ্গ আবিষ্কারের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হলে মানুষ তাতে তেমন সাড়া দেয় না। মনেও রাখে না। এর একটা কারণ এই হতে পারে যে, মহাকর্ষ তরঙ্গ আমাদের স্পর্শ করে না। তবে ক্রসফায়ারে ফাহিম নিহত হলে আমরা আলোড়িত হই। শরিফ ওরফে রানা নিহত হলে আমরা তার আসল পরিচয় জানার জন্য ব্যগ্র হয়ে পড়ি। কেন? সেটা কী নেতিবাচক খবরের প্রতি আমাদের পক্ষপাত তথা দুর্বলতা! তথাকথিত মানবাধিকার রক্ষার জন্য মায়াকান্না। নাকি নিছক সরকারের বিরোধিতা? অথচ এটা তো দিবালোকের মতো সত্য যে, ফাহিম এক অধ্যাপককে খুন করতে গিয়েছিল। শরিফ তার কার্যক্রমের সাক্ষ্য-প্রমাণ রেখেছে ভিডিও ফুটেছে। তাহলে মানবাধিকার রক্ষার নামে জঙ্গীদের প্রতি কারও কারও এহেন পক্ষপাত কেন? আরও একধাপ এগিয়ে গিয়ে এমনকি সরকারেরও ব্যর্থতার দায় তথা পদত্যাগের দাবি পর্যন্ত ওঠে। কই আমেরিকায় এক জঙ্গী কর্তৃক অরল্যান্ডোর এক নৈশ ক্লাবে ঢুকে এককাতারে ৪৯জন নিরীহ মানুষ হত্যার দায়ে সেখানে তো ওবামার পদত্যাগের দাবি ওঠেনি। রিপাবলিকানরা এর জন্য দাবিও জানায়নি যে, সমস্যার সমাধানে সরকারকে বসতে হবে তাদের সঙ্গে। বরং ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্রমাগত মুসলিম বিদ্বেষের প্রতিবাদে ওবামা বলেছেন, সন্ত্রাসকে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে হবে না। প্রকৃত অর্থে সন্ত্রাসীর কোন ধর্ম নেই। অন্যদিকে তিনি অরল্যান্ডো হত্যাকা-ে আইএসের কোন সম্পৃক্ততা নেই বলেও জোরালো গলায় অস্বীকার করেছেন। অথচ আমাদের দেশে ঠিক এর উল্টো। একশ্রেণীর বুদ্ধিজীবী ও সংবাদপত্র আইএসের অস্তিত্ব প্রমাণের জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন। এতে করে দেশের এবং তাদের আখেরে কী লাভ হবে, কে জানে! মোটকথা, বিশ্ব দরবারে আমরা নিজেরাই নিজেদের অস্তিত্ব বিপন্নপ্রায় ও বিপদগ্রস্ত করে তুলছি। সমূহ ভাবমূর্তি সঙ্কটে ফেলে দিতে চাইছি দেশ ও জাতিকে। রবীন্দ্রনাথের ভাষা ধার করে বলি, ‘সম্মুখে ঠেলিছ যারে, সে তোমারে পশ্চাতে ঠেলিছে।’ অথচ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের অর্জন যথেষ্ট ও গৌরবোজ্জ্বল। যুক্তরাষ্ট্রের লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডারে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করছেন বাংলাদেশের বিজ্ঞানী ড. শাহরিয়ার ও ড. দীপঙ্কর তালুকদার। মহাবিজ্ঞানী আইনস্টাইন কল্পিত মহাবিশ্বের তরঙ্গ অনুসন্ধানে তারা ফলপ্রসূ অবদান রেখেছেন। কোন কোন বাংলাদেশী ক্যান্সারের সর্বাধুনিক প্রতিকারের গবেষণায় নিরত। তিনজন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূুত রাজনীতিক ইতোমধ্যে ব্রিটেনের পার্লামেন্টে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। অচিরেই মন্ত্রীও হবেন কেউ কেউ। ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর কথা তো ভুলে যাওয়ার নয়। বিখ্যাত পর্বতারোহী ওয়াসফিয়া তো সেভেন সামিট জয় করে ফেলেছেন। সর্বশেষ, ২০১৫ সালে ‘গ্রেট ব্রিটিশ বেক অফ’ প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত নাদিয়া হুসেইন চ্যাম্পিয়ন হয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন বিশ্বে। রানী এলিজাবেথের ৯৪তম জন্মদিনে অরেঞ্জ কেক বানানোর অর্ডার প্রাপ্তিও তার জন্য গৌরবের নিঃসন্দেহে। মনে রাখতে হবে যে, বেকারি কিংবা কনফেকশনারি আইটেম বানানোর কোন ইতিহাস-ঐতিহ্য আমাদের ছিল না আদৌ। সেক্ষেত্রে নাদিয়া সে দেশে গিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন সেরা ব্রিটিশ সেফ বেকার, মোটেও চ্যাট্টিখানি কথা নয়। সেই নাদিয়া দ্য গার্ডিয়ানের সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে কিছু কথা বলে পরিণত হয়েছেন বিতর্কের কেন্দ্রবিদ্যুতে। নাদিয়া বলেছেন, বাংলাদেশে চেয়ারে বসে খাওয়ার কোন সংস্কৃতি ছিল না। সেই ঐতিহ্য রক্ষার্থে আমার বাবা ব্রিটেনে গিয়েও আমাদের বাসায় কখনও ডাইনিং টেবিল ঢুকতে দেননি। নাদিয়া এও বলেছেন যে, বাংলাদেশে খাবারের পরে ডেজার্টের কোন সংস্কৃতি ছিল না। ব্যস। এই নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক ও হৈ-চৈ। সেখানকার অনেক বাংলাদেশী রীতিমতো বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন নাদিয়ার মন্তব্যে। তারা বলছেন, নাদিয়া কোন ধারণা না নিয়েই এমন মন্তব্য করেছেন। মূলত এটি একটি অহেতুক বিতর্ক। সত্যিই তো এ দেশে কোন ড্রাইনিং টেবিলের সংস্কৃতি ছিল না। এখানে সাধারণভাবে মাটিতে অথবা জলপীঁড়ি পেতে অথবা সম্ভ্রান্ত হলে ফরাস পেতে দস্তরখানার নিয়ম প্রচলিত ছিল। চেয়ার-টেবিল এসবই তো বিদেশী টার্ম, বহিরাগত। ডেজার্টের বিষয়টিও সত্যি। ডিসকভারি চ্যানেলে ধারাবাহিকতভাবে সম্প্রচারিত রোডসের ‘ইন্ডিয়ান ফুডস’ দেখার সুযোগ হয়েছে আমাদের। যেখানে তিনি সারা উপমহাদেশ চষে বেড়িয়ে ভারতীয় বিশেষ বিশেষ খাবার-দাবার অনুসন্ধান করেছেন। পরে এ নিয়ে লন্ডনে তার হোটেলে ভারতীয় খাবারের একটি উৎসবও করেছেন। তাতে সবই ছিল ভারতীয় খাবার। তবে শেষ পাতে ডেজার্ট হিসেবে পরিবেশিত হয়েছিল ব্রিটিশ পুডিং। রোডসের মতে, তিনি উপমহাদেশে কোন ভাল ডেজার্ট খুঁজে পাননি। আর যাই হোক না কেন, রসগোল্লা, সন্দেশ, দৈ, ফিরনি, মিষ্টান্ন, জর্দা তো ডেজার্ট নয়! সেই প্রেক্ষাপটে নাদিয়া হুসেইন ভুলটা কী বলেছেন, বোধগম্য হলো না। এর পাশাপাশি যদি বলি, উপমহাদেশের খাদ্য সংস্কৃতি বা ফুড কালচারও আদৌ ভাল নয়, তাহলে ভুলটা কোথায় হবে? জনকণ্ঠেই প্রথম পৃষ্ঠায় বক্স করে খবর বেরিয়েছে যে রাজধানীর কোন দোকানের ইফতারিই নিরাপদ নয়। তা সে ফুটপাথ হোক কিংবা হোক না কেন পাঁচতারা হোটেল! কেননা, এখানে প্রায় প্রতিটি মূল উপাদানেই বিভিন্ন ধাপে ও প্রক্রিয়ায় মেশানো হয় ভেজাল। মাছ-মাংস, ডিম, শাক-সবজি, মসলা, তেল, মুড়ি, গুড় থেকে ফলমূল পর্যন্ত। কৃত্রিমভাবে ফল পাকানোর জন্য ধোঁয়া থেকে রাসায়নিক পদার্থÑ যেগুলো মানবদেহ ও স্বাস্থ্যের জন্য সমূহ ঝুঁকিপূর্ণ। ময়দা ও চিনির সঙ্গে রাসায়নিক মিশিয়ে কেক, পাউরুটি ও বিস্কুট তৈরি করা হয় অধিকাংশ বেকারি ও কনফেকশনারিতে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের একটি দল সম্প্রতি চকবাজারের দুটো বেকারিতে অভিযান চালিয়ে জব্দ করে ৫০ কেজি ওজনের ২৯ বস্তা এ্যামোনিয়াম নাইট্রেট। এর তীব্র ঝাঁঝালো গন্ধে সেখানে তখন কেউ অবস্থান পর্যন্ত করতে পারছিলেন না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ্যামোনিয়াম নাইট্রেট মেশানো খাবার খেলে কিডনিসহ ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা। ভারতে সম্প্রতি পাউরুটিতে পটাশিয়াম ব্রোমেট ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটি ব্যবহারে পাউরুটির স্বাদ বাড়লেও থেকে যায় ক্যান্সারের ঝুঁকি। ভারতে সরকার বলছে, সে দেশে বিভিন্ন রকমের খাবার-দাবারের স্বাদ গন্ধ ও বাহার বাড়াতে ১১ হাজারের বেশি রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়, যা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ও ঝুঁকিপূর্ণ। ভাগ্যিস, সেরা ব্রিটিশ বেক অফ নাদিয়া হুসেইন এ বিষয়টি তেমন জানেন না! ব্যক্তিগত সাফল্য ও অর্জনের পাশাপাশি গত কয়েক বছরের মধ্যে দেশের মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে অনেক। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রকাশিত ২০১৪ সালের মনিটরি দ্য সিচুয়েশন অব ভাইটাল স্ট্যাটিকটিকসের ফলাফলে বলা হয়েছে নারী-পুরুষ উভয়ের গড় আয়ু বেড়েছে। মাস-দিনের হিসাবে একজন মানুষ ৭০ বছর ১০ মাস ২৪ দিন বাঁচেন। তবে পুরুষের চেয়ে নারীরা গড়ে আড়াই বছর বেশি বাঁচেন। গড়ে নারীরা ৭২ বছর আর পুরুষরা ৬৯ দশমিক ৪ বছর বাঁচেন। এর জন্য অবশ্য পুরুষের মন খারাপ করার কোন কারণ নেই। কেননা, নারীরা কম চাপ নেন। অন্যদিকে পুরুষ বেশি অনিয়ম করেন। পুরুষের হার্ট এ্যাটাক বেশি হয় নারীর তুলনায়। গড় আয়ু বৃদ্ধি মানে সার্বিকভাবে জীবনমানের উন্নয়ন। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্যের কম বেশি প্রাপ্তি ও সচেতনতা। গত কয়েক বছরে জাতীয় প্রবৃদ্ধি উন্নীত হয়েছে ৭ দশমিক ২ পয়েন্টে। যেটা উল্লেখ করার বিষয় সেটা হলো, এ সময়ে বিশ্বের অনেক দেশের জাতীয় প্রবৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। বাংলাদেশের এহেন প্রবৃদ্ধি রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিয়েছে বিশ্বকে। বিশ্বব্যাংক, এডিবিসহ নানা আন্তর্জাতিক সংস্থা ও সংগঠন এর জন্য বাংলাদেশের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। এর মধ্যে অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন একটি স্বপ্নবিলাসী উচ্ছাভিলাষী বাজেট। এত বিপুল অঙ্কের বাজেট বাস্তবায়ন নিয়ে নানাজনে নানা কথা বলছেন। নেতিবাচক কথাই বেশি। দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ নিয়ে শঙ্কা অনেকের। তবে সর্বশেষ আঙ্কটাড ২০১৬ সালের বৈশ্বিক বিনিয়োগ প্রতিবেদনে যা বলেছে, তা সবিশেষ প্রণিধানযোগ্য। গত বছর দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৈদেশিক বিনিয়োগ এসেছে বাংলাদেশে, ২২৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার। এদেশে প্রবৃদ্ধির বিচারে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের পাশাপাশি ভারতকেও পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। এতসব সুসংবাদের ভিড়ে ঈদুল ফিতর আসছে টানা নয় দিনের সরকারী ছুটি নিয়ে। তার মানে দেশের মানুষ এখন আনন্দ-বিনোদনের অবকাশ পাচ্ছে। তার মানে যাবতীয় দুঃসংবাদকে ঠেলে দিয়ে উঠে আসছে সুসংবাদ।
×