ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ত্রিদেশীয় ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়ার শিরোপা

প্রকাশিত: ০৬:৩৩, ২৮ জুন ২০১৬

ত্রিদেশীয় ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়ার  শিরোপা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বড় ম্যাচের বড় দল অস্ট্রেলিয়া, সেটি আরও একবার প্রমাণ হলো। ত্রিদেশীয় ওয়ানডের শিরোপা হাসি স্মিথদের। ফাইনালে স্বাগতিক ক্যারিবীয়দের উড়িয়ে দিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অসিরা জিতল ৫৮ রানের বড় ব্যবধানে। বার্বাডোজের কেনিংটন ওভালে ৯ উইকেটে ২৭০ রানের ফাইটিং স্কোর গড়ে টস জিতে ব্যাটিং নেয়া অস্ট্রেলিয়া। জবাবে ৪৫.৪ ওভারে ২১২ রানে অলআউট হয় জেসন হোল্ডারের ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ব্যাটে ৩২ রান বলে ৩উইকেট চমৎকার অলরাউন্ড নৈপুন্যে ‘নায়ক’ মিচেল মার্শ। ৪.৩০ ইকোনমি রেটে ১১ উইকেট নিয়ে সিরিজসেরার পুরস্কার পকেটে পুড়েছেন পেসার জস হ্যাজলউড। মার্শ-হ্যাজলউডের পাশাপাশি এদিন অসাধারণ ব্যাটিং করা ম্যাথু ওয়েডেও (৫৭*) মুগ্ধ চ্যাম্পিয়ন অধিনায়ক। দারুণ একটি সিরিজ আয়োজনে ক্যারিবীয়দের প্রশংসায় ভাসিয়েছেন স্টিভেন স্মিথ। এক পর্যায়ে ৫৬ রানে টপঅর্ডারের ৫ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে বসে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ৬ ব্যাটসম্যানের কেউই ৫০ পেরোতে পারেননি। ১৭৩ রানে ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরেন ভাল কিছুর ইঙ্গিত দেয়া মিচেল মার্শও (৪৫ বলে ৩২)। অস্ট্রেলীয় ভক্তরা তখন টস জিতে স্মিথের ব্যাটিং বেছে নেয়ার যৌক্তিকতা খুঁজতে ব্যস্ত। এরপরই টেলএন্ডারদের নিয়ে ওয়েডের ওই অবিশ্বাস্য ব্যাটিং। ছোট ছোট তিনটি জুটি গড়ে দলকে যেভাবে চ্যালেঞ্জিং অবস্থানে নিয়ে গেছেন, সেটিকে অবিশ্বাস্য বললেও কম বলা হবে। সপ্তম উইকেটে মিচেল স্টার্ককে (১৭) নিয়ে ৩৮, অষ্টম উইকেটে কাল্টার নাইলের (১৫) সঙ্গে ২৮ এবং নবম উইকেট জুটিতে এ্যাডাম জাম্পাকে (৫) নিয়ে ২৬ রান যোগ করেন সাত নম্বরে নামা এই উইকটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। তাতেই শেষ ১৩ ওভারে ৩ উইকেট থেকে আসে মহামূল্যবান ৯৭ রান। ওয়েড ৫২ বলে তার ৫৭ রানের অপরাজিত ইনিংসটি সাজিয়েছেন ২ চার ও ৩ ছক্কায়। এরপরও হয়ত অস্ট্রেলিয়া নিশ্চিন্ত ছিল না। কারণ সদ্য টি২০ বিশ্বকাপজয়ী উইন্ডিজ দলে ছিলেন মারলন স্যামুয়েলস, ড্যারেন ব্রাভো, কাইরেন পোলার্ডের মতো ধুরন্ধর ইনফর্ম ব্যাটসম্যান। কিন্তু ক্যারিয়ারের দ্বিতীয়সেরা বোলিং ফিগার (৯.৪-১-৫০-৫) উপহার দিয়ে কাজটা সহজ করে দেন হ্যাজলউড। শুরুর পর শেষটাও করেন এই পেসার। মাঝে মিচেল মার্শের তিন ওভারের বিধ্বংসী এক স্পেলে শেষ ক্যারিবীয়রা। ৬২/১ থেকে উইন্ডিজ পরিণত হয় ৭২/৪Ñএ। এক ওভার বিরতি দিয়ে করা নিজের শেষ ৬ ওভারের স্পেলে মার্শ দিয়েছেন মাত্র ৭ রান! ২৭ রানে শেষ ৪ উইকেট পড়েছে স্বাগতিকদের। ওই চারটিই নিয়েছেন হ্যাজলউড। ক্যারিবীয়দের প্রতিরোধ বলতে জনসন চার্লসের ৪৫, দীনেশ রামদিনের ৪০, আর হোল্ডারের ৩৪। ব্যাটিংয়ে দুই বড় নাম ব্রাভো-স্যামুয়েলস দু-জনেই ফিরেছেন ব্যক্তিগত ৬ রান করে, বিগম্যান পোলার্ড ২০। ৫-২, ২০১২ সালের পর ত্রিদেশীয় ওয়ানডের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের অনুপাত। এ নিয়ে শেষ ১০ দেখায় ৯ বারই উইন্ডিজকে হারাল অসিরা। সিরিজে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন স্মিথ। তিন হাফ সেঞ্চুরিতে করেছেন সর্বোচ্চ ২৬৪ রান, গড় ৫২.৮০। ‘লীগ পর্বে কয়েকটি ম্যাচে আমার ভাল করিনি। তবে ফাইনালে ছেলেরা সর্বোচ্চটা দিয়েছে। বিশেষ করে ব্যাটিংয়ে ওয়েডের কথা আলাদা করে বলতে হয়। হ্যাজলউড আর মার্শও ছিল আউটস্ট্যান্ডিং। বাবার্ডোজের সুন্দর এই ভেন্যুতে নিজেদের খেলায় আমরা খুশি। সামনের দিনগুলোতে এই সাফল্য আমাদের অনুপ্রাণিত করবে। চমৎকার একটি ওয়ানডে সিরিজ আয়োজনের জন্য স্বাগতিক ক্যারিবীয়দেরও ধন্যবাদ।’ বলেন স্মিথ। স্কোর ॥ অস্ট্রেলিয়া ২৭০/৯ (৫০ ওভার; ওয়েড ৫৭*, ফিঞ্চ ৪৭, স্মিথ ৪৬, মিচেল মার্শ ৩২, বেইলি ২২, স্টার্ক ১৭, কাল্টার নাইল ১৫, খাজা ১৪; হোল্ডার ২/৫১, গ্যাব্রিয়েল ২/৫৮, ব্রেথওয়েট ১/৩২, নারাইন ১/৫৫) ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২১২/১০ (৪৫.৪ ওভার; চার্লস ৪৫, রামদিন ৪০, হোল্ডার ৩৪, নারাইন ২৩, পোলার্ড ২০; হ্যাজলউড ৫/৫০, মিচেল মার্শ ৩/৩২) ফল ॥ অস্ট্রেলীয়া ৫৮ রানে জয়ী ম্যাচসেরা ॥ মিচেল মার্শ (অস্ট্রেলিয়া) সিরিজসেরা ॥ হ্যাজলউড (অস্ট্রেলিয়া)।
×