ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দালালের উৎপাতে অতিষ্ঠ রোগী

জনবল সঙ্কটে নাটোর সদর হাসপাতাল

প্রকাশিত: ০৪:০২, ২৭ জুন ২০১৬

জনবল সঙ্কটে নাটোর সদর হাসপাতাল

নিজস্ব সংবাদদাতা, নাটোর, ২৬ জুন ॥ চিকিৎসক ও জনবল সঙ্কট, পুরাতন যন্ত্রপাতির ব্যবহারসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতাল। ১৯৯৫ সাল থেকে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট নামেমাত্র আধুনিক সদর হাসপাতাল হলেও প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনায় সমন্বয়হীনতা এবং যথাযথ তদারকির অভাবে দায়সারা কাজের মধ্য দিয়ে চলছে হাসপাতালের সামগ্রিক কার্যক্রম। ফলে কাক্সিক্ষত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে জেলার হাজার হাজার মানুষ। জেলা সদরের এ হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে চলমান চিকিৎসক ও জনবল সঙ্কটসহ হ-য-ব-র-ল অবস্থা দেখার কেউ নেই। এখানে না আছে আধুনিক যন্ত্রপাতি-সরঞ্জামাদি, না আছে উন্নত চিকিৎসাসেবা প্রদানের ব্যবস্থা। উন্নত ও ভালমানের সেবা প্রদানে নার্স, ওয়ার্ডবয়সহ অন্যান্য শূন্যপদে কর্মচারী নিয়োগের বিকল্প নেই বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাবে বড় ধরনের কোন অপারেশন হয় না। রোগীর অবস্থা কিঞ্চিত ঝুঁকিপূর্ণ হলেই তাদের রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ অন্যত্র রেফার্ড করা হয়। সরকার অনুমোদিত ডাক্তারদের অর্ধেক পদ শূন্য পড়ে আছে এখানে। ফলে সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ থেকে বিনা চিকিৎসায় ফিরতে হচ্ছে রোগীদের। চিকিৎসার্থে বিভিন্ন ক্লিনিকগুলোতে যেতে বাধ্য হচ্ছে তারা। আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাবে রোগীরা বাইরে থেকে প্রয়োজনীয় টেস্ট করিয়ে আনে। হাসপাতালে যে কয়টি হাতেগোনা মেশিন আছে, তা দিয়ে খুব অল্পসংখ্যক রোগীরাই সেবা পায়। হাসপাতালটি চালু হওয়ার পরে যে সকল চিকিৎসককে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল তাদের অধিকাংশই বদলি হয়ে অন্যত্র চলে গেছে। তাদের স্থলে নতুন চিকিৎসক না আসায় চিকিৎসা সংক্রান্ত জটিলতা বেড়েছে অনেক গুণ। তবে চিকিৎসকের অভাব থাকলেও রোগীদের সেবা প্রদানে কোন সমস্যা হয় না বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সূত্র জানায়, নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে অনুমোদিত ৩৩ চিকিৎসকের মধ্যে বর্তমানে ১৭ জন এবং মঞ্জুরিকৃত ৫৫ জন নার্সের মধ্যে ৫৩ কর্মরত আছেন। এছাড়া হাসপাতালে ৩য় শ্রেণীর ২৫ কর্মচারীর মধ্যে ২০ জন কর্মরত থাকলেও ৪র্থ শ্রেণীর ৬৫ কর্মচারীর স্থলে কর্মরত আছেন মাত্র ৪২। হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ডে তিনের পরিবর্তে মাত্র একজন দায়িত্ব পালন করছেন। অন্যদিকে দালালের উপদ্রবে ভোগান্তির শেষ নেই দূরদূরান্ত ও প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের। সবকিছু ঠিকঠাক বুঝে নেয়ার আগেই দালালের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছে রোগীর সঙ্গে আসা লোকজন। হাসপাতালের নানা সমস্যার সুযোগ কাজে লাগিয়ে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে রোগীদের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সক্রিয় দালাল চক্র।
×