ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

এসএসসির ফল-২০১৬ স্বপ্ন আর সম্ভাবনার গল্প

প্রকাশিত: ০৬:৪২, ১৫ মে ২০১৬

এসএসসির ফল-২০১৬ স্বপ্ন আর সম্ভাবনার গল্প

শান্ত ফুলের মতোই বিদ্যালয়ের মাঠে বসে আছে সবাই। অপেক্ষা একটি মুহূর্তের ...। স্বপ্নের জাল বুনছেন মনে মনে। সবাই যেন জয়কীর্তন গাইবার অপেক্ষায়। আনন্দের মুহূর্ত উতরানোর অপেক্ষায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত। এক সময় অপেক্ষার পালা শেষ হলো। স্কুলপ্রধান ছড়িয়ে দিলেন সবার সাফল্যের খবর। হাজির হলো আনন্দের অনিন্দ মাহেন্দ্রক্ষণ। মুহূর্তে প্রজাপতির মতো ডানা মেলে স্বপ্নগুলো। গত বুধবার রাজধানীসহ দেশের অধিকাংশ বিদ্যালয়ে পরিবেশ ছিল এমন। আইডিয়াল স্কুলের জিপিএ-৫ পাওয়া কৃতী শিক্ষার্থী তানজিলা আহমেদ। বড় বোন তাহমিনার মতো ভাল ফল করে মায়ের মুখ উজ্জ্বল করেছে মেয়েটি। স্বপ্ন তার অনেক বড়। বিমানের পাইলট হওয়ার স্বপ্নটা আগলে রেখেছে বুকের মাঝে। মেয়ের ভাল ফলাফলে ব্যাপক খুশি মা শান্তা আহমেদও। ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী সুমন অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, বাবা ছোটবেলায় ভাল ছাত্র ছিলেন। তিনি ডাক্তার হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাবা তাঁর জীবনে সে আশা পূরণ করতে পারেননি। তারপর তিনি আমাকে ডাক্তার বানানোর স্বপ্ন দেখতেন। তাই বাবার আশা পূরণের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। এ লক্ষ্যে প্রথম ধাপ সফলতার সঙ্গে শেষ করেছি। পরবর্তী ধাপও সফলতার সঙ্গে ডিঙ্গানোর প্রত্যয় ব্যক্তি করে হাসিফ। সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ারস গার্লস স্কুলের শিক্ষার্থী জাকিয়া সফলতার সঙ্গে শিক্ষাজীবন শেষ করে বড় ব্যবসায়ী হতে চান। বাবা একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান হিসেবে বাবার হালটা এক সময় তাকেই ধরতে হবে। একই সঙ্গে আগামী দিনের পরীক্ষায়ও ঈর্ষণীয় ফল অর্জন করে বাবার ব্যবসাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে চায় জাকিয়া। পার্শ্ববর্তী অপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাংলাবাজার সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ইসরাত জাহান আঁখি। শিক্ষকতা পেশা তার দারুণ পছন্দ। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়ে শিক্ষার্থীদের উন্নত শিক্ষা দানের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজে নিয়োজিত হতে চায় মেয়েটি। আমুলিয়া আলহাজ আবদুর রাজ্জাক ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে শামীম খান। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে তিনি এ সফলতা অর্জন করেন। দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি বড়। তার স্বপ্ন বড় হয়ে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীতে যোগদান করার। সামসুল হক খান স্কুল থেকে মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে পিনু, মিতু, শারমিন, লিজা, শান্তা ও সাদিয়া। তারা প্রত্যেকেই শিক্ষাজীবন শেষে আইন ব্যবসায় মনোনিবেশ করবে। একটু সামনে গিয়ে দেখা হয় রবিন, শাহেদ, সাব্বির রাকিব, সাইফুল, আরিফ ও রাকিবের সঙ্গে। তারা সবাই হবে প্রকৌশলী। ভবিষ্যতে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন এবং শিক্ষকদের সহযোগিতায় এ ফলাফল অর্জন সম্ভব হয়েছে বলে জানান তারা। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ ঘরে তোলা সামিয়া জাহান তোফা, খাদিজা আক্তার আশিকা ও ফাহমিনা আলমের স্বপ্ন ভিন্ন রকম। তারা শান্তির রং সাদা পোশাক পরবে কর্মজীবনে। চিকিৎসক হয়ে নিজেরা সমাজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পাশাপাশি মানুষকে চিকিৎসাসেবা দিতে চায়। পরীক্ষার ফল প্রকাশের আগের রাতে তাদের কারোরই ভাল ঘুম হয়নি বলে জানালেন। ফল প্রকাশের পর সব টেনশন দূর হয়ে যায় বলে মন্তব্য করে আগামী দিনের এ চিকিৎসকরা। মাঈন উদ্দীন
×