ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মাধ্যমিকে সাফল্যজনক ফল

প্রকাশিত: ০৪:০২, ১৪ মে ২০১৬

মাধ্যমিকে সাফল্যজনক ফল

দেশের মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে বুধবার। সাধারণ, কারিগরি ও মাদ্রাসা মিলিয়ে ১০টি শিক্ষা বোর্ডে এবার গড় পাসের হার ৮৮.২৯ শতাংশ। এই হার গতবারের চেয়ে ১ দশমিক ২৫ শতাংশ বেশি। বোর্ডওয়ারি ফলে দেখা যায়, রাজশাহী বোর্ডে পাসের হার সবচেয়ে বেশি ৯৬ দশমিক ৭০ শতাংশ। সবচেয়ে কম বরিশাল বোর্ডে ৭৯ দশমিক ৪১ শতাংশ। ঢাকা বোর্ডে ৮৮ দশমিক ৬৭, যশোর বোর্ডে ৯১ দশমিক ৮৫ শতাংশ, দিনাজপুর বোর্ডে ৮৯ দশমিক ৫৯ শতাংশ, সিলেট বোর্ডে ৮৪ দশমিক ৭৭ শতাংশ, কুমিল্লা বোর্ডে ৮৪ দশমিক ০০ শতাংশ, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৯০ দশমিক ৪৪ শতাংশ। মাদ্রাসা বোর্ড ও কারিগর বোর্ডে পাসের হার যথাক্রমে ৮৮ দশমিক ২২ শতাংশ ও ৮৩ দশমিক ১১ শতাংশ। এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১০টি শিক্ষা বোর্ডে সর্বোচ্চ ভাল গ্রেড এ প্লাস পেয়েছে ১ লাখ ৯ হাজার ৭৬১ জন। এবার ১৬ লাখ ৪৫ হাজার ২০১ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে ১৪ লাখ ৫২ হাজার ৬০৫ জন। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৯৩ হাজার ৬৩১ জন। সব মিলিয়ে গতবারের তুলনায় এবার ভাল ফল হয়েছে। সৃজনশীল শিক্ষা ব্যবস্থা প্রচলনের পর ধারাবাহিকভাবেই এই সাফল্য অব্যাহত। বলা চলে এই ফল নতুন এক মাইলফলক স্পর্শ করল। গত পাঁচ বছরের মতো এবারও পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যেই ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এজন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। কারণ, নানা প্রতিকূলতার মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ফল প্রকাশের এই ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পেরেছে। উল্লেখ্য, গত ১ ফেব্রুয়ারি এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়। লিখিত পরীক্ষা ১৪ মার্চ শেষ হয়। পাসের হার বাড়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর প্রশ্ন সরকার শিক্ষার অধিকার নিশ্চিতের ক্ষেত্রে নানাভাবে সুযোগ-সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে। তাঁর প্রত্যাশা, আগামীতে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই যেন শতভাগ শিক্ষার্থী কৃতকার্য হয়। প্রধানমন্ত্রীর এই প্রত্যাশার সঙ্গে আমরাও একমত। তবে পাসের হার কেবল অঙ্কের হিসাবে বাড়া কোন কাজের কাজ হতে পারে না। সবার চাওয়া যথাযথ শিক্ষালাভ করে শিক্ষার্থীরা যেন কৃতকার্যতা লাভ করে। বলা হচ্ছে পাসের হার শুধু নয়, শিক্ষার মানও বাড়ছে। এই দাবি যে কথার কথা নয় তা অনেকাংশে সত্য। তবে শিক্ষার যথাযথ মান সংরক্ষণে আরও অনেক দূর এগিয়ে যেতে হবে আমাদের। কারণ, পাসের হার ও জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি অবশ্যই আশাব্যঞ্জক। তবে আমরা মনে করি এটাই শিক্ষার মানোন্নয়নের একমাত্র প্রমাণ হতে পারে না। এ কথা সত্য যে, শিক্ষাকে সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে। প্রাথমিক থেকে শুরু করে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব পরিবর্তন এসেছে। কয়েক বছর ধরে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ে বছরের প্রথম দিন থেকেই শুরু হচ্ছে শিক্ষাপঞ্জি। একই দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে দেয়া হচ্ছে নতুন বই। বছরের শুরুতে নতুন বই পাওয়া এবং শিক্ষাপঞ্জি শুরু হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে যেমন পাঠে আগ্রহ বেড়েছে, তেমনি বৃত্তি-উপবৃত্তি সন্তানদের লেখাপড়ার ব্যাপারে অভিভাবকদেরও আগ্রহী করে তুলছে। কমছে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যাও। সবচেয়ে আশার কথা হলো লেখাপড়া এখন আর শিক্ষার্থীর কাছে আতঙ্কের বিষয় নয়। শিক্ষাকে আরও কত আধুনিক করা যায় তার জন্য এখন থেকে আমাদের কাজ করতে হবে। উন্নত বিশ্বের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে আমাদের শিক্ষার মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে।
×