স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক) ও জাইকার অর্থ সহায়তায় চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোড প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। কিন্তু সরকারী উন্নয়নকাজে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে স্থানীয় কিছু সিন্ডিকেট। পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণের নামে পূর্বসূরিদের জায়গার মালিকানা দাবি করে একাধিক সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে ওই এলাকায়। পতেঙ্গা থেকে সাগরিকা জহুর আহমদ স্টেডিয়াম পর্যন্ত তিনটি ফিডার রোডের অনেক স্থানে এ ধরনের সিন্ডিকেট গঠন হচ্ছে মূলত সরকারী অর্থ ও ভূমি লোপাটের উদ্দেশ্যে। অভিযোগ রয়েছে, এসব সিন্ডিকেটের নেতাকর্মীরা জেলা প্রশাসক, সিডিএ চেয়ারম্যান ও সিটি কর্পোরেশনের মেয়রসহ বিভিন্ন দফতরের কর্ণধারদের কাছে সরকারী দলের রাজনীতির বরাত দিয়ে স্থান পরিদর্শনের মতো ঘটনাও ঘটাচ্ছে। মূলত এ রিং রোড প্রকল্পে এ পর্যন্ত ৫ শতাধিক পরিবারকে পুনর্বাসনে প্রায় ২০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ বাবদ ও পুনর্বাসনের জন্য ২৩ একর ভূমি বরাদ্দের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে চউকের পক্ষ থেকে। তবে এক্ষেত্রে চউক স্থানীয়ভাবে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে বন বিভাগ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত বিভাগ এবং জেলা প্রশাসন দফতরের তদন্ত রিপোর্টকে ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করার কথা রয়েছে। তদন্তের ভিত্তিতে ও সঠিক মালিকানার প্রমাণপত্র দাখিলের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তরা প্রথম দফায় ক্ষতিপূরণের অর্থ পাবেন। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ২৩ একর ভূমি থেকে প্রত্যেককে এক কাঠা করে ভূমি বরাদ্দের হিসাব-নিকাশ চলছে। কোনভাবেই তথ্যপ্রমাণ ব্যতীত কোন পরিবার বা সদস্যকে ভূমি বরাদ্দ এমনকি ক্ষতিপূরণ দেয়ার ক্ষমতা নেই চউকের। তবে ওই এলাকায় যারা পুনর্বাসনসহ ক্ষতিপূরণ আদায়ের মানসে নেমেছে তারা মূলত সিন্ডিকেটের লোক। সরকারী অর্থ লোপাটের জন্যই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ব্যবহার করে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে চউক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। চউক সূত্রে জানা গেছে, রিং রোড প্রকল্পের আওতায় থাকা পতেঙ্গা থেকে সাগরিকা বিভাগীয় স্টেডিয়াম পর্যন্ত সড়কের দৈর্ঘ্য ১৭ দশমিক ১৭ কিলোমিটার ও ৬০ ফুট প্রস্থ। এর মধ্যে ১৫ দশমিক ২ কিলোমিটার কোস্টাল রোড এবং ২ দশমিক ১৫ কিলোমিটার ফিডার রয়েছে। ১নং ফিডার রোড পতেঙ্গা থেকে কাঠগড় পর্যন্ত, ২নং ফিডার রোড বড়পুল থেকে পোর্ট কানেকটিং রোডের সঙ্গে যুক্ত হবে এবং ৩নং ফিডার রোডটি সাগরিকা বিভাগীয় স্টেডিয়ামের পাশে যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে। ১৪৯৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে এ রিং রোডের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এর মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ৬৯৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা এবং জাইকার ৭১৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ও বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রদান করবে ৮২ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। মূলত এত ব্যয়ের পেছনে রয়েছে পতেঙ্গা থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত বেড়িবাঁধকে আরও ১০ ফুট উঁচু করে কোস্টাল রোডের ১৫ দশমিক ২ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ। অভিযোগ রয়েছে, ২০১১ সাল থেকে শুরু করে ২০১৩ সাল পর্যন্ত এ প্রকল্প আলোর মুখ দেখেনি। তবে ২০১৪ সালে এ প্রকল্পের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: