ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

হত্যাকা-গুলোকে সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে ॥ খালেদা

প্রকাশিত: ০৬:১৬, ১৭ মে ২০১৬

হত্যাকা-গুলোকে সরকার  রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে ॥ খালেদা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরকার সব হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত দুষ্কৃতকারীদের গ্রেফতার না করে হত্যাকা-গুলোকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে বর্বর ও পৈশাচিক হত্যার ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে বিরোধী দলের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করেছে। তাদের বক্তব্যের ধরন দেখে মনে হয় তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রকৃত দুষ্কৃতকারীদের আস্তানা ধ্বংস না করা, গ্রেফতার না করা। বরং তা চটজলদি বিএনপিসহ বিরোধী দলের ওপর দায় চাপানোর কারণেই কা-জ্ঞানহীন জঙ্গীগোষ্ঠী উৎসাহিত হয়ে প্রাণবিনাশী কর্মকা- পুরোদমে চালিয়ে যাচ্ছে। বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের চাকপাড়া গ্রামের বৌদ্ধ বিহারে ধাম্মা ওয়াসা মং শৈ উ চাক নামে এক ভিক্ষুকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় সোমবার এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। তিনি এই বর্বর-পৈশাচিক হত্যার কঠোর নিন্দা জানান এবং হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবি জানান। তিনি উল্লেখ করেন, ভোটারবিহীন সরকার দেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে নিজেদের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করার জন্য। আর সে জন্যই তারা দানবীয় চক্রান্ত এঁটে চলেছে। কারণ, আওয়ামী লীগ অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা, হিংসা ও হত্যায় উৎসাহী রাজনৈতিক দল। মানব সভ্যতা বিনাশী মতাদর্শে বিশ্বাসী জঙ্গীদের উৎপাত শুরু হয় আওয়ামী লীগ আমল থেকেই। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে এদের গ্রেফতার করে শাস্তি নিশ্চিত করে। তিনি বলেন, এ দেশ কেন জঙ্গীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হলো? আওয়ামী শাসনামলেই কীভাবে বেআইনী, সভ্যতা, প্রগতিবিরোধী অশুভ জঙ্গীগোষ্ঠীর বিচরণ এত তীব্র হলো? কেন বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ও ধর্মগুরুদের জীবন যাচ্ছে। আর কতদিন সাধারণ জনগণকে ভয়ার্ত পরিবেশের মধ্যে জীবনযাপন করতে হবে। এসব প্রশ্নের উত্তর দেয়ার ক্ষমতা সরকার হারিয়ে ফেলেছে। কারণ গণবিরোধী, ভোটারবিহীন সরকার আসল কাজের পরিবর্তে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতেই বেশি ব্যস্ত তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী অশুভ পশুশক্তির কাছে নিঃস্বার্থ আত্মনিবেদন করেছে। বিদেশী হত্যা থেকে শুরু করে শিয়া সম্প্রদায়, খ্রীস্টান, বৌদ্ধ, হিন্দু সম্প্রদায় ও তাদের ধর্মগুরুদের ওপর নৃশংস আক্রমণ ও সিরিজ হত্যা সরকারের ভ্রুক্ষেপহীনতার কারণেই ক্রমাগত চলমান থাকছে। আমাদের ভূখ-ের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সমাজ ও সংস্কৃতি পরম্পরায় সম্প্রীতি এক অনবদ্য জাজ্বল্যমান উপাদান। সেখানে সাম্প্রদায়িক বিভেদ ও সংঘাতের কোন অধ্যায় নেই। যে সরকার ভিন্নমতকে দমন করতে, সাধারণ জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করতে রাষ্ট্রযন্ত্রকে নির্দয়ভাবে ব্যবহার করে চলেছে, সে সরকার নিজেদের টিকে থাকার স্বার্থে লাশ আর রক্তপাতকে চিরস্থায়ী সঙ্গী করে নিতে যে দ্বিধা করবে না, তা বলাই বাহুল্য। জনমতকে তাচ্ছিল্য করে প্রধানমন্ত্রীর জোর করে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখা, দায়িত্বজ্ঞানহীন উক্তি ও একগুঁয়েমি এবং নিজ দলের লোকদের অনাচারকে প্রশ্রয় দেয়ার কারণেই দেশে অপরাধ ও দুষ্কৃতকারীদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশে জঙ্গীদের অস্তিত্ব নিয়ে সরকারের মন্ত্রীদের পরস্পরবিরোধী বক্তব্যেও জনমনে বড় ধরনের প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, আসলে সরকার কোন নীলনক্সা ধরে এগোচ্ছে?
×