ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বে বছরে ঘুষ লেনদেন দুই ট্রিলিয়ন ডলার॥ আইএমএফ

প্রকাশিত: ২০:০৫, ১৬ মে ২০১৬

বিশ্বে বছরে ঘুষ লেনদেন দুই ট্রিলিয়ন ডলার॥ আইএমএফ

অনলাইন ডেস্ক॥ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিশ্বের উন্নত ও উন্নয়নশীল সব ধরনের দেশেই ঘুষ লেনদেন হচ্ছে। এটি পরিমাপ করা কঠিন হলেও সাম্প্রতিক এক হিসেবে দেখা গেছে গড়ে বছরে প্রায় দেড় থেকে দুই ট্রিলিয়ন ডলার ঘুষ লেনদেন হচ্ছে। এ পরিমাণ অর্থ বিশ্ব জিডিপির ২ ভাগের সমান। তবে আর্থ-সামাজিক ক্ষতির পরিমাণ আরো অনেক বেশি। দুর্নীতি: খরচ ও নির্মূলের কৌশল শিরোনামের প্রতিবেদনটি সম্প্রতি প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে নির্দিষ্ট করে কোনো দেশের দুর্নীতি কিংবা ঘুষের হিসাব উল্লেখ নেই। মূলত বিভিন্ন সময়ে করা অর্থনীতিবিদ ও দুর্নীতি বিরোধী সংস্থাগুলোর প্রতিবেদনের আলোকে অর্থনীতির উপর দুর্নীতির বিরূপ প্রভাব ও পরিস্থিতি উত্তরণের বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বিশ্লেষণে উল্লেখ করা হয়েছে, দুর্নীতি মোট দেশজ উত্পাদনকে (প্রবৃদ্ধি) বাধাগ্রস্ত করে। অর্থনৈতিক ও সামাজিক খরচও বেড়ে যায়। স্বচ্ছতা, প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা এবং নেতৃত্ব উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি। আইএমএফের প্রধান ক্রিস্টিন ল্যাগার্দ উল্লেখ করেন দুর্নীতির প্রত্যক্ষ অর্থনৈতিক ব্যয়ের কথা সবার জানা। কিন্তু এর পরোক্ষ খেসারত অনেক বেশি। এটা প্রবৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে ও আয় বৈষম্য সৃষ্টি করছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দুর্নীতি অর্থনৈতিক উন্নয়নকে নানাভাবে বাধাগ্রস্ত করছে। প্রথমত: দুর্নীতির ফলে কোনো দেশের রাজস্ব আদায় কমে যায়। ফলে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হয়। কর ফাঁকি দেওয়ায়, যারা কর দিচ্ছেন তাদের উপর চাপ সৃষ্টি হয়। ফলে দেশের নাগরিকগণ কর দিতে নিরুত্সাহিত হন। দ্বিতীয়ত: রাষ্ট্রীয় কেনাকাটায় দুর্নীতি হলে সেটি সরকারি ব্যয়ের গুণগত মান নষ্ট করে। তৃতীয়ত: রাজস্ব আদায় কম হলে কোনো দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক হতে ধার করার পরিমাণ বাড়াতে হয়। এর ফলে সেই দেশের মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে যায়। পাশাপাশি দুর্নীতির প্রভাবে আর্থিক খাতের উপর চাপ সৃষ্টি হয়। সর্বশেষ দুর্নীতির ফলে অর্থ বাজারে সাধারণের অর্থ প্রপ্তির সুবিধা কমে যায়। ঋণ দাতাদের খরচ বেড়ে যেতে পারে। ফলে উত্পাদনশীল খাতে ব্যয় বৃদ্ধি পায়। দুর্নীতির ফলে আর্থিক ক্ষতি ছাড়াও সামাজিক এবং পরিবেশগত খরচও বেড়ে যায়। প্রতিবেদনে দুর্নীতি নির্মূলে কোনো দেশের প্রতি সরাসরি পরামর্শ দেওয়া হয়নি। তবে বিভিন্ন সামগ্রিক বিবেচনায় কিছু সুপারিশে উল্লেখ করা হয়েছে, দুর্নীতিবিরোধী লড়াইয়ের কৌশলে স্বচ্ছতা, স্পষ্ট আইনি রূপরেখা থাকা প্রয়োজন। সেইসঙ্গে প্রয়োজন গণমাধ্যমের স্বাধীনতা।
×