ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিমান থেকে নামিয়ে দেওয়ায় জিজাকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ

প্রকাশিত: ১৮:৩৩, ১৩ মে ২০১৬

বিমান থেকে নামিয়ে দেওয়ায় জিজাকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ

অনলাইন ডেস্ক ॥ আইনে নেই। তবু বিমানের পাইলট জেদ ধরে থাকায় বিমান থেকে নেমে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন সেরিব্রাল পলসিতে আক্রান্ত জিজা ঘোষ। মানসিক ভাবে ধাক্কা খেলেও হাল ছাড়েননি। চার বছর ধরে লড়াই চালানোর পরে অবশেষে বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ আদালত জানিয়ে দিল, ওই ঘটনার জন্য জিজাকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে স্পাইসজেট বিমানসংস্থাকে। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের পরে বিমানসংস্থা এ দিন জানিয়েছে, আদালতের ওই নির্দেশের কোনও কপি তারা বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত হাতে পায়নি। ফলে এ নিয়ে এখনই কোনও মন্তব্য করবে না তারা। সেরিব্রাল পলসিতে আক্রান্ত জিজা এখন নিজেই ইন্ডিয়ান ইন্সস্টিটিউট অব সেরিব্রাল পলসির অ্যাডভোকেসি বিভাগের প্রধান। দেশ-বিদেশে বিভিন্ন সেমিনারে তিনি সেরিব্রাল পলসি এবং সেই প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লড়াই করা নিয়ে বক্তৃতা দিয়ে বেড়ান। বহু বছর ধরেই তিনি একা একা দেশ-বিদেশে বিমানে করে ঘুরে বেড়ান। ২০১২ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি মাসে গোয়ায় এমনই এক সেমিনারে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য কলকাতা থেকে স্পাইসজেটের বিমানে উঠে বসেছিলেন জিজা। কিন্তু সেই বিমানের পাইলট তাঁকে বিমান থেকে নামিয়ে দেন। জিজার হাঁটাচলা স্বাভাবিক নয়। তাঁর কথাও স্পষ্ট নয়। সেই দেখে পাইলট তাঁর কাছ থেকে ‘ফিট টু ফ্লাই’ সার্টিফিকেট দেখতে চান। কিন্তু বিমান পরিবহণের নিয়ম অনুযায়ী, কোনও অসুস্থ ব্যক্তি বিমানে উঠলে তবেই তাঁকে ওই সার্টিফিকেট নিয়ে উঠতে হয়। কোনও ধরনের শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে কেউ বিমানে উঠলে তাঁর কাছে সেই সার্টিফিকেট থাকাটা বাধ্যতামূলক নয়। কিন্তু স্পাইসজেট বিমানের সেই পাইলট গোঁ ধরে বসেন। শেষে বিমান থেকে নেমে যেতে বাধ্য হন জিজা। ওই ঘটনা নিয়ে দেশ জুড়ে বিস্তর হইচই হয়। জিজা সরাসরি সুপ্রিম কোর্টে স্পাইসজেটের নামে অভিযোগ জানান। চার বছর ধরে সেই মামলা চলার পরে বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বলেছে স্পাইসজেটকে। বৃহস্পতিবার জিজা বলেন, ‘‘বিচার পেতে দীর্ঘ চার বছর অপেক্ষা করতে হল আমাকে। তবে এটা আমার একার জয় নয়। আমার মতো যাঁরা শারীরিক ভাবে প্রতিবন্ধী, এই জয় তাঁদের সবার।’’ জিজা জানান, ২০১২ সালের সেই ঘটনার পরে তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়েছিল স্পাইসজেট এবং তাদের বিমানে করে আবার নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু তিনি ওই ঘটনার জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেই থেকে এখনও পর্যন্ত তিনি আর কখনই স্পাইসজেটের বিমানে চড়েননি। ২০১২ সালে যখন এই ঘটনা ঘটেছে, তখন স্পাইসজেটের মালিক ছিলেন দক্ষিণ ভারতীয় শিল্পপতি কলানিধি মারান। ২০১৪ সালের পর আর্থিক লোকসানের কারণে স্পাইসজেট প্রায় বন্ধ হতে বসেছিল। ২০১৫ সালে স্পাইসজেটের পুরনো মালিক অজয় সিংহ এসে কলানিধি মারানের কাছ থেকে মালিকানা নিয়ে নেন। এখনও স্পাইসজেটের আর্থিক অবস্থা খুব ভাল নয়। তার সঙ্গে যুক্ত হল এই ক্ষতিপূরণের বোঝা। সূত্র : আনন্দবাজার
×