অনলাইন ডেস্ক॥ খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় গতকাল রবিবার থেকে শুরু হওয়া ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট চলছে। তিন দফা দাবিতে সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় আঞ্চলিক কমিটির ডাকে দ্বিতীয় দিনের মতো এ ধর্মঘট কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
এ বিষয়ে আজ সোমবার সকালে সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব আবদুর রহিম বক্স দুদু জানান, তাঁরা তিন দফা দাবি আদায়ের জন্য ১৫ দিন আগে এই ৪৮ ঘণ্টা ধর্মঘটের আহ্বান করেছিলেন। এ সময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁদের সঙ্গে কোনো বৈঠকের প্রস্তাব দেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, ‘খুলনা বিভাগে ৪৮ ঘণ্টা ধর্মঘটের পর তিন দফা দাবি আদায়ের জন্য দেশব্যাপী পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হবে। সাত কোটি ৭৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ কোনো চালক বা বাসমালিকের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। তা ছাড়া সড়ক দুর্ঘটনার জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য দেশে প্রচলিত আইনের বিধান রয়েছে। সেখানে বিশেষ কোনো ব্যক্তির জন্য আলাদা আইন হতে পারে না।’
খুলনা থেকে ঢাকাসহ সারা দেশের দূরপাল্লা ও অভ্যন্তরীণ ১৬টি রুটে বাস, ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, ট্যাঙ্কলরি, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মাহিন্দ্র চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে নগরীতে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক আর প্রাইভেট যানবাহন চলাচল করছে।
খুলনা থেকে ঢাকা যাওয়ার দুটি রুট রয়েছে। একটি যশোর হয়ে আরিচা দিয়ে, অন্যটি গোপালঞ্জ হয়ে মাওয়া দিয়ে ঢাকা। কিন্তু এই ধর্মঘটের ফলে কোনো রুটেই পরিবহন চলাচল করছে না। যে কারণে খুলনার সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল ও বিভিন্ন পরিবহন কাউন্টারের সামনে যাত্রীদের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
এদিকে, যানবাহন চলাচল না করায় এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। একটি ইজিবাইকের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে দেখা গেছে তাঁদের। অন্যদিকে পরিবহন ধর্মঘট থাকায় ট্রেনেও ভিড় দেখা গেছে।
এ ছাড়া যানবাহন বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে রোগীদেরও। গণপরিবহন চলাচল না করায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসতে পারছেন না সাধারণ ও দরিদ্র রোগীরা। অনেকে ইজিবাইকে করে বাক্স-পেটরা নিয়ে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
এ সময় ক্ষতিপূরণ মামলাসহ সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতে গ্রিন লাইন পরিবহনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাও প্রত্যাহার করার দাবি জানান দুদু।
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন নিহতের ঘটনায় দায়ের করা মামলার বিচার সুষ্ঠুভাবে শেষ করা, এ দুর্ঘটনায় দায়ের হওয়া দুটি ক্ষতিপূরণ মামলা প্রত্যাহার এবং গ্রিন লাইন পরিবহনের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ক্ষতিপূরণ মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ এ ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করছে।