ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নাঈমের শতকেও হার মোহামেডানের

প্রকাশিত: ০৬:৫২, ১৭ মে ২০১৬

নাঈমের শতকেও হার মোহামেডানের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ একদিনেই তিনটি সেঞ্চুরি কিছুদিন আগেও হয়েছিল। সোমবারও ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে (ডিপিএল) তিন সেঞ্চুরি দেখা গেল। এর মধ্যে শীর্ষে থাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে শতক হাঁকানো নাঈম ইসলাম স্বস্তি নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেননি। কারণ তার শতকের পরও হেরে গেছে মোহামেডান। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাবের কাছে ৬ উইকেটে হারলেও এখন পর্যন্ত চলতি আসরে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে সাদা-কালো শিবির। আর বল হাতে দুর্দান্ত করার পর ব্যাট হাতে দারুণ শতক হাঁকিয়ে কলাবাগান ক্রিকেট একাডেমিকে (সিএ) প্রথম জয় পাইয়ে দিয়েছেন মাহমুদুল হাসান। ফলে ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে শক্তিশালী দল গড়া আবাহনী লিমিটেড আবারও হেরেছে। কলাবাগান সিএ জয় পায় ৩ উইকেটে। আর বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে নুরুল হাসান সোহানের সেঞ্চুরিতে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জকে ৬০ রানে হারিয়েছে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। হেরেও শীর্ষে মোহামেডান মিরপুরে সোমবার বেশ সুস্থির হয়ে ব্যাট চালিয়েছেন এবং সেঞ্চুরিও আদায় করেছেন। কিন্তু দলকে টেনে বেশিদূর তুলতে পারেননি নাঈম। অবশ্য তার সেঞ্চুরিটা বড় রকমের লজ্জা থেকে বাঁচিয়েছে ডিপিএলের শীর্ষে থাকা মোহামেডানকে। দুই ইনফর্ম উপুল থারাঙ্গা (১০) ও মুশফিকুর রহীমও (৮) ব্যর্থ হন। মাত্র ৪২ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর নাঈমের ১৪৭ বলে ১০ চারে করা ১০০ রানের পরও ৪৭.৪ ওভারে মাত্র ১৮৮ রানে গুটিয়ে যায় মোহামেডান। তিনটি করে উইকেট নেন ফরহাদ রেজা ও আল-আমিন হোসেন। জবাব দিতে নেমে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ইমতিয়াজ হোসেনের দারুণ ব্যাটিংয়েই জয়ের ভিত পেয়ে যায় প্রাইম দোলেশ্বর। তিনি ১০৯ বলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ৮৮ রান করে যখন আউট হন তখন মাত্র ২৬ রান দূরে জয় থেকে দোলেশ্বর। নাসির হোসেনের ৩৯ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় অপরাজিত ৩৭ রানে ৪১.৩ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৯২ রান তুলে সেটা করে ফেলে তারা। ৫১ বল বাকি থাকতেই ৬ উইকেটের এ জয়ে দোলেশ্বর ১০ পয়েন্ট নিয়ে উঠে এলো দ্বিতীয় স্থানে। নেট রানরেটে এগিয়ে থাকায় এ পরাজয়ের পরও সমান ১০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান অটুট থাকল মুশফিকের দল। অলরাউন্ডার মাহমুদুল প্রথম জয় এনে দিলেন কলাবাগান সিএ’র কাগজে-কলমে সবচেয়ে শক্ত দল গড়েছে এবার আবাহনী। কিন্তু ফাঁড়া কাটছেই না তামিম ইকবালের দলটির। এবার পচা শামুকে পা কাটল ঐতিহ্যবাহী দলটির। টানা ৬ ম্যাচ হারা দুর্বলতম দল কলাবাগান সিএ’র কাছেও হেরেছে তারা। ফতুল্লায় কলাবাগান সিএকে এমন অবিশ্বাস্য জয় এনে দেয়ার পেছনে অন্যতম ভূমিকা তরুণ অলরাউন্ডার মাহমুদুলের। বল হাতে এ অফস্পিনার ৫২ রানে ৩ উইকেট শিকার করেন। যদিও তামিমের ৫২ বলে ৪৮ (৩ চার, ২ ছক্কা), অভিষেক মিত্রর ৮২ বলে ৬৩ (৮ চার), ভারতীয় রিক্রুট মনোজ তিওয়ারির ৫০ বলে ৪০ (৩ চার), নাজমুল হোসেন শান্তর ৪৮ বলে ৩৭ (৩ চার, ১ ছক্কা), মোসাদ্দেক হোসেনের ৪০ বলে ৪২ (৪ চার) রানের সুবাদে ৭ উইকেটে ২৮২ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে আবাহনী। কিন্তু সেটাকেও খুব ছোট টার্গেট বানিয়ে ফেলেন মাহমুদুল ব্যাট হাতে চার নম্বরে নেমে। ২৫ বছর বয়সী এ ডানহাতি ক্রিকেটার অধিনায়কোচিত ইনিংস খেলে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নেন। ১১১ বলে ৮ চার ও ৩ ছক্কায় ১০৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন। শেষদিকে তাপস ঘোষের ৪৪ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় করা ৪৭ রানে ১৯ বল থাকতেই প্রথম জয়টা পায় কলাবাগান সিএ। তারা ৪৬.৩ ওভারে তোলে ৭ উইকেটে ২৮৬ রান। নুরুলের শতকে জয়ের ধারায় প্রাইম ব্যাংক টানা দুই ম্যাচ হেরে চাপে পড়েছিল গতবারের চ্যাম্পিয়ন প্রাইম ব্যাংক। অবশেষে আবারও জয়ের ধারায় ফিরেছে দলটি। বিকেএসপিতে তরুণ উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান মাত্র ১১২ বলে ৭ চার ও ২ ছক্কায় ১০৮ রানের দারুণ একটি ইনিংস খেলেন। এছাড়া ওপেনার মেহেদি মারুফ মাত্র ৬৪ বলে ৯ চার ও ৩ ছক্কায় ৭৫ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলায় ৯ উইকেটে ২৯৯ রানের বড় সংগ্রহ পায় প্রাইম ব্যাংক। জবাব দিতে নেমে ভারতীয় ওপেনার জালাল সাক্সেনার ৫২ ও আসিফ আহমেদের ৪৫ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৪৭ রান ছাড়া বড় কোন ইনিংস আসেনি লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে। শেষ পর্যন্ত ৪৫.৫ ওভারে ২৩৯ রানেই গুটিয়ে গেলে ৬০ রানের বড় জয় পায় প্রাইম ব্যাংক। মোহামেডান স্পোর্টিং-প্রাইম দোলেশ্বর ম্যাচ-মিরপুর মোহামেডান ইনিংস- ১৮৮/১০; ৪৭.৪ ওভার (নাঈম ১০০, আরিফুল ২৯, মিলন ১৪; ফরহাদ ৩/২৪, আল-আমিন ৩/৩৪, রেজাউল ২/২৪)। দোলেশ্বর ইনিংস- ১৯২/৪; ৪১.৩ ওভার (ইমতিয়াজ ৮৮, নাসির ৩৭*, রকিবুল ২৫; আরিফুল ২/৩৪)। ফল ॥ প্রাইম দোলেশ্বর ৬ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ ফরহাদ রেজা (দোলেশ্বর)। আবাহনী লিমিটেড-কলাবাগান সিএ ম্যাচ-ফতুল্লা আবাহনী ইনিংস- ২৮২/৭; ৫০ ওভার (অভিষেক ৬৩, তামিম ৪৮, মোসাদ্দেক ৪২, তিওয়ারি ৪০, শান্ত ৩৭; মাহমুদুল ৩/৫২, সাক্সেনা ২/৬৩)। কলাবাগান সিএ ইনিংস- ২৮৬/৭; ৪৬.৫ ওভার (মাহমুদুল ১০৬, তাপস ৪৭, সাক্সেনা ৪৩, ইরফান ৩০; আবুল ৩/৪৭)। ফল ॥ কলাবাগান সিএ ৩ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ মাহমুদুল হাসান (কলাবাগান সিএ)। প্রাইম ব্যাংক-লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ম্যাচ-বিকেএসপি প্রাইম ব্যাংক ইনিংস- ২৯৯/৯; ৫০ ওভার (নুরুল ১০৮, মারুফ ৭৫, রানা ৪০; নাহিদুল ২/৩৮, আলাউদ্দিন ২/৪৫, আসিফ ২/৪৯, মোশাররফ ২/৫২)। রূপগঞ্জ ইনিংস- ২৩৯/১০; ৪৫.৫ ওভার (জালাল ৫২, আসিফ ৪৭, নাহিদুল ২৮, মোশাররফ ২৫; রানা ৪/৩৭, রুবেল ২/২৪, নাজমুল ২/৪৪)। ফল ॥ প্রাইম ব্যাংক ৬০ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ নুরুল হাসান (প্রাইম ব্যাংক)।
×