ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ফারহানা আদৃতা

বিদেশী মিউজিক অকালে হারিয়ে গেল ক্রিস্টিনা গ্রিমি

প্রকাশিত: ০৩:৫৪, ২৮ জুন ২০১৬

বিদেশী মিউজিক অকালে হারিয়ে গেল ক্রিস্টিনা গ্রিমি

বাইশ বছর বয়সী প্রাণোচ্ছল গায়িকা ক্রিস্টিনা গ্রিমি। যে কোন কনসার্টের মধ্যমণি হতে খুব বেশি সময় লাগে না তার। বিখ্যাত সব শিল্পীদের জনপ্রিয় গান গেয়ে কনসার্টের দর্শক শ্রোতাদের মাতিয়ে তুলতে চমৎকার দক্ষতা তার। সেদিনও ক্রিস্টিনা যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের অরল্যান্ডোতে একটি কনসার্টে গান শেষে ভক্তদের অটোগ্রাফ দিচ্ছিলেন। অনেকটা খোশ মেজাজে ছিলেন এই তন্বী গায়িকা। তখনও ভাবতে পারেননি ভয়ঙ্কর বিপদ ঘনিয়ে আসছে কিছুক্ষণের মধ্যে। আশপাশের কেউই কল্পনা করতে পারেনি কি ঘটতে যাচ্ছে। কাজেই দাঁড়িয়ে থাকা ২৭ বছর বয়সী যুবক কেভিন জেমস ক্রিস্টিনাকে লক্ষ্য করে গুলি করে। লুটিয়ে পড়ে সে গুলিবিদ্ধ হয়ে। ওদিকে গায়িকা ক্রিস্টিনাকে গুলি করে বন্দুকধারী আততায়ী কেভিন জেমস আত্মহত্যা করে। গুরুতর আহত অবস্থায় গ্রিমিকে অরল্যান্ডো আঞ্চলিক হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সম্ভাবনাময় এই জনপ্রিয় তন্বী গায়িকাকে হত্যার কারণ জানা না গেলেও আততায়ী কেভিন জেমসকে অপ্রকৃতস্থ বলে ধারণা করা হচ্ছে। গায়িকা ক্রিস্টিনা গ্রিমির হত্যাকা-ে স্তম্ভিত হয়ে গেছেন তার সহকর্মী, বন্ধুবান্ধব, শিল্পী সমাজ এবং অগণিত ভক্ত। একাধারে গায়িকা এবং গান রচনায় নিজের প্রতিভার প্রমাণ দিয়ে ক্রিস্টিনা খুব কম সময়ের মধ্যে সবার মন জয় করে নিয়ে ছিলেন। সমসাময়িক অনেক বিখ্যাত জনপ্রিয় শিল্পীদেরও দারুণ প্রিয় হয়ে উঠেছিলেন এই তরুণী। কারণ তাদের অনেক হিট গান গেয়েছেন গ্রিমি। মিলি সাইরাস, টেইলর সুইফট, কেটি পেরি, ওয়ান রিপাবলিক, জেসন মার্জ এমনকি এলভিম প্রিসলির বহু হিট গান গেয়ে বাজিমাত করেছেন ক্রিস্টিনা গ্রিমি। ২০১৪ সালে এনবিসির ‘দ্য ভয়েস’ প্রতিযোগিতার ৬ষ্ঠ সিজনে একজন প্রতিযোগী হিসেবে অংশগ্রহণ করে সবার মনোযোগ আকর্ষণ করেছিলেন তিনি। তৃতীয় স্থান দখল করার পর প্রতিযোগিতা থেকে বিদায় নিয়েছিলেন গ্রিমি। তার প্রশিক্ষক ছিলেন এ্যাডাম লেভিন। তিনি গ্রিমিকে লেবের ২২২ রেকর্ডসের জন্য গাইতে প্রস্তাব দেন প্রতিযোগিতা চলাকালেই। আরেক জনপ্রিয় শিল্পী লি ওয়েইনও তাকে সঙ্গে গাইতে অফার দেন প্রায় একই সময়ে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ক্রিস্টিন গ্রিমি আইল্যান্ড রেকর্ডসের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। নিউজার্সির মালটন এ বড় হয়েছেন ক্রিস্টিন। সেখানে ব্যাপিস্ট স্কুল এবং চেরোকি হাইস্কুলে পড়াশোনা করেছেন। তার মধ্যে ইতালীয় এবং রোমানীয় প্রভাব ছিল স্পষ্ট। খুব ছোটবেলা থেকেই সঙ্গীতের প্রতি তার অনুরাগ প্রকাশ পেয়েছিল। যখন তার বয়স মাত্র ৬ বছর তখনই বাবা ঠিক টের পেয়ে ছিলেন মেয়েটির মধ্যে সঙ্গীত প্রতিভা লুকিয়ে আছে তখনই ক্রিস্টিনাকে একটি পিয়ানে। কিনে দিয়েছিলেন তার বাবা। কিশোরী বয়স থেকে পিয়ানো বাজানো শুরু করেছিলেন, দিনে দিনে পারদর্শী হয়ে উঠেছিলেন ক্রিস্টিনা। নিজে নিজে গাইতেন পিয়ানো বাজিয়ে। কোন প্রশিক্ষক ছাড়াই কেবল অন্যের গান শুনে শুনে তা পিয়ানোতে তুলে নিতে পারতেন ক্রিস্টিনা গ্রিমি। ‘বিভিন্ন জনপ্রিয় শিল্পীর গান শুনে শুনে নিজেই কখন গায়িকা হয়ে গেছি টের পাইনি। অনেক শিল্পীই আমার আদর্শ। তাদের কাউকে আমি অনুকরণ করি না, কেবল তাদের গাওয়া গানগুলো নিজের মতো করে পরিবেশনের চেষ্টা করি। শ্রোতা দর্শক আমার গাওয়া সেই গান শুনে যখন উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তখন নিজেকে সার্থক মনে হয়। আনন্দে মনটা ভরে যায়। আমার মধ্যে ক্রিস্টিনা এ্যাগুইলেরার প্রভাব আছে কিছুটা অস্বীকার করব না, কিছুদিন আগে এক ভিডিও সাক্ষাতকারে কথাগুলো বলেছিলেন অকালে হারিয়ে যাওয়া সম্ভাবনাময় এই গায়িকা।
×