ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

পুলিশের পিটুনিতে চোখ হারাতে বসেছে দরিদ্র বাস সুপারভাইজার

প্রকাশিত: ০৮:২১, ১৫ মে ২০১৬

পুলিশের পিটুনিতে চোখ হারাতে বসেছে দরিদ্র বাস সুপারভাইজার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পুলিশের পিটুনিতে নষ্ট হতে চলেছে দরিদ্র বাস সুপারভাইজার মাসুম খানের (৩৭) একটি চোখ। এমন আশঙ্কা করছেন তার পরিবারের সদস্যরা। রাজধানীর শেরে বাংলানগর চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের ৪তলার ৫ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন তিনি। ট্রাফিক সার্জেন্টের সামান্য চা পানের টাকা পরিশোধের আবদার মেটাতে না পারায় চোখ হারাতে বসেছে মাসুম খান। পেশায় পরিবহন শ্রমিক। গুলিস্থান-নন্দন পার্ক রুটের দ্বিতল বিআরটিসি বাসের সুপারভাইজার। তার আয়ের টাকা দিয়ে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে কোন রকমে সংসার চলে। হাসপাতালের বেডে মাসুম খান কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, শুক্রবার দিবাগত রাতে যাত্রী তুলছিলেন সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডে সিটি সেন্টারের সামনে থেকে। তখনই ট্রাফিক পুলিশের আবদার নিয়ে ছুটে আসেন পুলিশের নিয়োগ করা লাইনম্যান। চা পান খাওয়ার টাকা দেয়ার জন্য পুলিশের নিয়োগ করা সেই লাইন ম্যানকে। কিন্তু ট্রাফিক পুলিশের সেই আবদার মেটাতে পারেননি তিনি। এটি কানে যাওয়া মাত্রই এক পুলিশ সার্জেন্টের লাঠি আঘাত লাগে মাসুম খানের চোখের নিশানায়। মারাত্মক আঘাতে চোখের রগ ছিঁড়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হয়। এরপর মাসুমের ঠিকানা হয় শেরে বাংলানগর চক্ষু হাসপাতাল। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণে তার ডান চোখ হারাতে হতে পারে। তবে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে তারা। মাসুম খান জানান, ঠিক কোন পুলিশ সার্জেন্ট লাঠির আঘাত করেছে তা তিনি সামনাসামনি না গেলে বলতে পারবেন না। পুলিশের নির্যাতনে এক চোখ হারানোর পথে । তিন সন্তান আর স্ত্রী নিয়ে তার পরিবার। সেই সঙ্গে চিকিৎসা ব্যয়ের চালাতে পারবেন কিনা। তা নিয়ে পুরো পরিবার দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়েছেন। সব মিলিয়ে অন্য চোখেও অন্ধকার তার। এ ঘটনার প্রতিবাদে কাজ বন্ধ রেখে সাভারে বিক্ষোভ করেছে বিআরটিসির শ্রমিকরা। ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর ফরহাদ হায়দার জানান, শুক্রবার রাতেই তিনি ঘটনাটি শুনেছেন। তা যথারীতি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকেও অবহিত করেছেন। তিনি জানান, শ্রমিকরা আমার কাছে বিচার চাইতে এসেছিলেন। আমি তাদের আশ্বস্ত করে বলেছি, দোষীকে আগে খুঁজে বের করতে হবে। আপনারা তাদের খুঁজে বের করে আনুন। শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। ট্রাফিক ইন্সপেক্টর ফরহাদ হায়দার জানান, গতরাতের শিফটে যারাই ডিউটিতে ছিল তাদের সকালের শিফটেও রাখা হয়েছে।
×