স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ‘করো অথবা মরো’- দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে যা হয়। আইপিএলে ঠিক সেই অবস্থায় তারকাখচিত রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু (আরসিবি)। টানা ব্যর্থতায় একেবারে খাদের কিনারে বিরাট কোহলির দল। শেষ চারের আশা বাঁচিয়ে রাখতে লীগ পর্বে নিজেদের শেষ তিনটি ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই- ঠিক তখনই শক্তিধর কলকাতা নাইট রাইডার্সকে উড়িয়ে দিয়ে ঘুরে দাঁড়ানো। আজ আরও একটি ‘মাস্ট উইন’ ম্যাচে আরসিবির প্রতিপক্ষ ইতোমধ্যে আসর থেকে ছিটকে যাওয়া কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব (৪ জয় ৮ হার)। কলকাতাকে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারানোর পর ১২ ম্যাচে ৬ জয় ও ৬ হারে পয়েন্ট টেবিলের পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে আরসিবি। কোহলি-এবি ডি ভিলিয়ার্সের ব্যাটে ভর করে চ্যালেঞ্জার্সরা আগের ম্যাচে রানের রেকর্ড গড়েছিল। এদিনও জ্বলে ওঠেন তারা। দু’জনকে ‘ব্যাটসম্যান-সুপারম্যান’ বলে অভিহিত করেছেন সতীর্থ ক্রিস গেইল। ঘরের মাঠ ইডেন গার্ডেন্সে ১৮৩ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোরই গড়েছিল কলকাতা। কিন্তু কোহলি-এবি তা-বে সেটি আর চ্যালেঞ্জ থাকেনি। ৮ বল বাকি থাকতেই ৯ উইকেটের বিশাল জয়। কোহলি ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৫১ বলে অপরাজিত ৭৫, ডি ভিলিয়ার্স ৩১ বলে সমান চার-ছক্কায় করেন অপরাজিত ৫৯ রান! ‘কোহলি আর ডি ভিলিয়ার্স অসাধারণ খেলছে। একই সঙ্গে ওরা যেন ব্যাটসম্যান আর সুপারম্যান! দ’জনই ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ফর্মে আছে। বিশেষত কোহলি। চাপের মুখেও যেভাবে ব্যাটিং করছে, তা সত্যিই অবিশ্বাস্য। তাদের প্রাপ্য সম্মান দিতে হবে। কোহলি যেভাবে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে, সেটা আরও দারুণ। এখন পর্যন্ত দলের ১২টি ম্যাচেই তারা বড় অবদান রেখেছে। আশা করছি, এটা চালিয়ে যাবে।’ বলেন ক্রিস গেইল। যিনি ব্যাড-প্যাচ কাটিয়ে এদিন ৩১ বলে ৪৯ রানের ইনিংস খেলেন।
গুজরাট লায়ন্সের বিপক্ষে আগের ম্যাচেও জ্বলে ওঠেন তারা। কোহলি ৫৫ বলে ১০৯, এবি ৫২ বলে অপরাজিত ১২৯Ñ দ্বিতীয় উইকেটে দু’জনে মিলে ২২৯, স্বীকৃত টি২০ ম্যাচে জুটিতে যা সর্বোচ্চ রানের নতুন রেকর্ড। সৌজন্যে আইপিএল ইতিহাসে রেকর্ড দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৪৮ রানের (৩ উইকেট, ২০ ওভার) ইনিংস গড়ে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু জিতেছিল ১৪৪ রানে। পরশু অপরাজিত ৭৫-এর মধ্য দিয়ে নতুন একটি রেকর্ড গড়েন কোহলি। ৩ সেঞ্চুরি ও ৫ হাফ সেঞ্চুরির সাহায্যে এবারের আসরে সর্বোচ্চ ৭৫২ রান তার। গড় ৮৩.৫৫! যা আইপিএলের এক আসরে সর্বোচ্চ রানের নতুন রেকর্ড। এক্ষেত্রে সতীর্থ গেইলকে (৭৩৩, ২০১২ সালে) পেছনে ফেলেন তিনি। ৫৯৭ রান নিয়ে এবার দ্বিতীয় স্থানে ডি ভিলিয়ার্স। ব্যাটিংয়ের সকল রেকর্ডই নিজেদের করে নেয়ার খেলায় মেতেছেন তারা। গেইল-এবি তো ব্যাটসম্যান-সুপারম্যানই।অন্যদিকে পাঞ্জাবের হারানোর কিছু নেই। নিজেদের শেষ ম্যাচে ১৭৯ রান করেও সানরাইজার্স হায়দরাবাদের কাছে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারে মুরলি বিজয়ের দল। সেদিন ৫৬ বলে ৯৬ রানের দুরন্ত এক ইনিংস খেলেন হাসিম আমলা। আছেন ডেভিড মিলার-গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের মতো মারকাটারি ব্যাটসম্যান। সন্দীপ শর্মা-মোহিত শর্মাদের নিয়ে বোলিং ততটা সমৃদ্ধ নয়। অবশ্য ব্যাঙ্গালুরুর বোলিংও দুর্বল। সুতরাং লড়াইটা হবে দু’দলের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে।