ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মিতু হত্যার নেপথ্যে কে?

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ২৮ জুন ২০১৬

মিতু হত্যার নেপথ্যে কে?

মোয়াজ্জেমুল হক, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামে এসপি বাবুল আক্তারের পতœী মাহমুদা খানম মিতু হত্যায় কারা কারা অংশ নিয়েছে, কে প্রথমে মোটরসাইকেল দিয়ে ধাক্কা মেরে মিতুকে ফেলে দিয়েছে, কে ছুরিকাঘাত করেছে এবং সর্বশেষ কে শূট করে তাকে হত্যা করেছে সবই উদ্ঘাটিত হয়েছে। কিন্তু অনুদ্ঘাটিত রয়েছে এ হত্যাকা-ের নেপথ্যে মাস্টারমাইন্ড কে বা কারা রয়েছে এবং কেনইবা একজন উর্ধতন পুলিশ কর্মকর্তার পর্দানসীন পতœীকে প্রকাশ্য দিবালোকে এভাবে নৃশংস কায়দায় হত্যা করা হলো। কিলিং মিশনে অংশ নেয়া দুই সদস্য গ্রেফতার এবং স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদানের পরও গোলকধাঁধায় ঘুরপাক খাচ্ছে ভারতীয় ফিল্মি স্টাইলের মতো এ হত্যাকা- নিয়ে। কিলিং মিশনে অংশ নেয়া সকলেই ধরা পড়েছে। কিন্তু সোমবার পর্যন্ত গ্রেফতার দেখানো হয়েছে হত্যাকা-ে অংশ নেয়া দু’জনকে। অবশিষ্ট ছয়জন পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ সম্পন্ন করা হয়েছে। কিন্তু আটক বা গ্রেফতার কোনকিছু স্বীকার করছে না পুলিশ। এ ঘটনা নিয়ে কেন এত লুকোছাপা তা নিয়ে তদন্তে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা ছাড়া অন্যরা এবং এর পাশাপাশি উৎস্যুক মহল নানা বিভ্রান্তির গ্যাঁড়াকলে নিপতিত হয়ে আছে। সবচেয়ে বড় যে বিষয়টি সকলের কাছে প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে তা হলো উর্ধতন এক পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীকে প্রকাশ্য দিবালোকে নৃশংস কায়দায় কে বা কারা এবং কেন হত্যা করল। যেহেতু মিতুর বিরুদ্ধে কোন ধরনের অভিযোগ এ পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট মহল থেকে আসেনি এমনকি তার স্বামী এসপি বাবুল আক্তারও করেননি। স্বভাবতই এ প্রশ্নটি সকলের মনে ঘুরপাক খাচ্ছেÑ কেন এমন একজন হাউসওয়াইফকে ভাড়াটে খুনী দিয়ে মেরে ফেলা হলো। পুলিশী তদন্তে সন্দেহজনক অনেককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ব্যাপারে রহস্য জট খুলে যায়। এর পর একে একে পাকড়াও করা হয় কিলিং মিশনের সদস্য মুছা, নবী, ওয়াসিম, কালু, শাহজাহান, রাশেদ ও আনোয়ারসহ আটজনকে। এছাড়া সন্ত্রাসী ভোলা (স্বেচ্ছাসেবক লীগ নামধারী নেতা) সরবরাহ করেছে অস্ত্র। অর্থাৎ একটি পিস্তল ও একটি রিভলবার। গত ৫ জুন মিতু হত্যাকা- সংঘটিত হওয়ার এক সপ্তাহ পর এসব কিলার গ্রুপের সদস্যকে পুলিশী হেফাজতে আনা হয়। ডিবির কাউন্টার টেররিজম ইউনিট, পুলিশ ব্যুরো অব ইন্টেলিজেন্স, র‌্যাব, সিআইডি এবং আইজিপির নির্দেশে গঠিত পাঁচটি আলাদা কমিটির সদস্যদের উপর্যুপরি জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে ওই দিন সকালে এ সাতজন উপস্থিত হয়ে মুছা, ওয়াসিম, আনোয়ার ও নবী সরাসরি এ হত্যাকা-ের মিশন সম্পন্ন করে। অবশিষ্টরা ঘটনার আশপাশে রেকির দায়িত্বে ছিল। ঘটনার পর মুছা মোটরসাইকেল চালিয়ে নবী ও ওয়াসিমকে নিয়ে পালিয়ে যায়। বাকিরা পূর্ব পরিকল্পনামতো ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে ওয়াসিম বলেছে, মুছাই শূট করেছে মিতুকে। অপরদিকে আনোয়ার বলেছে, ওয়াসিমই মূল শূটার। রবিবার প্রেস ব্রিফিংয়ে সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহারও সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ওয়াসিমই মূল শূটার। সিএমপি কমিশনার ঘোষণা দিয়েছেন, ওয়াসিমই মূল শূটার। তাকে সহায়তা করেছে আনোয়ার। কিন্তু পুলিশের তদন্তের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, মিতুকে মোটরসাইকেল দিয়ে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছে মুছা। তার পেছনে বসা ছিল নবী। ওয়াসিম ছিল ঘটনাস্থলের ২০ থেকে ২৫ গজ অদূরে প্রিমিয়ার ভার্সিটিসংলগ্ন গলিতে। সে সেখান থেকে মোবাইল ফোনে পুরো বিষয়টি মনিটর করেছে। মিতুকে হত্যার জন্য অস্ত্র সরবরাহ করেছে ভোলা। এ কিলিং মিশনের নেতৃত্বে ছিল মুছা। মুছা এসপি বাবুল আক্তারের দীর্ঘদিনের একজন বিশ্বস্ত সোর্স। মুছা শুধু বাবুল আক্তার নয়, অন্য বহু পুলিশ কর্মকর্তা এমনকি গোয়েন্দা সংস্থাসমূহেরও সোর্স হিসেবে কাজ করে থাকে। আন্ডারওয়ার্ল্ডের সন্ত্রাসী, চোরাচালান, স্বর্ণপাচার, পেশাদার খুনী চক্রের সম্পর্কে তার রয়েছে ব্যাপক ধারণা, যে কারণে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বহু কর্মকর্তার কাছে তার কদর রয়েছে। কিন্তু এ হত্যাকা-ের ২১ দিন পর পুলিশ শুধুমাত্র দু’জন অর্থাৎ ওয়াসিম ও আনোয়ারকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করিয়েছে। গত রবিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় মহানগর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হারুন উর রশিদের আদালতে এ দুই আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে, যা শেষ হয় প্রায় ৯টায়। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান শেষে আসামিদের কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়। সূত্র জানায়, ওয়াসিম ১৪ পৃষ্ঠা ও আনোয়ার ১০ পৃষ্ঠা জবানবন্দী দিয়েছে। জবানবন্দী শেষে ম্যাজিস্ট্রেট হারুন উর রশিদ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীর কপি সঙ্গে নিয়ে আদালত ত্যাগ করেন। তার নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেন এ্যাডিশনাল উপ-পুলিশ কমিশনার কাজী মোত্তাকী ইবনু মিনান। জবানবন্দীতে আসামিদ্বয় কী বলেছে তা সোমবারও জানা যায়নি। তবে যা জানা গেছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, মুছা তাদের মোটা অঙ্কের অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে এ হত্যাকা- ঘটিয়েছে। এমনকি আসামিরা এও নাকি বলেছে, তারা জানত না ওই মহিলা একজন পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী ছিলেন। তাদের বলা হয়েছে অপকর্মে লিপ্ত এবং জঙ্গীপনায় জড়িত এক মহিলাকে মেরে ফেলতে হবে। সে অনুযায়ী মুছাকে একটি মোটরসাইকেলও কিনে দেয়া হয়েছে। কিন্তু মোটরসাইকেল কে কিনে দিয়েছে আসামিদ্বয় তা জানে না। তবে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে তারা হত্যাকা-ের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অকপটে স্বীকার করেছে। সূত্র জানায়, ঘটনাটি অনেকটা ভারতীয় চলচ্চিত্রের মতো চিত্রায়িত হয়েছে। মূল গডফাদার কে তা দ্বিতীয় ব্যক্তি জানে না। দ্বিতীয় ব্যক্তির পরিচয় জানে না কিলিং মিশনে অংশগ্রহণকারী সন্ত্রাসীরা। তাহলে এ পর্যন্ত একটি বিষয় স্পষ্ট যে, মিতু হত্যার আসল নায়ক কে তা এখনও অজ্ঞাতই রয়ে গেছে। এছাড়া কেন তাকে এভাবে হত্যা করা হলো তাও রহস্যের বেড়াজালে আটকা আছে। তবে সিএমপি সূত্রে বলা হয়েছে, সহসা আরও কয়েকজন কিলিং মিশনের সদস্যকে তারা আটক করতে সক্ষম হবে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সব আসামি পুলিশের আওতায় চলে এলে তদন্ত কার্যক্রম একদিকে যেমন শেষ হবে, তেমনি অপরদিকে হত্যার রহস্যও উদ্ঘাটিত হবে। কিন্তু পুলিশী কার্যক্রম নিয়ে বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন, ঘটনার ধারাবাহিকতা তা বলছে না। সিসিটিভির ফুটেজে মোটরসাইকেলযোগে আসা তিন কিলার ধরা পড়েছে। পাশাপাশি আরও যে পাঁচজন রেকিতে ছিল তারাও পুলিশের আওতায় এসেছে। এদের কাছ থেকে হত্যাকা- এবং যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের মুখোশ উন্মোচন করা হয়েছে। কিন্তু এ ঘটনার মাস্টারমাইড কে তা কি কিলার গ্রুপের পক্ষ থেকে পুলিশকে জানানো হয়নি? অবশ্যই পুলিশ কর্মকর্তারা বিষয়টি অবগত হয়েছেন এবং তা বিভিন্নভাবে ইতোমধ্যে চাউরও হয়েছে। বিভিন্ন মিডিয়ায় ইনিয়ে-বিনিয়ে বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে নানা তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু ঘটনার তদন্তের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা এবং মনিটরিংয়ের কাজে জড়িতরা এ ব্যাপারে মুখে কুলুপ এঁটেছেন এবং তদন্তে জড়িত সব সংস্থা কর্মকর্তাদের মিডিয়ার কাছে কোন তথ্য দেয়ার ব্যাপারে বারণ করে দিয়েছে। ফলে সকলেই পুরো ঘটনা জেনেও কিছুই জানেন না বলে মিডিয়াকর্মীদের জানান দিচ্ছেন। এদিকে আরও প্রশ্ন উঠেছে, যেহেতু কিলিং মিশনের সঙ্গে জড়িত সকলেই এখন পুলিশ হেফাজতে রয়েছে, সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র শূটার ওয়াসিম ও সহায়তাকারী আনোয়ারকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হলো। অথচ বাকিরাও পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। আটকের পর থেকে তাদের রাখা হয় সিএমপির দামপাড়া পুলিশ লাইনসে। এমনকি বাবুল আক্তারের সঙ্গে মুখামুখি করাতে ঢাকায় ডিবি অফিসেও নিয়ে যাওয়া হয়। রবিবার এদের পুনরায় চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয় এবং এদের মধ্য থেকে ওয়াসিম ও আনোয়ারকে হত্যাকা-ে আসামি করে আদালতে সোপর্দ করা হয়। বাকিদের ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত না হওয়ায় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে অচিরেই অন্যরাও ধরা পড়বে। অথচ ওরা সকলেই ধরা পড়েছে এবং পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে এদের আটক রাখা এবং কেন মামলায় আসামি করা হচ্ছে না তা রহস্যময় রয়ে গেছে। উল্লেখ্য, গত ৫ জুন এসপি বাবুল আক্তার পতœী মিতু তার পুত্র মাহিরকে স্কুলগামী বাসে তুলে দিতে হেঁটে ১০০ গজের মতো পথ অতিক্রম করতেই হত্যাকা-ের শিকার হন। স্বাভাবিক স্কুল সময়ের এক ঘণ্টা আগে ওই দিন মিতু কেন ঘর থেকে বের হয়েছিলেন তার সঠিক কোন তথ্য মেলেনি। তবে বিভিন্নভাবে বলা হয়েছে, কারও টেলিফোনে বা এসএমএস পেয়ে স্কুলে আগেভাগে যাওয়ার সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে এমন তথ্য জেনে তিনি নির্ধারিত সময়ের আগে ঘর থেকে বের হয়েছিলেন। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ বলেছে, তাদের পক্ষ থেকে কোন এসএমএস দেয়া হয়নি। উল্লেখ্য, বাবুল আক্তারের প্রথম পুত্র মাহির চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলের প্রথম শ্রেণীর ছাত্র। তার দ্বিতীয় সন্তান কন্যা তাবাসসুম তাসনিম টাপুর। প্রতিদিন বাবুল আক্তারের রানার সাদ্দাম মাহিরকে স্কুলগামী বাসে তুলে দিয়ে আসে। কিন্তু ওই দিন সাদ্দাম আসেনি। এ ব্যাপারে বিভিন্নভাবে জানা গেছে, মিতুই নাকি ওই দিন সকালে তাকে আসতে বারণ করেছিলেন। বলেছিলেন দুপুরের পরে আসতে। প্রসঙ্গত, এসপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত বাবুল আক্তার ওই দিন পুলিশ সদর দফতরে যোগ দেয়ার জন্য ঢাকায় ছিলেন। যোগ দেয়ার প্রায় আড়াই ঘণ্টা আগে স্ত্রী মিতু নির্মমভাবে সন্ত্রাসীদের উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত ও গুলিতে প্রাণ হারান। এ ঘটনার পর পুলিশ সন্দেহজনকভাবে হাটহাজারী থেকে শিবির নেতা আবু নসর গুন্নু, মেহেদীবাগ থেকে রবিনকে গ্রেফতার করা হয় এবং চট্টগ্রাম জেলা কারাগারে বন্দী জেএমবি নেতা বুলবুলকে শ্যোন এ্যারেস্ট করা হয়। এদের রিমান্ডে আনা হয়। কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদে কোন তথ্য পাওয়া না যাওয়ায় তাদের আদালতের নির্দেশ জেলহাজতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এর পর একে একে আটক হয় ওয়াসিম, আনোয়ার, নবী, কালু, শাহজাহান, মুছা, রাশেদ ও ভোলা। রবিবার প্রথমবারের মতো এ ঘটনা নিয়ে মুখ খোলেন সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহার। তিনি বলেছেন, ওয়াসিম মূল শূটার। আর তাকে সহায়তা করেছে আনোয়ার। তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। কিন্তু রবিবার রাতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে ওয়াসিম বলেছে, সে ব্লাঙ্ক ফায়ার করেছে। মিতুকে গুলি করে হত্যা করেছে মুছা। অপরদিকে গ্রেফতারকৃত আনোয়ার তার জবানবন্দীতে বলেছে, ওয়াসিমই মিতুকে গুলি করে হত্যা করেছে। দু’জনের জবানবন্দী মিতুকে হত্যা নিয়ে পরস্পরবিরোধী। তবে সাতজন কিলিং মিশনে অংশ নিয়েছে বলে দু’জনই স্বীকার করেছে। দু’জনই বলেছে, মুছার আহ্বানে অর্থের লোভে তারা সাড়া দিয়ে এ হত্যাকা-ে অংশ নিয়েছে। এ নিয়ে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করা হয়েছে। ফলে জবানবন্দীতে আসামিদ্বয় কার নির্দেশে এ হত্যাকা- ঘটিয়েছে তা আদৌ বলেছে কি-না তা অজ্ঞাত রয়েছে। তবে পুলিশী সূত্রে বলা হয়েছে, আসামিদ্বয় মুছা পর্যন্ত তথ্য দিয়েছে। মুছা কার নির্দেশে তাদের ভাড়া করেছে তা তারা জানে না। তবে পুলিশী জিজ্ঞাসাবাদে তারা নানা তথ্য দিয়েছে, যা নিয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় বিভিন্ন তথ্য প্রকাশ হয়েছে। এ পর্যন্ত হত্যা কারা করেছে, কিভাবে করেছে, কারা কিলিংয়ে সরাসরি ছিল এবং কারা রেকির কাজে ছিল সবই উদ্ঘাটিত হয়েছে। শুধু অনুদ্ঘাটিত রয়েছে এ হত্যাকা-ের মাস্টারমাইন্ড কে বা কারা, যা নিয়ে রহস্য বিভিন্নভাবে ঘনীভূতই হচ্ছে। এ ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের কথা পুলিশের বিভিন্ন সূত্রে জানান দেয়া হচ্ছে। যারা তদন্তের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাদের অনেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন নানা কথা। এসব নিয়ে পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা বিব্রতকর অবস্থায় রয়েছেন। দেশে বহু হত্যাকা- হয়েছে। অধিকাংশ হত্যাকা-ের নেপথ্য ঘটনাও উদ্ঘাটিত হয়েছে, আসামিও ধরা পড়েছে। বিচার হয়েছে। রায় কার্যকর হয়েছে। কিন্তু মিতু হত্যাকা-ে অংশ নেয়া হত্যাকারীদের পরিচয় এ পর্যন্ত উদ্ঘাটিত হয়েছে। কিন্তু রহস্যের বেড়াজালে আটকে গেছে হত্যার মূল প্ল্যানার কে বা কারা।
×