ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

অতিরিক্ত যাত্রিবোঝাই নৌকা উল্টে বহু নিখোঁজ

প্রকাশিত: ১৮:৪২, ১৫ মে ২০১৬

অতিরিক্ত যাত্রিবোঝাই নৌকা উল্টে বহু নিখোঁজ

অনলাইন ডেস্ক ॥ কালনার চেরিঘাটে গঙ্গায় যাত্রিবোঝাই নৌকো ডুবে নিখোঁজ হয়ে গেল বহু যাত্রী। শনিবার রাতের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, নিখোঁজের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশবাহিনী এবং উদ্ধারকারী দল পৌঁছেছে। রয়েছেন জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারাও। সকাল ৮টা থেকে উদ্ধারকাজ শুরু হয়। এখনও পর্যন্ত কারও খোঁজ মেলেনি বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে কালনা ও শান্তিপুরের ফেরিঘাটে। উদ্ধারে গাফিলতির অভিযোগ তুলে শান্তিপুরের নৃসিংহপুরে উত্তেজিত জনতা ঘাটে দাঁড়িয়ে থাকা বেশ কয়েকটি নৌকায় আগুন ধরিয়ে দেয়। পুড়িয়ে দেয় কালনা পুরসভার একটি বড় লঞ্চও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেখানে পুলিশ এসে পৌঁছলে উত্তেজিত জনতা তাদের আক্রমণ করে বলে অভিযোগ। তাদের ইটের আঘাতে মাথা ফেটে যায় শান্তিপুর থানার এক সাব ইন্সপেক্টরের। উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে শূন্যে কয়েক রাউন্ড গুলি চালায় পুলিশ। কাঁদানে গ্যাসও ছোড়ে। কী হয়েছিল? পুলিশ জানিয়েছে, প্রতি বছর বৈশাখ মাসের শেষ শনিবারে ভবা পাগলার ভবানী মন্দিরে বাত্সরিক উত্সব হয়। এই উত্সবকে কেন্দ্র করে ওই দিন হাজার হাজার মানুষ নদিয়া থেকে খেয়া পারাপার করে কালনায় আসেন। কালনার চেরিঘাটের ওপারে রয়েছে শান্তিপুরের নৃসিংহপুর ঘাট। এই দুই ঘাটের মাধ্যমেই খেয়া পারাপার করে ভবা পাগলার উত্সবে যোগ দিতে আসেন পূণ্যার্থীরা। শনিবারেও এই উপলক্ষে সকালে প্রচুর মানুষের সমাগম হয়। সারা দিন উত্সবে কাটিয়ে সন্ধেবেলায় বাড়ি ফেরার তোড়জোড় শুরু হয়ে যায়। রাত ৮টা নাগাদ ঝড়ের কারণে খেয়া পারাপার প্রায় ঘণ্টা দেড়েক বন্ধ রাখা হয়। রাত ১১ নাগাদ ফের খেয়া পারাপার চালু হয়। কালনার চেরিঘাটে একটি নৌকো ভিড়তেই প্রায় দু’শো মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ে নৌকায় ওঠার জন্য। সাধারণত ওই ভুটভুটি নৌকোগুলোতে ৬০-৭০ জন যাত্রী ধরে। এত সংখ্যক যাত্রী এক সঙ্গে ওঠার চেষ্টা করায় ভেঙে যায় নৌকাটি। তখনই বেশ কয়েক জন গঙ্গায় পড়ে যান। ঘাটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ এবং অন্যান্য লোকেরা কিছু যাত্রীকে টেনে তোলেন। কিন্তু বেশ কয়েক জন তলিয়ে যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। এ রকম অবস্থায় ঘাটের কাছে একটা বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। রাতের অন্ধকারে উদ্ধারকাজ চালানো সম্ভব হয়নি। রবিবার সকালে ডুবুরি এবং উদ্ধারকারী দল আসে। ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন পুলিশ ও প্রশাসনিকের আধিকারিকরা। এরই মধ্যে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে পূণ্যার্থীরা গণ্ডগোল শুরু করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশাল পুলিশবাহিনী সেখানে আসে। এর মধ্যে একটি বার্জে করে যাত্রীদের শান্তিপুরের নৃসিংহপুর ঘাটে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু বার্জটি সেখানে ভিড়তেই উত্তেজিত জনতা বার্জ লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। ফের বার্জটি কালনায় ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×