ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসসহ নানা বিশৃঙ্খলা

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ১৪ মে ২০১৬

শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসসহ নানা বিশৃঙ্খলা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগসহ নানা বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়েছে ত্রয়োদশ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা। সকাল ১০টায় সারাদেশে একযোগে অনুষ্ঠিত হয় কলেজ পর্যায়ের পরীক্ষা। এরপর বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠিত হয় স্কুল পর্যায়ের পরীক্ষা। তবে সকালে পরীক্ষার্থীদের না জানিয়েই বেশ কিছু কেন্দ্র পরিবর্তনের ফলে দুর্ভোগের মধ্যে পড়েন হাজার হাজার নিবন্ধিত পরীক্ষার্থী। নিবন্ধন অফিস থেকে মোবাইলে পাঠানো মেসেজে বলা হয়েছিল এক কেন্দ্রের নাম কিন্তু প্রবেশপত্র ডাউনলোড করে প্রিন্ট দিয়ে দেখা যায় অন্য কেন্দ্র। নিবন্ধন অফিসের ওয়েবসাইটে কেন্দ্র পরিবর্তনের কোন তথ্য দেয়া হয়নি। ফলে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েন পরীক্ষার্থীরা। এদিকে পরীক্ষার আগেই বৃহস্পতিবার রাত থেকেই ছিল প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ। শুক্রবার কলেজ পর্যায়ের পরীক্ষায় রাজধানীর অনেক কেন্দ্রের বাইরে প্রকাশ্যে হাতে লেখা প্রশ্ন ছিল পরীক্ষার্থীদের হাতে। যার অধিকাংশ প্রশ্ন মিলেও যায়। পরীক্ষা শেষে তাই ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেল পরীক্ষার্থীদের। তবে এ নিয়ে এখন পর্যন্ত কোন বক্তব্য দেয়নি এ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান জাতীয় শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। কেন্দ্র নিয়ে বিশৃঙ্খলা ছিল শুক্রবার সকাল থেকেই। সকালে ঢাকার কয়েকটি কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে পরীক্ষার্থীরা জানতে পারেন তাদের কেন্দ্র পরিবর্তন হয়েছে। শেষ সময়ে ছোটাছুটি আর কান্নার রোল পড়ে যায়। এত কম সময়ে তারা কীভাবে নতুন কেন্দ্রে যাবেন তা ভেবে অনেকেই চোখের পানি ফেলেছেন। প্রবেশপত্রে লেখা কেন্দ্র অনুযায়ী সকালে ঢাকার আগারগাঁও শেরে বাংলা বালক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে উপস্থিত হন কয়েকশ পরীক্ষার্থী, কিন্তু ওখানে গিয়ে জানতে পারেন তাদের কেন্দ্র টিকাটুলি বালিকা মহাবিদ্যলয়ে। নতুন কেন্দ্রে পৌঁছতে সাড়ে দশটা বেজে যায় অনেকের। কেন্দ্র সমস্যার বিষয়টি গত রাত থেকে জানাজানি হলেও সমস্যার সমাধানে কর্তৃপক্ষের কাউকে এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি। এদিকে পটুয়াখালী শহরের একটি ফটোস্ট্যাটের দোকান থেকে শিক্ষক নিবন্ধনের প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার সকালে শহরের সদর রোডের পলাশ কম্পিউটার এ্যান্ড ফটোস্ট্যাট থেকে তাদের আটক করা হয়। তবে আটককৃতদের নাম পরিচয় এখনও জানা যায়নি। কয়েকজন নিবন্ধন পরীক্ষার্থী ইমেইল ফোন করে জানান, তাদের প্রবেশপত্রে লেখা রয়েছে এক কেন্দ্রের নাম কিন্তু মোবাইলে মেসেজ এসেছে অপর এক কেন্দ্রের নাম। দুই কেন্দ্রের দূরত্ব অনেক। এমতাবস্থায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা। কর্তৃপক্ষ শুক্রবার রাত পর্যন্তও কোন ব্যখ্যা না দিলেও জানা গেছে, গত মাসে এ পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সময় পরিবর্তন হলে কিছু কেন্দ্র পাল্টানো হয় জায়গা না পাওয়ায়। গত ৬ ও ৭ মে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে ইউপি নির্বাচনের কারণে পরীক্ষার তারিখ পেছানো হয়। বেসরকারী এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমে প্রিলিমিনারি তারপর লিখিত ও সবশেষে মৌখিক পরীক্ষা হবে। স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণদের আটটি বিভাগীয় শহরে লিখিত পরীক্ষায় বসতে হয়। এই পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতেই বেসরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। তবে, অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত আগের পদ্ধতিতেই হবে। ২০০৫ সালে সরকার নিবন্ধন পদ্ধতি চালু করেন। আইন কার্যকর হয় একই বছরের ২০ মার্চ থেকে। বিধান অনুযায়ী নিবন্ধন সনদ বাধ্যতামূলক ছিল বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের আবেদন করতে।
×