স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ব্যক্তিগতভাবে এবং ক্লাবের হয়ে অনেকগুলো খেতাব জেতা হয়েছে। তার দল রিয়াল মাদ্রিদ ইউরোপ সেরা হয়েছে ২০১২-১৪ মৌসুমে। বেশ কয়েকটা স্প্যানিশ লা লিগা শিরোপাও ছুঁয়ে দেখেছেন। আর ব্যক্তিগতভাবে ফিফা বর্ষসেরা হিসেবে মর্যাদার ব্যালন ডি’অর জিতেছেন তিনবার। প্রায় সবকিছুই তো জেতা হয়েছে। কিন্তু নিজ দেশ পর্তুগালের হয়ে এখন পর্যন্ত কিছুই জিততে পারেননি। অনেক অর্জনের মধ্যে এই একটিই বড় অতৃপ্তি ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর। ৩১ বছর বয়সী এ পর্তুগীজ ফরোয়ার্ড এবারই হয়তো নিজের শেষ ইউরো ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ খেলবেন। আর এখানেই সেই আক্ষেপটা ঘুচাতে চান তিনি।
পর্তুগাল জাতীয় ফুটবল দল এখন পর্যন্ত জিততে পারেনি কোন ধরনের আন্তর্জাতিক শিরোপা। মাত্র ১৬ বছর বয়সেই রোনাল্ডো খেলেছেন স্পোর্টিং লিসবনের অনুর্ধ-১৬, ১৭ ও ১৮ দলের হয়ে। দুই বছর পরই তাকে দলে নেয় ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের দল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। সে সময় এ্যালেক্স ফার্গুসন এই তরুণকে দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন। ৭ নম্বর জার্সি এখন রোনাল্ডোর জন্য বিশেষ একটি পরিচিতি পেয়ে গেছে। ২০০৪ সালেই আন্তর্জাতিক ফুটবলে নিজের প্রথম উপস্থিতি ঘটে তার। দুটি গোলও পেয়েছিলেন, পর্তুগাল ফাইনালে উঠেছিল ঘরের মাঠে ইউরো আয়োজন করে। কিন্তু গ্রীসের কাছে হেরে স্বপ্ন ভঙ্গ হয় পর্তুগাল ও রোনাল্ডোর। এর চার বছর পরেই রোনাল্ডো ম্যান ইউকে চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জিতিয়ে ইউরো খেলতে নামেন। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানির কাছে হেরে বিদায় নেয় পর্তুগীজরা। সে বছরই তিনি স্প্যানিশ ক্লাব রিয়ালে যোগ দিয়েছিলেন। ২০১২ ইউরো আসরে খেলতে নামার আগে রিয়ালের হয়ে পূর্বের সব রেকর্ড ভেঙ্গে এক মৌসুমে ৬০ গোল করেন রোনাল্ডো। বার্সিলোনার একক আধিপত্য খর্ব করে ২০১১-১২ মৌসুমে লা লিগা শিরোপা জয় করে রিয়াল। আবার ইউরোতেও ডেথ গ্রুপের শেষ ম্যাচে জোড়া গোলে হল্যান্ডের বিরুদ্ধে দলকে জিতিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠে পর্তুগাল। চেক প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে জিতে সেমিতে ওঠার পর স্পেনের বিরুদ্ধে হেরে বিদায় নিতে হয়।
কোনভাবেই ইউরোপের সেরা করতে পারেননি তিনি পর্তুগালকে। এবার আরেকটি সুযোগ। এবারই সম্ভবত শেষ। কারণ ২০২০ ইউরো খেলা হবে কিনা তা অনিশ্চিত ৩১ বছর বয়সী রোনাল্ডোর। এবার তিনি আরেকটি ব্যক্তিগত অর্জনের অপেক্ষায় আছেন। প্রথম ফুটবলার হিসেবে চারটি ইউরোতে গোল করার রেকর্ড গড়বেন তিনি। আর তিন গোল করলে ছুঁয়ে ফেলবেন ইউরোতে সর্বাধিক গোলের রেকর্ডধারী মাইকেল প্লাতিনিকে। এবার সেটা গ্রুপ পর্বেই হয়ে যেতে পারে। ইউরোতে নবাগত আইসল্যান্ড এবং হাঙ্গেরি ও অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে খেলতে হবে পর্তুগীজদের। কিন্তু রোনাল্ডো শেষ পর্যন্ত ইউরো জেতাতে পারবেন নিজ দেশকে? ২০০৪ সালে নিজের প্রথম ইউরো আসরে খেলতে নেমেছিলেন। রানার্সআপ হওয়ার পর ১৯ বছর বয়সী রোনাল্ডো বলেছিলেন, ‘আমার জন্য ক্যারিয়ার জুড়ে অনেক সুযোগ আছে ইউরোপ জয়ের। সেক্ষেত্রে এই হতাশা মুছে ফেলারও যথেষ্ট সুযোগ আছে।’ কিন্তু গত দুটি ইউরোতে পারেননি রোনাল্ডো। আগামী ১০ জুলাইয়ের ফাইনালে উঠতে পারলে এবং আবারও হারলে হয়তো ইউরোর পাট চুকেই যাবে এ তারকা ফরোয়ার্ডের।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: